সাংবাদিক সম্মেলনে বিমান বসু এবং অধীররঞ্জন চৌধুরী। ছবি: পিটিআই।
২০১৬ এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই ভোটে লড়েছিল বামেরা। কিন্তু ভোটের পর সিপিএম তো বটেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছিল, বামেদের ভোট কংগ্রেসের দিকে গেলেও, কংগ্রেসিদের ভোট বাম-বাক্সে আসেনি। ২০২৪-এর লোকসভায় কী হবে? রবিবার এই প্রশ্নের জবাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে পাশে বসিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, ‘‘আমি প্রত্যাশা করব এ বার কংগ্রেসের ভোট বামেদের দিকে হবে।’’ এই প্রসঙ্গেই বিমান বলেছেন, ‘‘আগে হয়নি মানে এ বার হবে না, তার কোনও মানে নেই। আমিও তো আগে কখনও অধীরের পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করিনি। আজকে করছি।’’
কয়েক সপ্তাহ আগে এই প্রশ্নে অধীর বলেছিলেন, ‘‘সময় বদলায়, সময়ের সঙ্গে ভাবনা বদলায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ভাবনাও বদলেছে। আগে যা হয়েছে, এ বার আর তা হবে না।’’ রবিবার অধীরের সেই কথার সঙ্গে বিমানের সুরও যেন মিলে গেল।
রবিবার বিশেষ কাজে কলকাতায় এসেছিলেন অধীর। আচমকাই সকালে প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকের কথা জানানো হয়েছিল। এ-ও জানানো হয়, ওই সাংবাদিক বৈঠকে থাকবেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানও। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান— দু’জনেই এড়িয়ে গিয়েছেন কেরলে কংগ্রেস এবং সিপিএমের লড়াইয়ের প্রসঙ্গ।
শনিবার কেরলে গিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বামেদের সঙ্গে বিজেপির বোঝাপড়ার অভিযোগ করেছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কেরলের সিপিএম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে তদন্তের আওতায় আনছে না। পাল্টা রাহুলকে ‘আমূল বেবি’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজয়ন। বিমান পোড়খাওয়া রাজনীতিক। তিনি জানতেন, এই প্রশ্ন উঠবেই। তাই আগেভাগেই তিনি বলে রাখেন, ‘‘এক একটি রাজ্যে এক এক রকম বাস্তবতার নিরিখে আসন বোঝাপড়া হয়েছে। আমরা আগেই সেটা জানিয়েছে। তাই সেটা মাথায় রেখেই আপনারা প্রশ্ন করবেন।’’
কেরলে সিপিএম এবং কংগ্রেসের লড়াই যে পর্যায়ে গিয়েছে তাতে আসরে নামতে হয়েছে সীতারাম ইয়েচুরিকেও। সীতারাম বলেছেন, ‘‘রাহুল গান্ধীর কথার ভিত্তিতে যদি বিজয়নের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নামিয়ে দেয় তা হলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক।’’ সীতারামের এই বক্তব্য নিয়ে অধীরকে প্রশ্ন করা হলে তিনিও জানান, কেরলে বাস্তবতা ভিন্ন। এ ছাড়া সর্বত্রই বাম-কংগ্রেস বোঝাপড়া করে লড়ছে। রবিবারের সাংবাদিক বৈঠকে বিমান এ-ও দাবি করেন, ‘‘এ বার দ্বিমুখী ভোট হবে না। লড়াই হবে ত্রিমুখী।’’ অর্থাৎ বিজেপি, তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেস। অধীর এবং বিমান দু’জনেরই দাবি, যা বহু আসনের হিসেবকে ওলটপালট করে দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy