ডেলি সোপ ‘মহানায়ক’ নিয়ে তো ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। আপনি দেখছেন?
প্রথম দিকে কয়েকটা এপিসোড দেখেছি। তার পর মাঝেমধ্যে দু’একটা চোখে পড়েছে।
ভাল লেগেছে?
দেখুন আজকাল তো বেশির ভাগ সিরিয়ালেই স্টার্টিং ভাল হয়, কিন্তু মাঝপথে যেন খেই হারিয়ে ফেলে। তখন আর ভাল লাগে না। আর কোনও জিনিস ভাল না লাগলে আমি বসে দেখতে পারি না। নিজে অভিনয় করেছি এমন সিরিয়ালও নাম্বার ওয়ান থেকে বছরের পর বছর টানতে গিয়ে একই অবস্থা হয়েছে।
কিন্তু ‘মহানায়ক’ তো সবে শুরু হয়েছে…
হ্যাঁ হতে পারে। তবে যেটুকু দেখেছি আমার ভাল লাগেনি। দেখুন যিনি করেছেন কষ্ট করেই তো করেছেন। একটা ইয়ং ছেলে, দাঁড়াতে চাইছে (বিরসা দাশগুপ্ত ‘মহানায়ক’-এর পরিচালক)। ও তো ওর সমস্ত দিয়েই চেষ্টা করছে। বিরসা তো ভাল ছবি তৈরি করে। ওর ‘অভিশপ্ত নাইটি’ আমি দেখেছি, আমার ভাল লেগেছে। এ ক্ষেত্রে দোষ তো ওর একার নয়। একটা গোটা টিম-ই তো কাজ করছে!
ভাল লাগেনি কেন?
অনেক কারণ আছে। সবথেকে বড় কথা, যে সব ঘটনা দেখানো হচ্ছে, তখন তেমন কিছু ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।
টিম ‘মহানায়ক’ কিন্তু বার বার বলেছে এটা বায়োপিক নয়।
সে তারা বলতে পারে। দর্শক যা বোঝার সবই বুঝছেন।
‘মহানায়ক’ সিরিয়ালের একটি দৃশ্যে প্রসেনজিত্-পাওলি।
আপনি তো সে সময়ের শিল্পী। প্রতিবাদ করবেন না?
আমি একা কেন কিছু বলব বলুন? আরও অনেকে আছেন। সকলে যদি বলেন, আমি বলতে পারি। আর আমি বলার কে? দর্শকই সব। লাথি মেরে ফেলে দিতেও পারে, আবার ভালবেসে বুকে টেনে নিতেও পারে। ফলে টিআরপি-ই বলে দেবে দর্শকদের পছন্দ হচ্ছে কি না।
আপনার চরিত্রে ‘মহানায়ক’-এ যিনি অভিনয় করছেন, তাঁকে দেখেছেন?
না। আমি জানি না, কে কী করছেন আমি বলতে পারব না।
যেটুকু দেখেছেন কারও অভিনয় পছন্দ হল?
একমাত্র পাওলিকে খানিকটা মানিয়েছে। ওর কাজ ভাল লেগেছে।
আর কাউকে ভাল লাগেনি বলছেন?
দেখুন এগুলো আমার বলাটা ঠিক নয়। সব দর্শকই বিচার করবেন। আর উত্তমকুমারকে কে মহানায়ক তৈরি করল বলুন তো? বেঁচে থাকলে আপনারা তাঁকে এ সম্মানটা দিতেন? আর এই নিয়ে মমতা আসার পর তো আরও মাতামাতি শুরু হল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো এখন উত্তমকুমারের নামে পুরস্কারও চালু করেছেন।
তবুও তো মমতা দিয়েছে, আর কোনও সরকার তো শিল্পীদের কথা ভাবেনি। আমাকে তো আগের সরকার কিচ্ছু দেয়নি। এমনকী ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের কার্ডও কোনওদিন দেয়নি কেউ। মমতা তো কার্ড পাঠায়, ফোন করে জানায় গাড়ি কখন যাবে। অনেক নমস্য ও। যদিও আমার থেকে অনেক ছোট। দুঃস্থ শিল্পীদের হাতে টাকা দেওয়া, সেটা যেখান থেকেই দিক, কেউ তো করেনি আর। হ্যাঁ সুভাষ চক্রবর্তী করেছে। সে তার এলাকায় আমাকে সম্মান দিয়েছে। বাকি আর কেউ দেয়নি। মমতা তো আমাকে ভোটে দাঁড়াতেও বলেছিল।
‘ঠাম্মার বয়ফ্রেন্ড’-এর শুটিংয়ে সাবিত্রী।
তাই? গত বিধানসভা ভোটের আগে?
সে আমার মনে নেই। তবে বলেছে। ওই তো সকলকে জিতিয়েছে। কিন্তু আমি তো রাজনীতির কিছু জানিই না। যেটা জানি না, সে কাজটা কী ভাবে করি বলুন!
কোনও আক্ষেপ রয়েছে আপনার?
এত দিন ধরে আক্ষেপ করে করে এখন আর আক্ষেপ হয় না। অনেক কিছুই তো পাইনি জীবনে। আমি অন্য লোকের থেকে কাপড় ধার করে পরে বাসে চেপে স্টুডিওতে যেতাম। একবেলা খেয়ে থেকেছি দিনের পর দিন। তাই মাটিতে বসে খেতেও কষ্ট হয় না, টেবিলে বসেও খেতে পারি। আবার না খেলেও কষ্ট হয় না। কী হবে আর এ সব ভেবে? দর্শক যে ক’দিন ভালবাসবে থাকব, না থাকলে চলে যাব।
আরও পড়ুন, আমার ফেলে আসা শৈশব, অন্য ভাবে বড় হয়ে ওঠা... সব মিলিয়ে আমার পুজোর সাজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy