Advertisement
E-Paper

উত্তরপ্রদেশেও রাজপুত বিক্ষোভ, অস্বস্তিতে বিজেপি

রূপালার প্রার্থী পদ বাতিলের দাবিতে ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমেছেন গুজরাত ও রাজস্থানের ক্ষত্রিয় সমাজ। সড়ক অবরোধ থেকে হরতাল সবই হয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৬
Share
Save

লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মিশন ৪০০’-র বড়সড় বাধা হয়ে উঠে আসছে এমন একটি সম্প্রদায়, এত দিন যারা বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক হিসাবেই পরিচিত ছিল। এঁরা রাজপুত বা ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়। রাজস্থান এই সম্প্রদায়ের আদিভূমি হলেও গুজরাত, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশে, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে এই ক্ষত্রিয়রা যথেষ্ট প্রভাবশালী। গুজরাত, রাজস্থানে ইতিমধ্যে এদের প্রবল রোষের মধ্যে পড়েছে বিজেপি, এ বার তা ছড়াল উত্তরপ্রদেশে।

ক্ষত্রিয় সমাজের বিক্ষোভের বারুদে আগুনের ছোঁয়াটি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা গুজরাতের রাজকোটের বিজেপি প্রার্থী পুরুষোত্তম রূপালা। হিন্দুত্ববাদে শান দিয়ে বিজেপি যখন লোকসভার ভোটে নেমেছে, রূপালা একটি সভায় রাজপুত সমাজকে ‘ঘটিয়া’ বা খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন। কেন এই কথা বলছেন, তার যুক্তি দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, ইতিহাস বলছে রাজপুতেরা বরাবর মোগলদের সঙ্গে গা ঘষাঘষি করে কাটিয়েছেন। এমনকি বাদশাদের সঙ্গে নিজেদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে দিতেও পিছপা হতেন না রাজপুত রাজা-রানারা।

রূপালার প্রার্থী পদ বাতিলের দাবিতে ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমেছেন গুজরাত ও রাজস্থানের ক্ষত্রিয় সমাজ। সড়ক অবরোধ থেকে হরতাল সবই হয়েছে। কিন্তু বিজেপি গা করেনি এই অসন্তোষকে। রূপালা যথারীতি দাবি করেছেন, সংবাদমাধ্যম তাঁর কথা বিকৃত করেছে। কাউকে ছোট করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু তাঁর বক্তৃতার ওই অংশের ভিডিয়ো রাজপুতদের হাতে হাতে ঘুরছে। রবিবার উত্তরপ্রদেশের সহারনপুরে মহাপঞ্চায়েত ডেকেছিলেন রাজপুত তথা ক্ষত্রিয় সমাজের বর্ষীয়ানরা, যাতে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা এই সমাজের হাজার হাজার মানুষ। হরিয়ানা, রাজস্থান ও গুজরাত থেকেও রাজপুতপ্রতিনিধিরা এসেছিলেন পঞ্চায়েতে। ছিলেন বিভিন্ন কিসান সংগঠনের নেতারা, যাঁরা আবার ক্ষত্রিয় সমাজেরও মাথা।

মহাপঞ্চায়েতে ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের নেতারা বলেন, ফি বারে তাঁরা কোনও দ্বিধা না করে ভোট দিয়ে আসেন কমল বা পদ্ম প্রতীকে। কিন্তু এত বছর ক্ষমতায় থেকে বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেন না। গেরুয়া নেতারা যেমন তাঁদের কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করেন না, মন্ত্রিসভার সদস্য বা প্রার্থী তালিকা তৈরির সময়ে রাজপুতদের কথা বিবেচনাতেই রাখেন না। এই ক্ষোভ জানাতে গেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মোগলদের দালাল বলে গালাগাল পাড়েন রাজপুতদের। মোগল বাদশাদের বিরুদ্ধে রাজপুতদের বীর লড়াইয়ের কথা তাঁরা এখন আর মনে রাখেন না। শয়ে শয়ে রাজপুত রমণীর জহর ব্রতের কথা তাঁরা বলেন না। কারণ তাঁরা এখন ক্ষমতায় রয়েছেন। ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন।

কিসান মজদুর সংগঠনের সভাপতি ও রাজপুত সমাজের বিশিষ্ট নেতা ঠাকুর পুরন সিংহ বলেন, “টিকিট বিলির সময়ে বিজেপি আমাদের কথা মনে রাখে না, দলে পদ ও দায়িত্ব বণ্টনের সময়েও না। তার পরেও আমরা ভোট এলেই দল বেঁধে পদ্মে ভোট দিয়ে আসি। কিন্তু এ বার সেটা হচ্ছে না। তা হলে আমরা কাকে সমর্থন করব? যেখানে যে দল বিজেপিকে টক্কর দেবে, আমরা তাদেরই পাশে দাঁড়াব। তাদের ভোট দেব। বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেওয়াটাই এখন আমাদের লক্ষ্য।”

এখানেই শেষ নয়, মীরাটে ১৬ তারিখে ফের মহাপঞ্চায়েতের ডাক দিয়েছে ক্ষত্রিয় সমাজ। ফাঁপরে বিজেপি। নেতারা ভেবেছিলেন এঁদের বোঝালেই রাগঝাঁঝ মিটে যাবে। কিন্তু বিক্ষোভ যে ভাবে ছড়াচ্ছে কপালের ভাঁজ গভীর হচ্ছে তাঁদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Uttar Pradesh Rajput

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}