মায়ের সঙ্গে সোহিনীর সমীকরণ কেমন?
মা-মেয়ের সম্পর্ক আসলে বহুমাত্রিক। স্নেহ-বাৎসল্য-ভালবাসা-শাসন ছাড়াও যে আরও অনেক কিছু সেই রসায়নে ঠাঁই করে নিতে পারে, চট করে ভাবা যায় না। বিশেষত ঈর্ষা, সে-ও আবার হয় নাকি? হয়। জানালেন অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত। মা স্বাতীলেখা সেনগুপ্তর সঙ্গে তাঁর যে ছিল রেষারেষিরই সম্পর্ক!
শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ আড্ডা ‘অ-জানা কথা’য় এসে স্মৃতির আগল খুললেন ‘ইচ্ছে’-র নায়িকা। মাকে যে কত কথা বলা হয়নি, সেই আক্ষেপ তাঁর রয়েই গিয়েছে। আজও স্বাতীলেখা তাঁর মেয়ের চোখে আইকন। একমাত্র রোল মডেল। তার পাশাপাশি জমিয়ে রেখেছেন একরাশ অভিমানও।
সোহিনী বলে চলেন, “আমি যখন জন্মেছিলাম, মায়ের তখন সবে ২২ বছর। এক জন অল্পবয়সি প্রতিভাশালী মহিলার জীবনে আমি বোঝা হয়ে এলাম। আমার মা প্রস্তুত ছিলেন না। আমাকে নিয়ে কী করবেন বুঝতেই পারতেন না। মায়ের নিজের পড়াশোনা, সঙ্গীতচর্চা, রান্নাবান্না— নিজের জগৎটা তাঁর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমায় কখনও কখনও অপছন্দ করতেন। কিন্তু একই সঙ্গে আমি মায়ের জীবনে সবচেয়ে বেশি নিজের ছিলাম। তাঁরই যে রক্ত। এই দোলাচলটা সারা জীবন ধরে গিয়েছে।”
পরে মা-ই কিন্তু চেয়েছিলেন আমি অভিনয় করি। আমাকে বলতেন, “তোর খুব আনন্দ হবে দেখিস, সারা ক্ষণ তো বইয়ে মুখ গুঁজে থাকিস। স্টেজে দাঁড়ালে নিজেকে খুব ক্ষমতাবান মনে হয়। দ্যাখ না করে!” সোহিনী মায়ের কথাতেই এর পর অভিনয়ে আসেন। কিন্তু যখন মায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে উঠলেন, তুলনামূলক আলোচনা টানত দর্শক। মা ভাল করলেন না মেয়ে, এ নিয়ে সামনাসামনি মতামত জানিয়ে যেতেন অনেকে। তখন স্বাতীলেখা আর সোহিনীর মধ্যে একটা রেষারেষিও হত। যেটা কখনও কখনও বেশ যন্ত্রণার বলে জানান সোহিনী। আবার এখন যে স্বাতীলেখা নেই তাতে সোহিনীর মনে হয়, “আমার এখন আর কোনও কাজ নেই।”
জানান, একটা আক্ষেপ তাঁর রয়েই যাবে। সেই দিনের কথা খুব মনে পড়ে, যে দিন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ‘বেলাশুরু’-র ব্যক্তিগত স্ক্রিনিং করেছিলেন। সে দিন স্বাতীলেখার সঙ্গে সোহিনীরও যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নিজের একটি কাজের জন্য যেতে পারেননি। তাই বলা হয়ে ওঠেনি মাকে যে, “ইউ আর দ্য বেস্ট”। পরে যখন সোহিনী দেখেছিলেন ‘বেলাশুরু’-তে মায়ের অভিনয়, তত দিনে চলে গিয়েছেন স্বাতীলেখা।
সেই সঙ্গে জানান, আর কেউ কিছু বলুক না বলুক স্বাতীলেখার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সোহিনীর মতামত। সোহিনীর কাছেও তাই। খারাপ বললে হয়তো লাঠালাঠি হয়ে যেত, তবু সেটাই জরুরি ছিল।
এখন মায়ের ছবির সঙ্গেই বসে বসে ঝগড়া করেন নান্দীকারের এই প্রজন্মের কাণ্ডারি, সোহিনী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy