সইফ আলি খান এবং হৃতিক রোশনের মতো বলিউডের দুই নামী অভিনেতা বহু বছর পর বড় পর্দায় একসঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত
মাঝে একটা সরু বিভাজনরেখা, যার এক দিকে ভাল, অন্য দিকে মন্দ। এক দিকে সততা থাকলে অন্য দিক মিথ্যায় ভরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যদি এই বিপরীতমুখী রসায়নের কাহিনি অন্য রকম হয়? যদি দুই দিকেই ভাল অথবা দুই দিকেই মন্দ থাকে, তবে ঠিক-ভুল, ন্যায়-অন্যায়ের দাঁড়িপাল্লায় খুব সহজে পরিমাপ করা যাবে কি? বিক্রম বেতালের গল্পের পাতায় পাতায় যেন এই প্রশ্নগুলোই জেগে ওঠে। এই গল্পের উপর ভিত্তি করেই বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে ‘বিক্রম বেধা’। ২০১৭ সালে একই নামের তামিল অ্যাকশন থ্রিলার ঘরানার ছবি বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল।
পাঁচ বছর পর গায়ত্রী-পুষ্করের পরিচালনায় তারই হিন্দি রিমেক মুক্তি পেল। ছবি মুক্তির আগে থেকেই দর্শক এই ছবিটি নিয়ে যথেষ্ট উৎসুক। সইফ আলি খান এবং হৃতিক রোশনের মতো বলিউডের দুই নামী অভিনেতা বহু বছর পর বড় পর্দায় একসঙ্গে। কেমন অভিনয় করেছেন তাঁরা, আর মাধবন এবং বিজয় সেতুপতি আগের ছবিতে যেমন কাজ করেছেন, সইফ-হৃতিকের জুটির অভিনয় কি তার ধারেকাছেও যেতে পারবে, পর্যাপ্ত অ্যাকশন রয়েছে কি না, বলিউড রিমেক হিসাবে ঠিক কতটা সফল হল ‘বিক্রম বেধা’- এ সব প্রশ্ন নিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ছিল দর্শকমহল।
তামিল ছবির মতোই এই ছবিটিও শুরু হয় রাজা বিক্রমাদিত্য এবং বেতালের কাহিনি দিয়ে। পুরাকালের এই কাহিনির সঙ্গে লখনউয়ের এক পুলিশ আধিকারিক এবং এক ‘ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল’-এর জীবনের কোথায় সাদৃশ্য রয়েছে, তা-ই ফুটে উঠেছে এই ছবিতে। বেতালের এক একটা গল্প বলে যাওয়া এবং সেই গল্পের শেষে রাজা বিক্রমাদিত্যের জন্য থাকবে দু’টি প্রশ্ন। সমাধান বার করতে হবে রাজাকেই। এই সিনেমাতেও চিত্রনাট্য একই ধারায় বয়ে গিয়েছে।
তবে, তামিল ছবির চিত্রনাট্যের সঙ্গে খুব বেশি অমিল না থাকলেও মূল গল্প সামান্য বদলেছেন নির্মাতারা। ‘বিক্রম’-এর চরিত্রে সইফ আলি খানের অভিনয় যথাযথ। তবে, কিছু জায়গায় মনে হয়েছে, আর মাধবন যেন এই চরিত্রটিকে আরও জীবন্ত করে তুলেছিলেন। তবে, এই ছবির মূল আকর্ষণ হৃতিক। আবির্ভাব থেকে ক্লাইম্যাক্স- প্রতিটি দৃশ্যে দশ গোল দিয়েছেন তিনি। বিজয় সেতুপতি ‘বেধা’ চরিত্রকে যে ভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, এই ছবিতে হৃতিকও কিছু কম যাননি। দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে চরিত্রের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন তিনি।
এ ছবিতে রয়েছে বেশ কিছু জমজমাট অ্যাকশন দৃশ্য। এই দৃশ্যগুলোতে ক্যামেরার কাজও অসাধারণ। সিনেমাটোগ্রাফি ছাড়াও আলাদা ভাবে দর্শকের মন কাড়বে এই ছবিতে ব্যবহৃত আবহ সঙ্গীত। স্লো-মোশন অ্যাকশনের সঙ্গে সঙ্গীতের এই মেলবন্ধনের জন্যই বার বার দেখা যায় ‘বিক্রম বেধা’।
পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছেন রাধিকা অপ্তে, রোহিত সুরেশ সরফ, শরিব হাশমি প্রমুখ। সকলেই নিজেদের চরিত্রে বেশ ভাল অভিনয় করেছেন। তবে, সব ভালর মধ্যেও কয়েকটি জায়গায় খামতি থেকে গিয়েছে ছবিতে। কৌতুকময় দৃশ্যগুলিতে সংলাপ পরিবেশন জোরদার নয়।
এমনকি, কয়েকটি দৃশ্য যা বেদনার উদ্রেক ঘটায়, সেখানেও অতিনাটকীয়তার ছাপ স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। এই সামান্য খামতিটুকু বাদ দিলে এই ছবি যেমন জমিয়েছে অ্যাকশনে, ঠিক তেমনই সাসপেন্সেও। ছবিতে গানের ব্যবহারও যথাযথ। ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে সইফ-হৃতিকের অভিনয় আলাদা করে প্রশংসার দাবি রাখে। প্রায় তিন ঘণ্টার এই ছবির প্রতি মুহূর্তে দর্শকের জন্য চমক রয়েছে।
সব মিলিয়ে, ‘বিক্রম বেধা’ অ্যাকশন এবং সাসপেন্সে ভরা। দুর্দান্ত অভিনয়, অসাধারণ বিজিএম, অ্যাকশনে পরিপূর্ণ এই ছবি টানটান উত্তেজনায় ভরপুরও বটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy