এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, অতিমারির কারণে বাজারে যত স্যানিটাইজার এসেছে তার ৫০ শতাংশ নকল। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের স্যানিটাইজার পান করলে অন্ত্রের বেশি ক্ষতি হয়।
প্রতীকী ছবি।
গত দু’বছরে দৈনন্দিন জীবনের সর্ব ক্ষণের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার। সৌজন্যে কোভিড। কিন্তু যেখানে ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে, সেই স্যানিটাইজারই আবার আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে হায়দরাবাদে। নিজামস ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নিমস)-এর তথ্য বলছে, গত এক বছরে এই শহরে ৮০ জন স্যানিটাইজার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। হায়দরাবাদ শহর ছাড়া আশপাশের এলাকা থেকেও এ রকম ২০টি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। কারণ, এমন বহু ঘটনা অনেক সময় অনথিভুক্ত থেকে যায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে এখন স্যানিটাইজার খুবই সহজলভ্য। কেউ কেউ মজার ছলে মদের সঙ্গে স্যানিটাইজার মিশিয়ে খাচ্ছেন বলে মাঝেমধ্যে খবর প্রকাশ্যে আসছে। নিমস-এর মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অসীমা শর্মা বলেন, “কেউ কেউ সরাসরি স্যানিটাইজার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। কেউ আবার মদের সঙ্গে মিশিয়ে পান করেছেন। অতিমারি শুরুর পর থেকেই স্যানিটাইজারের ব্যবহার অত্যধিক হারে বেড়ে গিয়েছে। কেননা, এটি সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।”
অসীমার কথায়, “সব চেয়ে দুঃখের বিষয় এটাই যে, যাঁরা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তাঁদের বেশির ভাগই কমবয়সি। বেশ কিছু কৃষকও ছিলেন তাঁদের মধ্যে। তাঁরা মূলত মফস্সল এবং গ্রামীণ এলাকার। স্যানিটাইজার খাওয়ার ফলে তাঁদের অন্ত্র ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
চিকিৎসক শর্মা জানিয়েছেন, স্যানিটাইজার অন্ত্রনালী জ্বালিয়ে দেয়। তবে বেশ কয়েক বার অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে সুস্থ হন এই রোগীরা। শহরের সরকারি গাঁধী হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসক জানিয়েছেন, যাঁরা হস্টেলে থাকেন, পরীক্ষায় ভাল ফল করেননি, এমন বহু পড়ুয়ার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ রকম বহু রোগী তাঁদের হাসপাতালে এসেছেন, যাঁরা স্যানিটাইজারের গোটা বোতল পান করে নিয়েছিলেন।
এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, অতিমারির কারণে বাজারে যত স্যানিটাইজার এসেছে, তার ৫০ শতাংশ নকল। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের স্যানিটাইজার পান করলে অন্ত্রের বেশি ক্ষতি হয়। হায়দারবাদে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy