জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ির পাশের পুকুরে মোবাইল খোঁজার সেই দৃশ্য। —ফাইল চিত্র।
বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যতটা মাত্রা পেয়েছিল, তার চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না জলে ছুড়ে ফেলা তাঁর ফোন দু’টিকে নিয়ে আলোচনা। কারণ, গোটাটাই যেমন নজিরবিহীন ও নাটকীয় ছিল, তেমনই সেগুলি অভিযোগের তথ্যপ্রমাণের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেই প্রশ্নেও তপ্ত হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। সুপ্রিম কোর্টে জামিন পাওয়ার পর সেই জীবনকৃষ্ণ দাবি করলেন, তিনি মোবাইল পুকুরে ফেলেননি! সেই সঙ্গে বিধায়ক জানালেন, তাঁর কাছে সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে। সব প্রমাণ দিয়ে দেবেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন জীবন। অভিযোগ উঠেছিল, বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশির সময় তিনি মোবাইল দু’টি ছাদ থেকে ছুড়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন। দু’দিন ধরে পাম্প চালিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে, কাদা ঘেঁটে মোবাইল দু’টি উদ্ধার করে সিবিআই। পরে আদালতেও বিষয়টি নিয়ে জোর তরজা হয়। বিস্তর জলঘোলা হয় বিধায়কের দুই আইনজীবীর বক্তব্য নিয়েও। এক আইনজীবী বলেছিলেন, ‘‘তল্লাশির সময় জীবনকৃষ্ণের মোবাইলে তাঁর মেয়ের ঘন ঘন ভয়েস কল আসায় বিরক্ত হয়ে বিধায়ক ছাদে উঠে ফোন ছুড়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন।’’ অন্য আইনজীবী আদালতে দাবি করেছিলেন, ‘‘সবটাই সিবিআইয়ের সাজানো ঘটনা। জীবনকৃষ্ণ ফোন পুকুরে ফেলেননি।’’ জীবন নিজেও প্রথম থেকে সে কথাই দাবি করে এসেছেন। বুধবার আলিপুর আদালতেও সেই কথাই বললেন বিধায়ক।
জীবনের দাবি, তিনি পুকুরে মোবাইল ফেলেননি। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি। বিধায়ক বলেন, ‘‘সময় এলেই সব প্রমাণ করে দেব।’’ বিধায়কের এক ঘনিষ্ঠ জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সিবিআই ফোনটা বাজেয়াপ্ত করছে। এক আধিকারিক ফোনটিকে পাশেই রাখছেন। সেখান থেকে অন্য আর এক জন ফোনটি তোলেন। ঘনিষ্ঠের দাবি, ‘‘জীবনকৃষ্ণ যেখানে ছিলেন, সেখান থেকে পুকুরে ফোন ফেলার কোনও সুযোগ ছিল না।’’ যদিও এখনই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি জীবন। বলেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয়। তাই কিছু বলব না।’’
২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল জীবনকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। জামিনের আবেদন নিয়ে তিনি প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে বিধায়কের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তার পরেই জামিন চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জীবন। সুপ্রিম কোর্ট তৃণমূল বিধায়ককে শর্তসাপেক্ষেই জামিন দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকার বন্ডে জামিন পাবেন জীবন। আদালতের নির্দেশ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যেতে পারবেন না। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। আদালতে এই সংক্রান্ত মামলার প্রতিটি শুনানিতে তাঁকে উপস্থিত থাকতে হবে। এই মামলার ক্ষেত্রে কাউকে কোনও হুমকি দেওয়া যাবে না। প্রমাণ লোপাট করা যাবে না। আদালতে তাঁকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy