‘কুহেলি’ ছবিতে সন্ধ্যা রায় ও বিশ্বজিৎ।
‘আওগে যব তুম সাজনা’ গানটা আজও কোথাও শুনলে দাঁড়িয়ে যাই। কিন্তু বাংলায় তো আপনার গলায় এমন গান আমরা পাইনি। হিন্দি সিনেমার মতো বাংলা সিনেমায় এই ধরনের রাগভিত্তিক গানে কি আপনি আগ্রহী নন? নাকি মিউজিক ডিরেক্টরদের কাছ থেকে প্রস্তাব পাননি? বাংলায় আপনার গলায় এ ধরনের গান শুনতে চাই।
কোয়েল সেনগুপ্ত, সল্টলেক
রাশিদ খান: আমি সব ধরনের ভাষায় গাইতে পছন্দ করি। ভাল গান হলেই হল। ওটাই আমার একমাত্র শর্ত। তবে আপনি যে প্রশ্নটা করেছেন সেটা আমায় না করে মিউজিক ডিরেক্টরদের করুন। ওঁরা কেন আমায় এ ধরনের অফার দেন না? অথবা এটাও হতে পারে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে আমার লেভেল এতটাই উঁচু যে, এ ধরনের প্রস্তাব ওঁরা আমাকে এখনও দিয়ে উঠতে পারেননি।
শ্যামল মিত্রের গাওয়া একটা গান নিজে রেকর্ড করে পাঠালাম। আমার বয়স একুশ। পণ্ডিত অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্লাসিক্যাল শিখি। দমের সমস্যা হয়, কী ভাবে সেটা কাটিয়ে উঠব? আর পিন পয়েন্টে সুর লাগাব কী ভাবে?
অনুরাগ ঘোষ, সল্টলেক
রূপঙ্কর: শ্যামল মিত্রের গান শুনলেই মনে পড়ে যায় তাঁর বেশ কিছু গানের কথা। ‘স্মৃতি তুমি বেদনার’, ‘যদি কিছু আমারে শুধাও’, ‘এ যেন অজানা এক পথ’— কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলব। তাঁর গলায় একটা রোম্যান্টিসিজম ছিল, উচ্চারণের ধরনটা ছিল একদম আলাদা।
আপনি ভাল গেয়েছেন। তবে যে প্রশ্নগুলো করেছেন তার উত্তর অমিয়রঞ্জনবাবু ভাল দিতে পারবেন বলে আমার মনে হয়। দম বাড়ানোর জন্য স্ট্যান্ডিং নোট প্র্যাকটিস করতে হবে। যে স্কেলে গান গাইছেন সেই স্কেলের ‘সা’ ধরে প্রতিদিন রেওয়াজ করে যান দশ থেকে পনেরো মিনিট। গানের মাঝে চোরা দম কী ভাবে নেবেন সেটা শিক্ষকের কাছে শিখে নিন।
রিয়েলিটি শো-য়ে প্রতিযোগীরা আজও রবীন্দ্রসঙ্গীত, পুরোনো দিনের বাংলা বা হিন্দি গান করেন। কিন্তু ‘বৌদিমণির কাগজওয়ালা’ গান না কেন?
সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, শীলপাড়া
রূপঙ্কর: ‘বৌদিমণির কাগজওয়ালা’ গাইলে বিচারকরা নম্বর দেবেন না। কারণ আপাত ভাবে এই গান গাওয়া সহজ। কোনও রকম প্রশিক্ষণ ছাড়া এ ধরনের গান গাওয়া সম্ভব। যদিও আমি মনে করি এই গান গাইতে গেলে এক ধরনের অভিনয় প্রয়োজন হয়। একজন শিল্পীর সেটা জানা উচিত।
আপনি তো বিদেশে শো করেন। সেখানে শ্রোতারা কী ধরনের রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে চান? প্রথাগত গায়কিতে, নাকি ‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে’, ‘মায়াবনবিহারিণী’ এখন নতুন যে স্টাইলে গাওয়া হচ্ছে সেই ভাবে?
অন্বেষা দত্ত, সাঁকরাইল
রূপঙ্কর: কে কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করবেন, এটা ব্যক্তি বিশেষের ওপর নির্ভর করে। তিনি দেশে থাকেন, না দেশের বাইরে, তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। এখনও অনেক শ্রোতা আছেন যাঁরা রবীন্দ্রসঙ্গীতে প্রথাগত গায়কি পছন্দ করেন। আবার কারও হয়তো সেটা পছন্দ নয়। তাঁরা নতুন ধরনের স্টাইল পছন্দ করেন। বহু শ্রোতার কাছ থেকে তেমন অনুরোধও পাই আমি।
এখন এমন একটা সময় যে, কোনও গানের তেমন স্থায়িত্ব নেই। বিশেষ করে কমার্শিয়াল সিনেমার গান। নতুন শিল্পীরা প্রতিষ্ঠা পেতে গেলে কোন ধরনের গান গাইবেন? রিমেক? বেসিক গান, নাকি অন্য ধরনের গান? আপনার পরামর্শ চাই।
অনিন্দিতা গুপ্ত, রাজারহাট
শ্রাবণী: সব গানের স্থায়িত্ব কমে গেছে আমার তা মনে হয় না। আমি রবীন্দ্রনাথের গানের কথা বলতে পারি, তার যথেষ্ট স্থায়িত্ব আছে। যাঁরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে জীবন শুরু করতে চাইছেন তাঁরা রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে শুরু করতে পারেন। সিনেমায় রবীন্দ্রসঙ্গীত জনপ্রিয়। আজও ইউটিউবে প্রচুর মানুষ সন্ধ্যা রায় আর বিশ্বজিৎ-য়ের ‘তুমি রবে নীরবে’ শোনেন। এই গানের উদাহরণ দিলাম কারণ ওটা রবীন্দ্রনাথের গান, আবার সিনেমাতেও ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু আসল কথা হল সব গানই তৈরি হয়ে গাইতে হবে। ঠিক মতো তালিম নেওয়া দরকার। শুধু নাম করার জন্য গাইব ভাবলে হবে না। গুরুর কাছে নিষ্ঠা নিয়ে শিখতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। চটজলদি কিছু হয় না। যে কোনও গান ঠিকভাবে শেখাটা ভীষণ জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy