গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রায় এক দশক আগে সংরক্ষণের দাবিতে পাটিদার সমাজের আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল গুজরাত। লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্যে ক্রমশই বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজে। রাজকোটের বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালার বিরুদ্ধে জাতি অবমাননার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার গান্ধীনগরে রাজ্য বিজেপির দফতরের সামনে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখানোরও চেষ্টা করলেন রাজপুত সংগঠন করণী সেনার সদস্যেরা।
গান্ধীনগরের বিজেপি সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভে অংশ নিতে গিয়েছিলেন করণী সেনার সর্বভারতীয় সভাপতি রাজ শেখাওয়াত। কিন্তু আমদাবাদ বিমানবন্দরে পৌঁছবার পরেই তাঁকে আটক করে পুলিশ। আমদাবাদের সহকারী পুলিশ কমিশনার ভিএন যাদব বলেন, ‘‘রাজ শেখাওয়াত এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিলেন, তিনি গান্ধীনগরে বিজেপির রাজ্য সদর দফতর ‘শ্রী কমলম’-এর সামনে বিক্ষোভ অংশ নিতে যাচ্ছেন। ভোটের আগে অশান্তি এড়াতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁকে আটক করা হয়।’’ যদিও পুলিশের সেই উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়নি। গান্ধীনগর এবং আমদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়। তাঁরা বিজেপির সদর দফতরের সামনে মিছিল করে যাওয়ার চেষ্টা করেন বার বার।
মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি ছিলেন রূপালা। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও করেন। অভিযোগ, সম্প্রতি রূপালা তাঁর নির্বাচনকেন্দ্রে দলিতদের একটি সভায় বলেছিলেন, ‘‘বিদেশি মুঘলরা আমাদের উপর রাজত্ব করেছে। ব্রিটিশরাও করেছে। ওরা আমাদের অত্যাচার করতে ছাড়েনি। কিন্তু রাজপুত মহারাজারা ওদের প্রণাম করতেন এবং ‘রুটি ও বেটি’-র সওদা করতেন। আমাদের রুখী (গুজরাটের দলিত) সম্প্রদায় কিন্তু তাদের ধর্ম পরিবর্তন করেনি বা ব্রিটিশদের সঙ্গে সম্পর্কও করেনি।’’
মুঘল সম্রাটদের পরিবারে রাজপুত রাজকন্যাদের বিবাহের ইতিহাস টেনেই রূপালা ওই কথা বলেন বলে অভিযোগ। মার্চের শেষপর্বে বক্তৃতায় এই ভিডিয়োটি (যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) ছড়িয়ে পড়ে। আর তার পর থেকেই রাজপুতদের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। বিষয়টি বুঝে রূপালা একাধিক বার ক্ষমা চাইলেও তা মানতে নারাজ রাজ্যের রাজপুত নেতারা। তাঁর প্রার্থিপদ বাতিল না করলে চিতোরের রানি পদ্মাবতী এবং তাঁর সহচরীদের অনুকরণে রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজের পাঁচ নারী তাঁদের আত্মসম্মান রক্ষার জন্য ‘জহর’ (আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা) করার হুমকি দিয়েছেন।
শুধু গুজরাত নয়, রাজস্থান, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ উত্তরপ্রদেশেও ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজপুত-ক্ষত্রিয় সংগঠন বিজেপি-বিরোধী প্রচারে নেমেছে। রবিবার উত্তরপ্রদেশের সহারনপুরে মহাপঞ্চায়েত ডেকেছিলেন রাজপুত তথা ক্ষত্রিয় সমাজের বর্ষীয়ানরা। তাতে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা এই সমাজের হাজার হাজার মানুষ। হরিয়ানা, রাজস্থান ও গুজরাত থেকেও রাজপুত-ক্ষত্রিয় প্রতিনিধিরা এসেছিলেন পঞ্চায়েতে। ছিলেন বিভিন্ন কিসান সংগঠনের নেতারা। সেখানে কিসান মজদুর সংগঠনের সভাপতি ও রাজপুত সমাজের বিশিষ্ট নেতা ঠাকুর পুরণ সিংহ খোলাখুলি বিজেপিকে হারাতে বিরোধী শক্তিশালী প্রার্থীকে সমর্থনের ডাক দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy