জর্ডন সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ ভাবে ইজ়রায়েলে ঢুকতে গিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন কেরলের এক শ্রমিক। ৪৭ বছরের ওই শ্রমিকের নাম অ্যানি থমাস গ্যাব্রিয়েল পেরেরা। গত মাসের এই ঘটনার তদন্তে এ বার উঠে এল নতুন তথ্য। জানা গেল, থমাসের ইজ়রায়েল-যাত্রার নেপথ্যে ছিল মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরির টোপ! এ ভাবেই মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে তাঁকে বেআইনি পথে বিদেশে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রতারকেরা।
আরও পড়ুন:
বিবিসির একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজের খোঁজেই জর্ডনে গিয়েছিলেন থমাস ও তাঁর শ্যালক এডিসন। জর্ডন সীমান্ত পেরিয়ে বেআইনি ভাবে ইজ়রায়েলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। দু’জনেই তিরুঅনন্তপুরমের থুম্বার বাসিন্দা। ভারতে থাকাকালীন এক ‘এজেন্ট’-এর সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। থমাসদের মোটা টাকা বেতনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করেছিলেন ওই ‘এজেন্ট’। বলা হয়েছিল, এক বার জর্ডনে যেতে পারলেই প্রতি মাসে ৩,৫০,০০০ টাকা বেতন পাবেন তাঁরা। তাতেই রাজি হয়ে যান দুই যুবক। ‘স্বপ্ন পূরণের’ জন্য টাকাও গুনতে হয়েছিল বিস্তর। ভারত ছাড়ার আগে তাঁরা ‘এজেন্ট’কে দু’লক্ষেরও বেশি টাকা দিয়েছিলেন। জর্ডনে পৌঁছোনোর পর আরও ৫৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু অভিযোগ, জর্ডনে পৌঁছোনোর পরেই তাঁদের বলা হয়, সেখানে কোনও চাকরি নেই। পরিবর্তে তাঁদের যেতে হবে প্রতিবেশী দেশ ইজ়রায়েলে!
আরও পড়ুন:
এজেন্টের কথামতো গত ১০ ফেব্রুয়ারি জর্ডন সীমান্ত পেরিয়ে ইজ়রায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করলে জর্ডনের নিরাপত্তাবাহিনী তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাতেই মৃত্যু হয় থমাসের। থমাসের সঙ্গী ৪৩ বছর বয়সি এডিসনও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। সপ্তাহদুয়েক আগে কেরলে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। আম্মানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে থমাসের পরিবারকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। থমাসের মৃতদেহ এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ভারতে পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ জন্য সরকারের কাছে বিশেষ আবেদন জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা শশী তারুর। মৃত শ্রমিকের দেহ তিরুঅনন্তপুরমে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য বিদেশ মন্ত্রক এবং ভারতীয় দূতাবাসকে চিঠিও লিখেছেন তিনি।