অধীররঞ্জন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
গত সাত দিনে তিন বার তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল। তাঁর খাসতালুক বহরমপুরে পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে শুনতে হয়েছে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। মেজাজ হারিয়ে কখনও তিনি থাপ্পড় মেরেছেন, কখনও সপাটে ধাক্কা। অধীরের ‘গড়’ কি নড়বড়ে? রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বললেন, ‘‘আমার গড় নড়বড়ে নয়। নড়বড়ে হলে আমি বিক্ষোভ দেখাতাম। কিন্তু কেসটা উল্টো হচ্ছে।’’ তিনি কি ছ’বারের সাংসদ হতে পারবেন? অধীর সেই প্রশ্নে চ্যালেঞ্জ নিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে।
রবিবার অধীর বলেন, ‘‘বহরমপুরে আমি হারলে রাজনীতি থেকে ছুট্টি নিয়ে নেব। এত বড় কথা বলে দিলাম আজকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বলতে পারবেন যে, বহরমপুর জিতলে তাঁর জয় বা হারলে তাঁর হার হবে?’’ তৃণমূলনেত্রী প্রতিটি সভাতেই বিজেপির সঙ্গে বাম-কংগ্রেসকে এক বন্ধনীতে ফেলে আক্রমণ শানাচ্ছেন। বাংলায় বাম-কংগ্রেসকে বিজেপির ‘দালাল’ বলেও কটাক্ষ করছেন মমতা। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ‘দিদি’কে নতুন শব্দে বিঁধলেন বহরমপুরের ‘দাদা’। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী বলেন, ‘‘নীতীশ কুমার যেমন পাল্টুকুমার হয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন, তেমন বাংলার দিদিও পাল্টিকুমারী হয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।’’
গোড়ায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমঝোতার কথাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু সেই পর্বে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতারা তৃণমূল সম্পর্কে ‘নরম’ মনোভাব দেখালেও অধীর তৃণমূল-বিরোধিতায় ছিলেন আগ্রাসী। মমতা যখন স্পষ্ট করে দিলেন বাংলায় তাঁর দল একক ভাবে ৪২টি আসনে লড়বে, সেই সময়ে তামাম তৃণমূল সমাজমাধ্যমে প্রচার করেছিল, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া ভেস্তে দেওয়ার এক এবং একমাত্র কান্ডারির নাম অধীর চৌধুরী। রবিবার অধীর বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে মমতার বিরোধ সর্বজনবিদিত। উনি কি কখনও বলেছিলেন, অধীর থাকলে ‘ইন্ডিয়া’য় থাকব না?’’ কথাপ্রসঙ্গেই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ‘বোঝাপড়া’র অভিযোগ তুলেছেন অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘বোঝাপড়া রয়েছে বলেই অনেক ঢক্কানিনাদের পর ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি ওই রকম প্রার্থী দিয়েছে। যাতে খোকাবাবুর অসুবিধা না হয়। এক জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জেলে আর এক জন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালও জেলে। কিন্তু খোকাবাবুকে যাতে জেলে যেতে না হয়, তাই দিদি বোঝাপড়া করে নিয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে ‘বোঝাপড়া’ রয়েছে বলেই বাংলায় আরএসএসের শাখা আজ এত বৃদ্ধি পেয়েছে। অধীর আরও বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলায় একটা বুথেও ওদের ভোট লুট করতে দেব না।’’
রবিবার বিশেষ কাজে কলকাতায় এসেছিলেন অধীর। আচমকাই সকালে প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনের কথা জানানো হয়েছিল। এ-ও জানানো হয়, ওই সাংবাদিক বৈঠকে থাকবেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যাম বিমান বসুও। বিমানকে পাশে নিয়েই তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে লড়াইয়ের ডাক দেন অধীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy