Advertisement
৩১ অক্টোবর ২০২৪
Burn Injury

বাজিতে পুড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কী করবেন? দুর্ঘটনা এড়াতে কী ব্যবস্থা নিতে হবে?

বাজি পোড়ানোর সময়ে আগুনের ফুলকি ছিটকে এসে হাত বা পা পুড়ে গেলে বা বাজি হঠাৎ ফেটে গিয়ে গভীর ক্ষত হলে ভয় পেয়ে পরিস্থিতি জটিল করবেন না। কী করতে হবে জেনে নিন।

How to treat Firecracker burns and injuries at Home

বাজি পোড়ানোর সময়ে কী কী সতর্কতা নেবেন, পুড়ে গেলে কী করতে হবে? ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৪৯
Share: Save:

বাড়ি পোড়াতে গিয়ে হাত-পা বা মুখ পুড়ে গেলে কী করণীয় তা জানেন কি? বাজি পোড়ানোর সময় কিছু জরুরি সতর্কতা কমবেশি সকলেই মেনে চলেন। তবু মুহূর্তের অসাবধানতায় বা বাজির হঠাৎ বিস্ফোরণে বিপদ ঘনাতেই পারে। বিশেষ করে শিশু বা বয়স্কদের অনেক বেশি সাবধানে রাখতে হবে। বাজি পোড়ানোর সময়ে আগুনের ফুলকি ছিটকে এসে হাত বা পা পুড়ে গেলে বা বাজি হঠাৎ ফেটে গিয়ে গভীর ক্ষত হলে ভয় পেয়ে পরিস্থিতি জটিল করবেন না। বরং কী ভাবে সাবধান থাকতে হবে তা জেনে নিন।

মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, সচেতনতার অভাবে পুড়ে গেলে প্রাথমিক ভাবে কী করতে হয় তা জানা না থাকায় বহু রোগীকেই শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায় না। প্রতি বছরই দীপাবলির পরে ভিড় বাড়ে চিকিৎসকদের চেম্বারে, হাসপাতালে। ছোটখাটো ক্ষত নিরাময় করা যায় সহজে, তবে যদি অনেকটা পুড়ে যায় বা ক্ষত হয় তখন দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে গেলে বিপদ হবে।

বাজি পোড়ানোর সময়ে সতর্কতা

১) সুতির পোশাক পরে বাজি পোড়াতে হবে। সিল্ক বা জর্জেটের পোশাক কখনওই পরবেন না।

২) বাজির ধোঁয়া নাকে গেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। যদি বাজি পোড়ানোর জায়গায় থাকেন বা বাজি পোড়ান, অবশ্যই দু’টি সার্জিক্যাল মাস্ক পরে নেবেন। হাঁপানির সমস্যা থাকলে সঙ্গে ইনহেলার অবশ্যই রাখতে হবে।

৩) খালি পায়ে বাজি পোড়াবেন না। জুতো যেন অবশ্যই থাকে। পা ঢাকা জুতো হলে বেশি ভাল হয়।

৪) বাজি জ্বলতে না চাইলে তাতে ফের আগুন দিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা করবেন না। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তুবড়ি বা হাউই জ্বালাতে হলে মুখ দূরে রেখে জ্বালান।

৫) বাজি পোড়ানোর সময়ে তা শরীর থেকে দূরে রাখুন। শিশু বা বয়স্কদের ফুলঝুরি বা রংমশালের মতো আলোর বাজি দিলেও তা প্যাঁকাটির আগায় লাগিয়ে দিন।

৬) মোম বা প্রদীপ মাটিতে না জ্বেলে কোমর বা বুকসমান উচ্চতায় রেখে জ্বালান।

বাজিতে পুড়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা কী?

১) ক্ষতস্থানে মাজন নয়, ঠান্ডা জল দিন। বরফ জল হলে খুবই ভাল। কিন্তু কোনও ভাবেই পোড়া জায়গায় বরফ ঘষবেন না।

২) অনেক সময় চোখে আলোর ফুলকি ঢোকে। সে ক্ষেত্রে কোনও অবস্থাতেই চোখ ঘষবেন না, বরং ঠান্ডা জলে চোখ ধুয়ে নিন।

৩) হাত, পা বা শরীরের কোনও জায়গা বেশি পুড়ে গেলে সেখানে আগে ঠান্ডা জল দিন। তার পর সিলভার সালফা ডায়োজিন বা ন্যানো সালফার জাতীয় মলম লাগিয়ে নিন। তার উপর ভেসলিন গজ লাগান। ক্ষত বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৪) মোমবাতি বা প্রদীপ থেকে বাজি ধরাতে গিয়ে জামাকাপড়ে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনা অনেক সময়েই ঘটে। তেমন হলে আতঙ্কিত না হয়ে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করুন। সেই অবস্থায় ছোটাছুটি করবেন না, তাতে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়বে। একান্তই জল না পেলে ভারী কম্বল বা ভারী কাপড় চাপা দিতে হবে।

৫) পোড়া জায়গা গজ দিয়ে বেঁধে রাখুন। খোলা রাখলে তাতে সংক্রমণ হতে পারে। পোড়া জায়গায় নারকেল তেল বা অন্য কোনও তেল, ক্রিম লাগাবেন না। এতে সংক্রমণ বাড়বে। ঘা না শুকোনো পর্যন্ত ময়লা, তেল যেন না লাগে।

৬) বাজি পোড়াতে গিয়ে হাতের তালু বা পায়ে ফোস্কা পড়ে গেলে তা সুচ বা সেফটিপিন দিয়ে ফাটানোর চেষ্টা করবেন না। বড় ফোস্কা পড়লে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে।

এই প্রতিবেদন সচেতনতার জন্য লেখা। বাজিতে পুড়ে গেলে বা শরীরে কোনও ক্ষত হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে থেকে কোনও ওষুধ খেতে বা মলম লাগাতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE