শুক্রবার হলেই পরিচালকদের কপালে দু-তিনটি অতিরিক্ত ভাঁজ, চিন্তা। প্রযোজকদের চাপা টেনশন, নায়ক-নায়িকার খাওয়া-ঘুম উধাও। সপ্তাহ শেষের দিন দুই আগে মাসের বেশির ভাগ শুক্রবারের চেনা চিত্র তো এটাই। কারণ ছোট থেকে বড়, আঁতেল থেকে কমার্শিয়াল সমস্ত ছবিরই ভাগ্য পরীক্ষার জন্য ওই দিনটিই যে ধার্য। কিন্তু কেন হঠাৎ শুক্রবারকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল?
সহজ হিসেবে বলে, উইকএন্ড শুরুর আগের দিনটিই শুক্রবার। শনি আর রবিবার মানে নিখাদ ছুটির মেজাজ। আর ছুটি মানেই একটা জমিয়ে সিনেমা। ঠিক উইকএন্ডের আগে একটা হাতে গরম সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে এলে তা দেখার অতিরিক্ত একটা ঝোঁক থাকবে সপ্তাহান্তে। ফলে ঠিক সময়ে মাঠে নেমে বেশ মোটা টাকা ঘরে তোলার একটা সুযোগও থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই তাই মোক্ষম কোপটা পড়েছে শুক্রবারের কপালে। কিন্তু হিসেব অতটাও সরল নয়। আসলে উইকএন্ডের সঙ্গে শুক্রবার ছবি মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্পর্কই নেই!
ভারতে এই রীতির পিছনে প্রধান ‘দায়’ রয়েছে হলিউডের। হলিউডে ছবি মুক্তি পেত শুক্রবার। হলিউডের সেই ধারা গ্রহণ করেছিল বলিউডও। প্রথম দিকে অবশ্য ভারতে শুক্রবার ছাড়াও অন্য দিনেও মুক্তি পেত ছবি। ১৯৪৭-এর ২৪ মার্চ ‘নীল কমল’ মুক্তি পেয়েছিল সোমবার। ষাটের দশকের প্রথম ভাগে ‘মুঘল-ই-আজম’-এর হাত ধরেই শুক্রবার মুক্তির চল শুরু হয় এ দেশে। ১৯৬০-এর ৫ অগস্ট মুক্তি পেয়েছিল ‘মুঘল-ই-অজম’। দিনটি ছিল শুক্রবার।
আরও পড়ুন: ‘ষোলো বছর ধরে একে অপরকে খুনের চেষ্টাই করে গিয়েছি’
হলিউডের পাশাপাশি রয়েছে দেশি কারণও। একটা সময় শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল চলচ্চিত্র। সেই সময় মুম্বইয়ের বেশ কিছু কল-কারখানায় শুক্রবার অর্ধেক দিন কাজ হত। ‘হাফ-ডে’র পরে বিনোদনের জন্য যাতে তাঁরা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন সে দিকে খেয়াল রেখে শুক্রবারকে ছবি মুক্তির দিন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি কিছুটা হলেও ছিল কুসংস্কারও। ভারতের বহু জায়গায় শুক্রবারকে সমৃদ্ধির বার বলে মান্য করা হয়। তাই অনেকেই বিশ্বাস করেন ওই দিন ছবি মুক্তি পেলে তা ভাল ব্যবসা দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy