Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Iman Chakraborty

ইমনের পাশে দাঁড়ালেন সোমলতা-লোপামুদ্রারা

কৃষ্ণনগরে ইমনের অনুষ্ঠানের আয়োজকরা যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ইমনের পাশে দাঁড়ালেন সোমলতা ও লোপামুদ্রা।—ফাইল চিত্র।

ইমনের পাশে দাঁড়ালেন সোমলতা ও লোপামুদ্রা।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:৩৯
Share: Save:

অনুষ্ঠান থেকে বেরনোর পথে হেনস্থা গায়িকাকে। প্রতিবাদে সরব হলেন বাংলার শিল্পীমহল। বাংলায় শিল্পীদের কি আদৌ নিরাপত্তা রয়েছে? প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তাঁরা।

গত রবিবারের ঘটনা। কৃষ্ণনগরে পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী। কিন্তু গোল বাধে অনুষ্ঠান সেরে বেরনোর পথে। তাঁর পথ আটকে দাঁড়ান আয়োজকরা। আরও গান গাইতে হবে বলে জেদ ধরে বসেন। গায়িকা তা অস্বীকার করলে শুরু হয় কটুক্তি। এমনকি দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। শেষমেশ দর্শকদের একাংশ রুখে দাঁড়ালে নিরাপদে বেরিয়ে আসেন ইমন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা দেন ইমন। এর শেষ দেখে ছাড়বেন বলে জানান। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, শিল্পীর কি স্বাধীনতা ও মর্যাদাবোধ থাকতে নেই? গোটা ঘটনায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন দেবজ্যোতি মিশ্র, সোমলতা আচার্য চৌধুরী এবং লোপামুদ্রা মিত্রের মতো শিল্পীরা।

আরও পড়ুন: ‘শিল্পীদের টাকা দিয়েছেন বলে কিছু মানুষ তাঁদের কেনা গোলাম বলে মনে করেন’​

এর আগে ধূপগুড়িতে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে অভব্যতার মুখে পড়েছিলেন গায়িকা সোমলতা আচার্য চৌধুরী। তিনি বলেন,‘‘শুধুমাত্র আমার বা ইমনের সঙ্গে নয়, অনেক শিল্পীই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। সকলে মুখ খোলেন না। কেউ কেউভয় পান। অনেকে আবারঅকারণ ঝামেলায় যেতে চান না। তবে আমার মনে হয় ‘ইটস হাই টাইম’। প্রতিবাদ করতেই হবে। এখন চুপ করে থাকার সময় নয়। তবে সকলেই খারাপ নন। আমার ক্ষেত্রে পুলিশ সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল। উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছিল আমাদের। ইমনের ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছেন কৃষ্ণনগরের সাধারণ মানুষ। তাই কিছু খারাপ মানুষের জন্য ভয় পেলে চলবে না। বরং চেষ্টা করতে হবে, যাতে চারপাশে ভাল মানুষের সংখ্যাটা বাড়ানো যায়।’’

গোটা ঘটনায় হতবাক লোপামুদ্রা মিত্র। কৃষ্ণনগরের মতো জায়গায় একজন শিল্পী লাঞ্ছনার শিকার হতে পারেন, এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না তিনি। লোপামুদ্রা বলেন, ‘‘ইমনের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা ভীষণ ‘আনলাইক কৃষ্ণনগর’। মেদিনীপুরে বা মালদহে গিয়ে শিল্পীদের এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু কৃষ্ণনগর তো অন্য রকম একটা জায়গা!সেখানকার সংস্কৃতিটাই আলাদা। এর থেকেই বোঝা যায়,অনুষ্ঠানের আয়োজকরা প্রপার কালচার্ড নন। এমনিতে আমাদের শিল্পীদের মধ্যেই একতার ভীষণ অভাব।তবে এ বার অন্তত একজোটে প্রতিবাদ করা দরকার। একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার না করে পারছি না।সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলাম। সেখানে আয়োজকদের এক জন বললেন, ‘দিদি, জাতীয় সঙ্গীতের মতো ওই গানটা গাইবেন।’ আমি বললাম, ‘কোনটা? বন্দেমাতরম্?’তিনি হাসি মুখে সম্মতি জানালেন। এই তো অবস্থা আমাদের সংস্কৃতির!’’

সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র বলেন, ‘‘অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমি ইমনের ফেসবুক লাইভটা দেখছিলাম। দেখতে-দেখতে একটা কথাই আমার মনে হচ্ছিল। রাজনৈতিক বাতাবরণটাই এখন এমন হয়ে গিয়েছে। শিল্পীদের প্রশাসনিক ভাবে নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ। সুস্থ মানসিকতা তৈরির লক্ষ্যে গানবাজনা করেন শিল্পীরা। কিন্তু সেটা হচ্ছে কই? শিল্পীকে এই ভাবে অপমান করা হচ্ছে! এর বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রতিবাদ করা উচিত আমাদের। প্রয়োজনে ছয় মাস গাইতেই যাব না। পেশাগত ভাবে অনেক সময়ে সম্ভব সেটা সম্ভব হয় না। কিন্তু এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিল্পীদের একজোট হতেই হবে।’’

আরও পড়ুন: ‘আমারও আফশোস রয়েছে’, কী নিয়ে মুখ খুললেন করিনা?

কৃষ্ণনগরে ইমনের অনুষ্ঠানের আয়োজকরা যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে ঘটনাস্থলে হাজির দর্শকদের একাংশ ইতিমধ্যেই গায়িকার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিষয়টি প্রশাসনিক স্তরে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ইমন নিজেও।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

(হলিউড, বলিউড বা টলিউড - টিনসেল টাউনের টাটকা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগে।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE