(বাঁ দিকে) নবীন পট্টনায়েক। নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ওড়িশা জুড়ে কানাঘুষো চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার ভোটের প্রচারে প্রকাশ্যে সেই অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার বারিপদায় বিজেপির জনসভায় তাঁর দাবি, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি প্রধান নবীন পট্টনায়কের স্বাস্থ্যের ‘দ্রুত গুরুতর অবনতি’ হচ্ছে।
এর পরেই মোদীর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘এর নেপথ্যে কোনও চক্রান্ত রয়েছে কি না, সে রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য বিশদে তদন্ত করা প্রয়োজন।’’ সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে বিজেডির একটি জনসভায় নবীন এবং প্রাক্তন আমলা তথা বিজেডি নেতা ভি কার্তিকেয়ন পান্ডিয়ানের একটি ভিডিয়ো (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি) সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর হাত আচমকা কাঁপছে। আর দ্রুত নবীনের সেই হাত ধরে সরিয়ে দিচ্ছেন পান্ডিয়ান।
বারিপদার সভায় ওই প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করে মোদী বলেন, ‘‘নবীনবাবুর প্রত্যেক শুভাকাঙ্ক্ষী এখন উদ্বিগ্ন এবং চিন্তিত। গত এক বছরে তাঁর স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি হয়েছে। যাঁরা বছরের পর বছর ধরে তাঁর ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে যখন আমার দেখা হয় প্রায়শই ওঁর (নবীন) স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা আমাকে বলেন, তিনি নিজে কিছুই করতে পারেন না। এখন প্রশ্ন হল, নবীনবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতির পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কি না। নবীনবাবুর নামে ওড়িশায় পর্দার আড়ালে থেকে ক্ষমতা ভোগ করা গোষ্ঠীর কোনও হাত আছে কি না।’’ এর আগে ওড়িশায় প্রচারে গিয়ে পান্ডিয়ানের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় এবং দফতর দখলের অভিযোগ তুলেছিলেন মোদী। এ বারও তাঁর নিশানায় ওই প্রাক্তন আমলা বলেই বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০০০ ব্যাচের আইএএস পান্ডিয়ান ময়ূরভঞ্জ ও গঞ্জামের মতো ওড়িশার দুই পিছিয়ে পড়া জেলার কালেক্টর (জেলাশাসক) থাকার সময়ে প্রান্তিক জনজাতিদের কল্যাণে কাজ করে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। নজরে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী নবীনের। ২০১১-এ মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ব্যক্তিগত সচিব পদে নিয়োগ করার পরে ১২ বছর ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় (সিএমও)-এর শেষ কথা হয়ে উঠেছিলেন জন্মসূত্রে তামিল, বছর পঞ্চাশের ওই আমলা। অবশেষে আইএএস-এর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে গত কার্তিক পূর্ণিমায় জগন্নাথকে প্রণাম করে শাসকদল বিজেডির সদস্যপদ নেন পান্ডিয়ান।
পান্ডিয়ানকে দলে স্বাগত জানিয়েই তাঁকে পূর্ণমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ‘ফাইভ টি’-র চেয়ারম্যান করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন। ২০৩৬-এ শতবর্ষে পা দিচ্ছে ওড়িশা। তার আগে প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্যকে দেশের প্রথম সারিতে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নবীন তৈরি করেছেন এই ‘ফাইভ টি’। পাঁচটি ‘টি’ হল ট্রান্সপারেন্সি (স্বচ্ছতা), টেকনোলজি (প্রযুক্তি), টিমওয়ার্ক (দল বেঁধে কাজ), টাইম (নিয়মানুবর্তিতা) এবং ট্রান্সফরমেশন (পরিবর্তন)।
পান্ডিয়ানের স্ত্রী ওড়িশা ক্যাডারের আমলা সুজাতা নবীন সরকারের জনপ্রিয়তার আর এক স্তম্ভ ‘মিশন শক্তি’-র প্রধান। মহিলা কল্যাণে সরকারের প্রকল্পগুলিকে সমন্বিত করে পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে এই সংস্থা। আর্থিক অনগ্রসর মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠনের মাধ্যমে বিজেডির মহিলা ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখার ক্ষেত্রে ‘মিশন শক্তি’-র ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy