সত্যিই কি হোয়াটসঅ্যাপ নিরাপদ? ফাইল ছবি।
প্রমোদতরীতে মাদক-কাণ্ডের তদন্তে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জনৈক ‘অ্যানি’কে নিয়ে। কে এই অ্যানি? কেনই বা শাহরুখ-তনয় আরিয়ান খান তাঁর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তালাপ চালিয়েছিলেন? সেই বার্তায় কি লুকিয়ে ছিল মাদক সংক্রান্ত কোনও গভীর ইঙ্গিত? উত্তর খুঁজছেন জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বিশেষজ্ঞরা। এই প্রেক্ষিতে উঠেছে আরও বড় প্রশ্ন, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট বাইরে আসছে কী করে?
বলিউডের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিতর্কের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল, প্রকাশ্যে চলে আসছে তারকাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের অংশ বিশেষ। অথচ হোয়াটসঅ্যাপ দাবি করে, তাদের অ্যাপ ব্যবহার করে যে কথোপকথন হয় তা ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড’। অর্থাৎ প্রেরক ও গ্রাহক ছাড়া তৃতীয় কারও পক্ষে সেই বার্তালাপ দেখা সম্ভব নয়। এমনকি ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ নিজেও তা দেখতে পায় না বলে দাবি। তা হলে কী করে তা বাইরে চলে আসছে?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে খতিয়ে দেখতে হবে গোটা প্রক্রিয়াটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড’-এর অর্থ, তৃতীয় কারও পক্ষে বার্তালাপ দেখা সম্ভব নয়। অর্থাৎ, ব্যবহারকারীর (ইউজার) তথ্যকে বিশেষ অ্যালগরিদমের সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট কোডে পরিবর্তিত করে সেই তথ্যকে সুরক্ষিত ভাবে রেখে দেওয়ার প্রক্রিয়া।
কিন্তু এখানেই লুকিয়ে আসল রহস্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে আইন রক্ষাকারী সংস্থাগুলো বেশ কয়েকটি পদ্ধতির সহায়তা নিয়ে থাকেন। দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন পদ্ধতির আশ্রয় নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের অংশ বিশেষ দেখে নিতে পারেন তৃতীয় কেউ।
প্রথমত, ফোনটি যদি তৃতীয় কারও হাতে যায় এবং ব্যবহারকারী ফোনটি খুলে (আনলক) দেখেন। ফোন খোলা থাকলেই সমস্ত তথ্য আপনার হাতের মুঠোয়। তখন আপনি স্ক্রিনশট নিতে যেমন নিতে পারেন, তেমনই বার্তালাপ কপিও করে রাখতে পারেন। তার পর সেই তথ্য ইচ্ছে মতো ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
দ্বিতীয়ত, ফোনটি আপনার হাতে আছে, কিন্তু তা বন্ধ (লকড) করা। এই অবস্থায় আপনি তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের হদিশ পাবেন কী করে? এই সমস্ত ক্ষেত্রে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা সাহায্য নেন এক বিশেষ পদ্ধতির। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এনক্রিপ্টেড অর্থাৎ তৃতীয় কারও পক্ষে তা দেখা সম্ভব নয়। হোয়াটসঅ্যাপ সম্পূর্ণ বার্তালাপ ভরে রাখে (ব্যাকআপ) ‘গুগল ড্রাইভ’ বা ‘আই-ক্লাউড’-এ। যা কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ‘এনক্রিপ্টেড’ ছিল না। কয়েক সপ্তাহ আগে সেই নিয়মে বদল এসেছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফোনটি যদি আপনার কাছে থাকে তা হলে তার ভিতরে থাকা তথ্যকে অন্য একটি কম্পিউটারে ক্লোন করে নেওয়া সম্ভব। তার পর বিভিন্ন ফরেন্সিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্লোন করা তথ্য তৃতীয় কারও পক্ষে প়ড়ে ফেলা সম্ভব।
তৃতীয়ত, আইন রক্ষাকারী সংস্থাগুলো গুগল বা অ্যাপল-এর কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন আদালতের নির্দিষ্ট নির্দেশ।
যদিও হোয়াটসঅ্যাপের কোথাও এমন কথা বলা নেই, যে তারা প্রয়োজনে আপনার বার্তালাপ আইন রক্ষাকারী সংস্থার হাতে তুলে দিতে পারে। কারণ, হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, তারা আপনার পাঠানো বার্তার কোনও রেকর্ড রাখে না। আবার যে বার্তা ডেলিভারি হয়নি, তা হোয়াটসঅ্যাপের সার্ভারে থাকে ৩০ দিন পর্যন্ত, তার পর নিজে নিজেই মুছে যায়। ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড’ প্রযুক্তিতে সংস্থার নিজের কিংবা তৃতীয় কারও পক্ষে চ্যাট দেখা সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy