উচ্ছ্বাস: টুজি দুর্নীতি মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়ার পরে মা রাজথি আম্মালের সঙ্গে ডিএমকে সংসদ এম কানিমোঝি। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
ফের এক বফর্স! সুইডিশ কামান কেনার পিছনে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ১৯৮৯ সালে গদি হারিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে সেই দুর্নীতি প্রমাণ হয়নি। ২০১৪ সালে মনমোহন সিংহকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম অস্ত্র ছিল টুজি কেলেঙ্কারি। আজ সেই মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালত বলল, স্পেকট্রাম বণ্টনে কোনও দুর্নীতিই হয়নি! ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির যে অভিযোগ সিএজি তুলেছিল, সে সব ঝুট হ্যায়।
ক’দিন আগেই গুজরাত ভোটের ফলে খানিক অক্সিজেন পেয়েছে কংগ্রেস। আজকের রায় তাদের আরও চাঙ্গা করল। মনমোহন সিংহের প্রতি নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য নিয়ে সংসদে কংগ্রেস-বিজেপি যুদ্ধ চলছিলই। আজ রাজ্যসভায় দুই নেতার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। কিন্তু টুজি রায় ঘোষণার পরে সংসদ মুখোই হলেন না মোদী। তবে মুখ খুললেন মুখচোরা মনমোহন। বললেন, ‘‘ব্যাপক প্রচারের যে ভিত্তি ছিল না, আদালত তা বলে দেওয়ায় আমি খুশি।’’ টুজি মামলায় মনমোহনের নাম জড়ানো ঠিক হয়নি, বলেছেন বিচারক ও পি সাইনি।
আদালতের রায় কংগ্রেসের কাছে যেমন স্বস্তির, তেমনই স্বস্তির ডিএমকে-র কাছেও। আজ জয়ললিতার আসনে উপনির্বাচনের মাঝেই দিল্লি থেকে খবর এল, করুণানিধি-কন্যা কানিমোঝি, মনমোহন মন্ত্রিসভার টেলিকমমন্ত্রী এ রাজাকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত। খুশিতে লাড্ডু বিলোলেন ডিএমকে কর্মীরা। করুণানিধিকে সুখবর জানিয়ে এলেন ছেলে স্টালিন।
বেগতিক দেখে আজ দিনভর অরুণ জেটলি থেকে রবিশঙ্কর প্রসাদরা বোঝালেন, দুর্নীতি যে হয়েছে তা ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টই বলেছে। তাই ১২২টি লাইসেন্স খারিজ করেছে তারা। সিবিআই আদালত আজ শুধু বলেছে, অভিযুক্তদের অপরাধ নেই। বিজেপি মতে, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে হওয়া তদন্তে যোগ্য অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, উচ্চ আদালতে গেলেই দুর্নীতি প্রমাণ হবে।
কিন্তু বিচারক তাঁর ১৫৫২ পাতার রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘সিবিআই এবং ইডি ৩৫ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। বাছাই করা কিছু তথ্য সাজিয়ে তাকে আকাশছোঁয়া বানিয়ে দুর্নীতি সাজিয়েছেন কিছু লোক। সবাই গুজব, গসিপ, জল্পনায় তৈরি জনমতের ভিত্তিতে চলছিল।’’
গুজরাত ভোটের পরে টুজি রায় যে বিজেপি-কে নাড়া দিয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। দলের বড় অংশের মতে, কংগ্রেস দুর্নীতির গন্ধ গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারলে পরের বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে খেসারত দিতে হবে। তবে আশার কথা, দুর্নীতির অভিযোগ ফুরিয়ে যায়নি। এখনও কয়লা কেলেঙ্কারি রয়েছে।
বিজেপির এই শিহরণকেই কাজে লাগাতে চান রাহুল গাঁধী। মনমোহনের পাশে দাঁড়াতে আগামিকাল ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া কংগ্রেস সভাপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy