ভিটামিন ই বেশি খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
রক্তে রুটিন পরীক্ষায় ভিটামিন ডি আবশ্যক। কিন্তু রক্তে ভিটামিন ই-র মাত্রা কেমন? তা পরীক্ষা করে দেখেছেন কি? অথচ ত্বক, চুলের জেল্লা বৃদ্ধি পাওয়ার আশায় কারও পরামর্শ ছাড়াই যথেচ্ছ ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে যাচ্ছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ভিটামিন ই কিন্তু খুব শক্তিশালী এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। তা শরীরের জন্য ভাল। কিন্তু কত দিন খাবেন? রক্তে এই ভিটামিনের ঘাটতি আছে কি না, তা-ই বা বুঝবেন কী করে? সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের ভূমিকা ঠিক কতটা, তা প্রায় সকলেই জানেন। এই উপাদানটি ত্বক, চুলের স্বাস্থ্য যেমন ভাল রাখে, তেমন শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতাও বজায় রাখে। যার ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল বলেন, “রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করে ভিটামিন ই। আবার বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফুসফুস, মস্তিষ্কের স্নায়ুর কার্যক্ষমতা এবং ঋতুচক্রের সঙ্গে জড়িত অনেক সমস্যাতেই কাজ দেয় ভিটামিন ই।” তবে কার শরীরে কতটুকু ভিটামিন ই প্রয়োজন, তা একমাত্র রক্ত পরীক্ষা করালে তবেই বোঝা সম্ভব। সেই বুঝে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করা উচিত।
ভিটামিন ই প্রসঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে, ‘জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’। সেখানে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ভিটামিন ই মৃত্যুর হারও বাড়িয়ে দিতে পারে। চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, “এই সমস্যা খুবই বিরল। তবে অতিরিক্ত কোনও কিছুই তো ভাল নয়। অ্যালোপ্যাথি ওষুধ মানেই তার প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সেটাও মাথায় রাখতে হবে।”
লিভার টক্সিসিটি কী?
ভিটামিন ই ফ্যাট বা স্নেহ পদার্থে দ্রবণীয়। লিভারে এই ভিটামিন এমনিতেই দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। বাইরে থেকে সাপ্লিমেন্ট খেলে তার পরিমাণ স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। এই ভিটামিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়ে গেলে টক্সিসিটি বা বিষক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, “রক্তে ভিটামিন ডি-র মাত্রা নিয়ে আমরা যত সচেতন, আমার ধারণা ভিটামিন ই নিয়ে ততটা মাথাব্যথা কারও নেই। তাই বলে ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট নিরীহ, এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।’’
কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ বা সামগ্রিক ভাবে হার্ট ভাল রাখার জন্য অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপর ভরসা করেন বহু চিকিৎসক। তবে সম্প্রতি সেই ধারণাতেও বদল এসেছে। পুষ্পিতা বলেন, “কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের জন্যও বাইরে থেকে ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন।”
প্রতি দিন কতটুকু ভিটামিন ই মানবদেহের প্রয়োজন?
রোজের সাধারণ খাবার থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই শরীরে না গেলে তখন চিকিৎসকেরা বাইরে থেকে সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার চিন্তা করেন। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম পরিচালনার জন্য রোজ মোটামুটি ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই যথেষ্ট। তার জন্য আলাদা করে সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কাঠবাদাম, চিনেবাদাম, কুমড়ো বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, জলপাই, ব্রকোলি, বেল পেপার, ডিমের কুসুম, সামুদ্রিক মাছে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিয়মিত এগুলি খেলেই ভিটামিন ই-র ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy