Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

বামের ভোট ঘরে ফেরার আশায় পাক খাচ্ছে অঙ্ক

সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোজ দত্তের দাবি, কয়লা খনিতে ঘেরা এই এলাকা।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪২
Share: Save:

কালো হিরের এই এলাকা ঘাসফুলের জমানাতেও একটা সময় পর্যন্ত পরিচিত ছিল ‘লাল দুর্গ’ হিসেবে। প্রথমে গত লোকসভা ভোট, তার পরে বিধানসভা ভোটে সেই দুর্গে ধাক্কা লেগেছে। চার দশকের বেশি সময় হাতে রাখা বিধানসভা আসন হাতছাড়া হয়েছে বামের। তবে এ বার লোকসভা ভোটে জামুড়িয়াকে কেন্দ্র করে নতুন আশা দেখছে তারা। কারণ, এ বার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী জাহানারা খান জামুড়িয়ার দু’বারের প্রাক্তন বিধায়ক। বামের এই ভরসার মাঝে অঙ্ক কষছে ঘাসফুল ও পদ্ম, দুই শিবিরও। তৃণমূলের আশা, বিজেপির কাছে হারানো ভোটের কিছুটা বামেরা পুনরুদ্ধার করতে পারলে লাভ তাদের। আবার, এলাকায় তৃণমূলের ‘কোন্দল’ তাদের বাড়তি সুবিধা দেবে বলে আশায় বিজেপি।

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে আসানসোল কেন্দ্রে একমাত্র জামুড়িয়াতেই অল্প ব্যবধানে এগিয়েছিল বামেরা। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ও ২০২২ সালের উপনির্বাচনে তারা তৃতীয় স্থানে চলে যায়। ১৯৭৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই বিধানসভা কেন্দ্র সিপিএমের দখলে ছিল। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে প্রথম বার জেতে তৃণমূল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম গোটা বিধানসভা এলাকায় পঞ্চায়েত স্তরের ১৪টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিজেপি জিতেছে দু’টি আসনে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোট ছাড়া বিজেপি এই কেন্দ্রে কখনও এগোতে পারেনি।

বিধানসভা আসন তৃণমূলের দখলে থাকলেও, তাদের ‘কোন্দল’ বিরোধীদের ভরসা জোগাচ্ছে। জামুড়িয়ার দু’টি ব্লকেই দলের অন্তর্কলহ রয়েছে বলে তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি। নানা নেতাকে বিভিন্ন সময়ে আলাদা ভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করতেও দেখা গিয়েছে। জামুড়িয়া ১ ব্লকে সভাপতি সুব্রত অধিকারীর উপরে চড়াও হয়ে নিগ্রহের অভিযোগে দলেরই কিছু কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি তথা জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিদ্ধার্থ রানার বিরুদ্ধে সমিতিরই এক সদস্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগে সরব হয়েছেন। বিধায়ক হরেরাম সিংহ এলাকায় দলের একাংশের মদতে অবৈধ কয়লা ও বালি কারবার চলার অভিযোগ তুলেছেন। এ সবকেই হাতিয়ার করে বিরোধীরা প্রচার করছে।

সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোজ দত্তের দাবি, কয়লা খনিতে ঘেরা এই এলাকা। খনি বেসরকারিকরণ রুখতে বিজেপি ও তৃণমূলের সাংসদেরা কোনও ভূমিকা নেননি। বেসরকারিকরণের কুফল, এলাকায় তীব্র জলসঙ্কট, অবাধ কয়লা ও বালি চুরি— এ সব নিয়েই প্রচার চলছে। প্রার্থী জাহানারা প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য বিশ্বনাথ যাদব জানান, বামেদের আয়োজিত সভা-মিছিলে তাঁদের কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন। ইন্দিরা গান্ধী কয়লা শিল্প রাষ্ট্রায়ত্তকরণ করে অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর সরকার বেসরকারিকরণ করে বুনিয়াদি অর্থনীতি ভেঙে দিচ্ছে— এই প্রচারে তাঁরা জোর দিচ্ছেন বলে দাবি করেন।

বিজেপির জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রের সহ-আহ্বায়ক গৌতম মণ্ডল আবার জানাচ্ছেন, প্রতিটি মণ্ডল ও শক্তিকেন্দ্র ধরে কর্মিসভায় জোর দেওয়া হচ্ছে। ৩৪ বছরে বামেদের অপশাসন, ১৩ বছরে তৃণমূলের দুর্নীতি তথ্য-সহ প্রচার করা হচ্ছে এবং কেন্দ্রের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরছেন, দাবি করেন তিনি।

বিরোধীদের দাবিকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম। তাঁর দাবি, ‘‘৪৪ বছর পরে বামেদের হাত থেকে এই বিধানসভা কেন্দ্র আমরা দখল করেছি। এর পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, বিরোধীরা এখানে প্রায় অস্তিত্বহীন। আমাদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা লোকসভা ভোটেও বজায় থাকবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 CPIM Jamuria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy