মন খোলা আড্ডায় শুভশ্রী। ফাইল-চিত্র
‘ধর্মযুদ্ধ’, ‘হাবজি গাবজি’, ‘বিসমিল্লা’— যে দিকেই চোখ যায়, এখন শুধুই তিনি। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। পুজোতেও মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর নতুন ছবি ‘বৌদি ক্যান্টিন’। পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ছবি মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি শুভশ্রী।
প্রশ্ন: নিজের জীবনটা অনেকটা সিনেমার মতো মনে হয় না? ফার্স্ট হাফ, সেকেন্ড হাফ আর ইন্টারমিশন?
শুভশ্রী: (চেনা হাসি দিয়ে শুরু) তাই! আমার কখনও এমনটা মনে হয়নি। আসলে নিজেদের কাজ, জীবন নিয়ে এতটা ব্যস্ত থাকি তাই এটা বুঝতে পারি না। বাইরে থেকে যাঁরা আমাদের দেখছেন, তাঁরা বুঝতে পারবেন। যেটুকু করি সততার সঙ্গে করি, এটাই আমার মূল মন্ত্র।
প্রশ্ন: হাতে প্রচুর কাজ, ছবি সই করার আগে কী মাথায় রাখেন এখন?
শুভশ্রী: আমি দর্শক হিসাবে গল্প শুনি। এক লাইন শুনে যদি মনে হয় আমার এই কাজটা করা উচিত, তখনই রাজি হয়ে যাই। তাতে চরিত্রের দৈর্ঘ্য বড় হোক বা ছোট। তবে এক লাইন শোনার পর যদি মনে হয় পুরো চিত্রনাট্যটা শুনতে হবে, তা হলে গন্ডগোল আছে!
প্রশ্ন: কেরিয়ারের শুরুতেও কি এ ভাবেই ভাবতেন?
শুভশ্রী: প্রথমের দিকে এই ভাবে কাজ হত না। আমরা কখনও চিত্রনাট্যও পাইনি হাতে। শুধু বলে দেওয়া হত তুমি এই ছবিটা করছ। ফ্লোরে গিয়ে বলা হত, এই সংলাপ বলে দাও ব্যস। চিত্রনাট্য আগে থেকে পড়ার ব্যাপার ছিল না। আমি তখন দর্শক মহলে পরিচিত নাম। এক বার এক পরিচালকের কাছে ছবির আগে চিত্রনাট্য চেয়েছিলাম। তখন উনি বলেছিলেন, বাবা! এত বড় হয়ে গিয়েছিস যে স্ক্রিপ্ট চাইছিস। যদিও এখন সবটাই বদলে গিয়েছে।
প্রশ্ন: নতুন প্রজন্ম তা হলে অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছে?
শুভশ্রী: অনেক অনেক সুবিধা। আগে অনেক অসুবিধার মধ্যে দিয়ে আমাদের কাজ করতে হত। এনটিওয়ান স্টুডিয়োর বাইরে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। দারোয়ানের কাছে এন্ট্রি করে ঢুকতে হত। নতুন প্রজন্মের কাউকে এ সবের মুখোমুখি হতে হয় বলে আমার মনে হয় না।
প্রশ্ন: আপনার সমসাময়িক নায়িকাদের এখন দেখাই যাচ্ছে না, চারিদিকে শুধু আপনারই ছবি!
শুভশ্রী: অবশ্যই খুবই ভাল লাগছে। ভগবানের আশীর্বাদে যেন এই ভাবেই সততার সঙ্গে কাজ করে যেতে পারি। আমায় বিভিন্ন রকম চরিত্রে পরিচালক, প্রযোজকরা ভাবছেন তা অবশ্যই আনন্দের।
প্রশ্ন: হঠাৎ কী ম্যাজিক হল, যে সবাই আপনাকে নিয়ে ভাবছেন?
শুভশ্রী: অবশ্যই বাকিদের জিজ্ঞেস করতে হবে। আমি সব সময় আমার একশো শতাংশ দিয়ে কাজ করে এসেছি। তবে অবশ্যই ‘পরিণীতা’ ছবির মাধ্যমে এক অন্য শুভশ্রীর জন্ম হয়। সেই পরিচালক বুঝেছিলেন, আমিও অভিনয় করতে পারি। তার পরেই বাকিরা গুরুত্ব দিতে শুরু করেন। এই ব্রেকটা আমি আগেই পেতে পারতাম। যদি মানুষ গতে বাঁধা চিন্তাভাবনায় আটকে না থাকত।
প্রশ্ন: কখনও মনে হয়, ভাগ্যিস ‘পরিণীতা’-কে রাজ আমার জীবনে এনেছিল?
শুভশ্রী: না, শুধু পরিণীতার জন্য নয়। এমন বহু কারণের জন্য মনে হয়, ভাগ্যিস ও জীবনে এসেছিল! আমি বলতে পারি রাজ সেই সময় আমার উপর বিশ্বাস করেছে, যখন আমি নিজেই ভাবতে পারিনি যে, এই কাজটা আমি পারি।
প্রশ্ন: ‘আমি কি পারব’— নিজেকে নিয়ে এই সংশয় হয়েছে তার মানে?
শুভশ্রী: সংশয় বলব না। মাঠে নামার আগে তো বুঝতে পারব না পিচটা কেমন? আমার বিপরীতে যে আছে, তার আজ মুড কেমন। মাঠে নামার সুযোগটা তো পেতে হবে। সেই দ্বিধাটাই মাঝেমাঝে কাজ করত। সেই আত্মবিশ্বাস জোগায় এক জন কোচ। বোঝাবে, তুমি পারবে। মাঠে নামলে তুমি ছক্কা মারবে। সেই কোচের ভূমিকাই পালন করেছে রাজ।
প্রশ্ন: এই পুজোয় ‘বৌদি ক্যান্টিন’ ছাড়াও অনেকগুলো ছবি মুক্তি পাবে। এই ছবি কেন দেখবেন দর্শক?
শুভশ্রী: আমার ছবিটাই আগে দেখতে হবে, এমন ভাবনা আমার নেই। বহু বছর ধরে দেখছি, পুজোর সময় ছবি মুক্তি পেলে ভালই ব্যবসা করে। আমার ধারণা, সেই বিশ্বাস থেকেই প্রযোজক ভেবেছেন পুজোর সময় এতগুলো ছবির মাঝে ভাল ব্যবসা করবে আমাদের ছবিও।
প্রশ্ন: ‘ইন্দুবালা’র শুভশ্রীকে দেখে তো সবাই চমকে গিয়েছে! আপনি খুশি নিজেকে এ ভাবে দেখে?
শুভশ্রী: ওই মেক আপ করতে এবং তুলতে মোট সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে। সোমনাথ কুণ্ডু অসাধারণ। তবে শুধু মেকআপ করলে তো হবে না। অভিনয়টা তো করতে হবে। আমার মাথায় একটা জিনিস কাজ করে, রেডি হয়ে প্রথম যখন ফ্লোরে পা রাখব, তা দেখে প্রথম যে প্রতিক্রিয়াটা আমি পাব, সেটাই নির্ণয় করে দেয় কী হতে চলেছে। আমায় দেখে সবাই থমকে গিয়েছিলেন।
প্রশ্ন: কোন পরিচালকের সঙ্গে কাজ না করার আক্ষেপ রয়েছে?
শুভশ্রী: অবশ্যই ঋতুপর্ণ ঘোষ। স্বপ্ন ছিল। শুনেছিলাম, আমায় নিয়ে ভেবেওছিলেন তিনি। যাই হোক, কিছু কিছু স্বপ্ন অপূর্ণ থাকাই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy