বোনের সঙ্গে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
প্রত্যেক বছর এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করি। সেই ছোট্টবেলা থেকে। বোন ফোঁটা দেবে, সেটা অবশ্যই বড় ব্যাপার। বড় হওয়ার পর ওর হাতের রান্না খাওয়ার জন্যও আমার বছরের প্রতীক্ষা। বড় হওয়ার পরে বোনের এই একটা ভাল ব্যাপার তৈরি হয়েছে। গুছিয়ে দারুণ রাঁধতে শিখেছে। প্রত্যেক বছর রান্নায় নিত্যনতুন চমক। সেই চমকে এই দিন ডায়েট ভুলে ভরপেট খাওয়া। আর আমার প্রিয় পদ সিমুইয়ের পায়েস থাকবেই।
এ বছরেও তেমন কিছু আশায় রয়েছি। সঙ্গে উপহার দেওয়া-নেওয়া থাকে। আমি বরাবর বোনকে কাজে লাগবে এমন কিছু দিই। কোনও বার আমার থেকে ব্যাগ নিয়েছে। কোনও বার বেড়াতে যাবে বোন। তার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বোনও উপহার দেওয়ার ব্যাপারে আমার মতোই। রোদচশমা দিয়েছে কখনও, কখনও মানিব্যাগ। আর চকোলেট তো ‘মাস্ট’। জানেন, আমার বোন সকাল থেকে উপোস করে থাকে! ফোঁটার কারণে। আমি তাই তাড়াতাড়ি এ দিন ঘুম থেকে উঠে পড়ি। যাতে ওকে বেশি ক্ষণ না খেয়ে থাকতে না হয়।
কেন এত কথা বললাম? শুধুই ভাইফোঁটার গল্প বলব বলে?
আমার বোন অন্যের চোখে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন। ওকে ঘিরে তাই অনেকেরই কৌতূহল। তাই মনে হল, এ বছরের ভাইফোঁটায় ওকে নিয়ে কিছু বলি। আমার বোন সত্যিই ‘বিশেষ’। বিশেষ ওর অনুভূতির কারণে। এই যে আমার পশুপাখির প্রতি এত আকর্ষণ, সবটাই কিন্তু বোনের কারণে। ছোট থেকে দেখেছি, চড়াই পাখি থেকে শুরু করে পথপশু— প্রত্যেকের জন্য ওর মনে ভালবাসা রয়েছে। এমনকি গাছের প্রতিও। নিজে হাতে সকলের যত্ন নেয়। বলতে পারেন, ও খুব মায়াময়। আমার অনুভূতি ওর থেকেই এসেছে। আমি শিখেছি ওর থেকে।
তাই যাঁরা আমার বোনকে ‘বিশেষ’ তকমায় দাগিয়ে দেন আজ তাঁদের কিছু বলার দিন। পরিবারের যে কোনও সদস্যই খুব প্রিয়, কাছের, বিশেষ। আমার বোনও তাই। ও না থাকলে ভালয়-মন্দয় গড়া এই বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কেই হয়তো আপনারা পেতেন না। দাদা হিসেবে বোনকে নিয়ে আমার তাই খুব গর্ব।
এর পরেও আমার বোনকে আলাদা করে ‘বিশেষ’ বলা খুব দরকার?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy