জ়িকা ভাইরাসের সংক্রমণ ভারতে। ছবি: ফ্রিপিক।
জ়িকা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে ভারতে। পুণেয় এক জন চিকিৎসক ও তাঁর বছর পনেরোর মেয়ের শরীরে ধরা পড়েছে এই ভাইরাস। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার মতো জ়িকাও মশাবাহিত রোগ। গত বছর উত্তরপ্রদেশ ও কেরলে জ়িকার সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। জ়িকার প্রকোপ এ দেশে তুলনামূলক ভাবে কমই দেখা যায়। মূলত দক্ষিণ আমেরিকা, মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান দ্বীপগুলিতে এই ভাইরাসের দাপট বেশি। এ বার ভারতেও দু’জনের শরীরে এই ভাইরাস ধরা পড়ায় চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের।
জ়িকা মূলত এডিস ইজিপ্টাই মশার থেকে মানুষের শরীরে ছড়ায়। জ়িকার সংক্রমণ হলে প্রথমে উপসর্গ ধরা পড়ে না। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ৮০ শতাংশের বেশি জ়িকা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের ক্ষেত্রে প্রথম উপসর্গ হল জ্বর। তা ছাড়া র্যাশ বেরোতে পারে শরীরের নানা জায়গায়। শ্বাসের সমস্যাও হয় অনেকের ক্ষেত্রে।
ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি ছড়িয়ে পড়লে পেশিতে, গাঁটে গাঁটে ব্যথা হয়। গলায় সংক্রমণ হতে পারে। ঘুসঘুসে জ্বর, পেশিতে ব্যথা যদি দীর্ঘ দিন ধরে ভোগাতে থাকে এবং সেই সঙ্গে গায়ে, হাত বা পায়ে চাকা চাকা লালচে দাগ বার হয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
জ়িকার সংক্রমণ হলে, শিশুদের শরীরে তার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে সাবধান করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গর্ভবতী মহিলার থেকে তাঁর গর্ভে থাকা সন্তান এই ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নবজাতকের শরীরে স্নায়ুঘটিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। শিশুরা সংক্রমিত হলে তার বুদ্ধির বিকাশ থমকে যেতে পারে, কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। গর্ভে থাকাকালীন সংক্রমিত হলে শিশু জড়বুদ্ধিসম্পন্নও হতে পারে।
ডেঙ্গির মতো জ়িকার মশাও পরিষ্কার জলে জন্মায়। দিনের বেলায় সব থেকে বেশি সক্রিয় থাকে ইডিস মশা। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে মশার উপদ্রব কমাতে হবে সবচেয়ে আগে।
বাড়ির আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, জল যেন না জমে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাতে শোয়ার সময় অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে শুতে হবে। জ়িকা ভাইরাস যৌন সংসর্গ থেকেও ছড়াতে পারে। তাই সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি জ়িকা আক্রান্ত হন, তা হলে সুস্থ না হওয়া অবধি রোগীর নিভৃতবাসে থাকাই জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy