সার কথাটা বলে দিলেন নির্ভয়ার মা— নির্ভয়ার জয় তো হয়েইছে, নির্ভয়ার মতো অপরাধ আর যত জন মেয়ের সঙ্গে হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের জয় হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আসলে প্রত্যেক নারীর জয় হয়েছে, প্রত্যেক নারী বিচার পেয়েছেন, মানবতা বিচার পেয়েছে।
২০১২ সালের সেই ভয়াবহ রাতে যে অভাবনীয় পৈশাচিকতার সাক্ষী হতে হয়েছিল দেশের রাজধানীকে, তা বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ। জানিয়ে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালতও। অপরাধটা যে বিরলের মধ্যে বিরলতম, সে কথা আগেও একাধিক বার শুনেছি আমরা। কিন্তু, এমন অপরাধের সাজা কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে তর্ক কিছুতেই থামছিল না। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় আরও এক বার জোর দিয়ে বলল, এই অপরাধ বিরলতমই এবং এই অপরাধের কোনও ক্ষমা হয় না। সত্যের এই পুনরুচ্চারণ খুব জরুরি ছিল।
বিতর্ক এর পরেও থাকতে পারে। চার ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড হলেই অপরাধ থেমে যাবে? দুর্বৃত্তরা কি এর পর থেকে সত্যিই খুব ভয়ে ভয়ে থাকবে? আরও কোনও নারী কখনও নিগ্রহের শিকার হবেন না তো? আর কোনও বিরল অপরাধের দৃষ্টান্ত তৈরি হবে না তো? এমন গুচ্ছ প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। কোনও প্রশ্নেরই সুনিশ্চিত জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু, তার জন্য আপোসের পথ বেছে নেওয়াও আর সম্ভব নয়। এ পৃথিবীতে সব কিছুরই একটা শেষ সীমা রয়েছে। ক্ষমাশীলতারও। সেই শেষ সীমাটাও যখন লঙ্ঘিত হয়, তখন শুধু আইনের অবমাননা হয় না, মানবতারও চূড়ান্ত হানি হয়। প্রশাসন, আইন বা বিচারের দৃষ্টিভঙ্গি আর বৃহত্তর মানবতার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে কোনও সূক্ষ্ম ভেদরেখা হয়তো রয়েছে। কিন্তু, নির্ভয়া কাণ্ডের মতো অপরাধ সে সব ভেদরেখা নিঃশেষে মুছে দেয়। আইন আর মানবতা তখন একই বিন্দুতে মিলে যায়। সব অপরাধের ক্ষমা হয় না— এ কথা তখন মেনে নিতেই হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy