Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

হইচই হলেও হল না ‘আনলিমিটেড’, রইল কিছুটা সংশয়

হাইজ্যাক হওয়া প্লেন বাঁচানোর গল্প যেন একটু অতিরঞ্জন ঠেকে, তেমনই সিনেমার প্রথম পর্ব জমাটি হলেও আত্মহত্যার চেষ্টার দৃশ্যায়ন নতুন নয়। সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব, অর্থাৎ উজবেকিস্তান-পর্ব আরও জমজমাট হতে পারত।

সিনেমায় বিস্তর হইচই থাকলেও তা আনলিমিটেড কি না, তাতে কিছু সংশয় থাকে।

সিনেমায় বিস্তর হইচই থাকলেও তা আনলিমিটেড কি না, তাতে কিছু সংশয় থাকে।

অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

হইচই আনলিমিটেড

পরিচালনা: অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

অভিনয়: দেব, শাশ্বত, খরাজ, অর্ণ, পূজা, কৌশানী

৬/১০

‘চেনা দুঃখ, চেনা সুখ’, চেনা জাঁতাকল। তাতে হাঁসফাঁস চার পুরুষ। সেই ফাঁস খোলার গল্পে দেদার মজার উপকরণ। আর সংলাপে অট্টহাস্য দর্শকের। অনিকেত চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘হইচই আনলিমিটেড’ সাজানো এ দিয়েই। হইচইয়ের লক্ষ্যপূরণ ওই হাসানোতেই।

সিনেমার গল্পে চার পুরুষ চরিত্র কুমার (‌‌‌‌দেব), অনিমেষ চাকলাদার (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়), বিজন চিরিমার (খরাজ মুখোপাধ্যায়), আজ়ম খান (অর্ণ মুখোপাধ্যায়)। এই চার জনের জীবনেই নিজস্ব ‘সঙ্কট’ রয়েছে। সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় চার জনেই। আর সেখানেই সবার আত্মহত্যাতুতো ভাই হয়ে ওঠা। আত্মহত্যার বদলে শীতল রায়ের (রজতাভ দত্ত) প্রস্তাব মতো উজবেকিস্তানে যাওয়া, প্লেন হাইজ্যাকের ঘটনায় ওই চার জনের সন্দেহভাজন হয়ে ওঠা, লোলার (পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গলাভ, স্বামী-সন্ধানে অথবা স্বামীদের কীর্তি চাক্ষুষ করতে স্ত্রীদের আগমন এবং শেষমেশ হাইজ্যাক থেকে প্লেনকে রক্ষা করে ওই চার জনের বীরের সম্মানলাভ— গল্পের বৃত্ত এই।

সিনেমাটির মূল প্রাপ্তি এর সংলাপ। তুলনায় সংলাপের ব্যবহার কম করেও পরিচালক যেন বার্তা দিতে চান, ‘হাসি শুধু হাসি নয়।’ আর তাই সিটকম গোত্রীয় সিনেমা হলেও এর সংলাপে আসে ‘মন কী বাত’, বাংলা ‘মেগা’, ‘নো ক্যাশ, অল ডিজিটাল’, এমনকি পরিচিত এক পরিচালকের সিনেমার কথাও। তবে বিষয়গুলি স্রেফ উল্লেখ করা হয়েছে, ভাল বা খারাপের বিচার করেনি। এই স্বাভাবিক উল্লেখের জন্যই সিনেমাটি দর্শককে সমসময় থেকে বিচ্ছিন্ন করে না।

অভিনয়ে দেব আগের তুলনায় অনেক পরিণত। সেই পরিণতিতে হিরোসুলভ স্টান্ট থাকলেও আছে ঘরের ছেলের ভয়, সাহসের মিশেল। খরাজ, শাশ্বত, নানা রূপের রজতাভ, অর্ণ সুযোগ মতো সাবলীল। পূজার অভিনয়ও খাপ খায়। বাকিরাও সাবলীল।

সিনেমায় বিস্তর হইচই থাকলেও তা আনলিমিটেড কি না, তাতে কিছু সংশয় থাকে। এর কারণ, সিনেমার দৃশ্যায়ন ও গল্পের প্লটের কিছু দুর্বলতা। হাইজ্যাক হওয়া প্লেন বাঁচানোর গল্প যেন একটু অতিরঞ্জন ঠেকে, তেমনই সিনেমার প্রথম পর্ব জমাটি হলেও আত্মহত্যার চেষ্টার দৃশ্যায়ন নতুন নয়। সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব, অর্থাৎ উজবেকিস্তান-পর্ব আরও জমজমাট হতে পারত। কার্যত ঘরবন্দি থাকা চার পুরুষের অসহায় অবস্থা দেখে হাসি পেলেও, সে মজা খানিক আরোপিত। এ ছাড়া দু’-একটি বিষয় বাদ দিলে উজবেকিস্তানের নিজস্ব রূপ-রং-গন্ধ, অর্থাৎ লোকাল কালারের ব্যবহার সিনেমায় সীমাবদ্ধ।

সুরকার হিসেবে স্যাভি, সম্পাদনায় মহম্মদ কালাম, সিনেম্যাটোগ্রাফার ঈশ্বরচন্দ্র বারিক স্বচ্ছন্দ। গানগুলিতে গায়কেরা সিনেমার সঙ্গতে হইচই করেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE