কেমন আছেন বিষাণ?
অনির্বাণ: ভাল আছি। আপনি?
ভালই। এখনও আপনি বিষাণই তো? অনির্বাণ নন?
অনির্বাণ: বিষয়টা হচ্ছে চরিত্রদের কখনও আমি বাইরের মানুষ ভাবি না। যত দিন ‘ঈগলের চোখ’-এর জন্য ক্যামেরা রোল করছে তত দিন আই অ্যাম বিষাণ রায়।
বিষাণ মানুটা ঠিক কেমন?
অনির্বাণ: বেসিক্যালি ঘাঁটা লোক। বিবাহিত, উচ্চশিক্ষিত বিজনেসম্যান। তার অ্যাম্বিশান, সেক্সুয়ালিটি, মদ্যপান, জীবনযাপন নিয়ে পুরো ঘেঁটে গিয়েছে। ছোটবেলায় বয়সে বড় এক মহিলা ওকে নির্যাতন করে। সেটা বিষাণকে ঘেঁটে দিচ্ছে নাকি বর্তমান কোনও ঘটনা— সেটা ছবি বলবে।
বিষাণের সঙ্গে অনির্বাণের কোনও মিল রয়েছে?
অনির্বাণ: (দীর্ঘ পজ) পলিগ্যামি ছাড়া আর কোনও মিল নেই।
পায়েলের সঙ্গে তো আপনার একটা অন্য রকম ইকুয়েশন রয়েছে ছবিতে?
অনির্বাণ: হুম। তা আছে বটে।
সেটা কে শেয়ার করবেন, আপনি না পায়েল?
পায়েল: এখন বলে দিলে তো মজাটাই মাটি। দর্শককে তো ছবিটা দেখতে হবে। তবে আমাদের জুটিটা যদি দর্শকদের পছন্দ হয়, তা হলে তো ভালই হবে। আমি অবশ্যই ওর সঙ্গে আবার কাজ করতে চাই। ও শটে অনেক কিছু বলত, আচ্ছা এটা এ রকম করি, বা ও রকম করি, সেটা পরে অরিন্দমদার ভালও লাগত। অ্যাপ্রিসিয়েট করতেন। আমাদের জেনারেশনে আমি অনেক দিন পর এমন ফুল ফ্লেজে়ড অ্যাক্টরের সঙ্গে কাজ করলাম। কো অ্যাক্টর ভাল হলে নিজেও মোটিভেট হওয়া যায়।
পায়েল তো ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার সিনিয়র। ওঁকে চিনতেন আগে?
অনির্বাণ: আমি জানতাম শি ইজ আ হিরোইন। তবে ওকে যে দিন প্রথম দেখলাম, তখনও আমি শুয়ে আছি খাটে। উইদিন সিক্সটি সেকেন্ডস আমরা শটে। আমি মেদিনীপুর থেকে আসা গ্রামের ছেলে। আমি দেখতে পাচ্ছি সামনে এতগুলো নায়িকা। আমাকে কোনও প্রিপারেশনের টাইমই দেওয়া হচ্ছে না। (একটু হেসে) ইচ্ছে করে দেওয়া হচ্ছে না, তা নয়। আরে শি ইজ আ হিরোইন। একটু ধাতস্থ হতে দাও।
এত জন নায়িকাকে সামলালেন কী ভাবে?
অনির্বাণ: আমি কে? ও সব তো ডিরেক্টরের ডিপার্টমেন্ট।
ডিরেক্টরের ওপর রাগ হত না?
অনির্বাণ: না (মুচকি হাসি)।
মডেল উষসী সেনগুপ্তের এটাই প্রথম ছবি।
তা হলে কি হিংসে হত?
অনির্বাণ: দেখুন আমি রাগ বা হিংসে করলে সেই সময়টা আমার সাইলেন্ট এনজয়মেন্টে ব্যাঘাত ঘটবে। জোকস অ্যাপার্ট এই ছবিতে ঊষসী, আমি আর রিয়া নতুন। অলমোস্ট সেম প্ল্যাটফর্ম থেকে কাজ করেছি। কিন্তু জয়া, পায়েল, অরুণিমা আমাকে সিনিয়র হিসেবে টু হান্ড্রেড পার্সেন্ট হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
‘এবার শবর’র থেকে এ ছবিতে আপনার চরিত্রটা কতটা আলাদা পায়েল?
পায়েল: একেবারে আলাদা। আমার চরিত্রের নাম নন্দিনী। বেশ জটিল চরিত্র। কমপ্লিটলি ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট হিসেবে বলা কঠিন। নন্দিনী এমন কিছু করেছে যা করার সাহস হয়তো আমার হত না।
আগের বারের মতো এ বারও পর্দায় স্মুচ করলেন?
পায়েল: আসলে ক্যারেক্টারটাই খুব বোল্ড। ফলে আলাদা করে ও সব দেখানো হয়নি। তবে স্মুচ করলে বা লাভ মেকিং সিন করলেই যে বোল্ড ক্যারেক্টার এটা একেবারেই নয়। এই ছবিতে সেক্স খুব ইমপর্ট্যান্ট পার্ট। তবে সবটাই খুব আন্ডারটোন।
কোনও হোমওয়ার্ক করেছিলেন?
পায়েল: এমনিতে আমি হোমওয়ার্কে বিশ্বাসী নই। আমার মনে হয়, অন দ্য স্পট যেটা হবে সেটাই সব থেকে ভাল। আর অরিন্দমদা খুব ভাল ব্রিফ দিয়েছিল। ফলে সেখানেই অর্ধেক কাজ হয়ে গিয়েছিল।
অনির্বাণ আপনার হোমওয়ার্ক ছিল?
অনির্বাণ: কিছুটা। কিছুটা হোমওয়ার্ক তো করেছিলাম বটেই।
যেমন?
অনির্বাণ: ঘুম কমিয়ে দিয়েছিলাম। বিষাণকে আত্মস্থ করতে নিজের জীবনের ডিপ্রেশনগুলো ভাবতে চেষ্টা করতাম। ভেতর থেকে একটু শ্যাবি থাকার চেষ্টা করতাম।
আপনার পছন্দের গোয়েন্দা কে?
অনির্বাণ: আমার পছন্দের গোয়েন্দা সবাই। এমনকী দীপক চট্টোপাধ্যায়ও (হাল্কা হাসি)।
ফেলুদা বা ব্যোমকেশের কথা আলাদা ভাবে মনে হয়নি?
অনির্বাণ: ছোটবেলায় আমার এক জনই গোয়েন্দা ছিল। ফেলুদা। ব্যোমকেশ অনেক পরে পড়েছি। কিরীটি, শার্লক হোমসও আছেন। এদের মধ্যে কোথাও একটা পৌরাণিক মাহাত্মের ছাপ পাওয়া যায়। কিন্তু শবরকে একেবারে কঠিন বাস্তবে হেঁটে চলে বেড়াতে হয়। শবরকে উওম্যান সাইকোলজিও ভাল ভাবে বুঝতে হয়।
তা হলে কি শবর এখন সবচেয়ে প্রিয়?
অনির্বাণ: এগ্জ্যাক্টলি। (থমকে গিয়ে) না মানে এই সবচেয়ে প্রিয় কনসেপ্টটা নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। শবরকে এই প্র্যাকটিকাল ফিল্ডের কারণে ভাল লাগে। ফেলুদাকে ওই ভিনটেজ ব্যাপারটার জন্য ভাল লাগে।
পায়েল আপনার ওপর কেউ কখনও গোয়েন্দাগিরি করেছে নাকি?
পায়েল: হুম, করেছে। আমি বুঝতেও পেরেছি।
তাই নাকি? কী হয়েছিল?
পায়েল: এটা খুব পার্সোনাল। প্লিজ…। এটা শেয়ার করব না।
আচ্ছা অনির্বাণ, স্টেজ নাকি বড়পর্দা কোনটা বেশি পছন্দের?
অনির্বাণ: স্টেজ আর বড়পর্দার ম্যাজিকের মধ্যে টেকনিক্যাল তফাত আছে। দুটোই আমার পছন্দের।
এটা তো খুব ডিপলোম্যাটিক উত্তর হয়ে গেল।
অনির্বাণ: না, আমি ডিপলোম্যাটিক নই। আসলে দু’জন রমণী যদি সমান সুন্দরী হয়, তেমন আর কী। যে কোনও এক জনকে বেছে নিলে বুঝতে হবে আমার ভালবাসায় কোনও খামতি রয়েছে। আমার ভালবাসা বাড়িয়েই দু’জনকে দেওয়াটা বেটার।
ঈগলের চোখের ইউএসপি কী? দর্শক কেন দেখবেন এই ছবি?
পায়েল: শবরই প্রথম ইউএসপি। শবর অলরেডি একটা ব্র্যান্ড। তা ছাড়া শবর, অরিন্দমদা, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়— এই ত্রিকোণ সম্পর্ক দর্শক অলরেডি পছন্দ করেছেন। আর আমার চরিত্রটাও একেবারে আলাদা।
অনির্বাণ: শবরের মতো এমন চরিত্র দর্শক আগে দেখেননি। ফলে সেই ম্যাজিকটাই ইউএসপি।
লোকেশন সৌজন্যে: দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন।
আরও পড়ুন, ‘শবর’কে আউট অফ টেন কত দিলেন শাশ্বত?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy