সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকেরা।
চিঠি এক) ভেলোরে চিকিৎসা করাতে এসে আটকে পড়েছি, বাড়ি ফিরতে চাই
পরিবারের চার সদস্যের সঙ্গে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ১ জানুয়ারি আমি তামিলনাড়ুর ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে (সিএমসি) আসি। কিন্তু লকডাউনের কারণে চিকিৎসা শেষ হওয়া সত্ত্বেও আমরা প্রায় দুই মাস ধরে এখানে আটকে রয়েছি। খাওয়াদাওয়া সমস্যা ছাড়াও আর্থিক ভাবে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছি আমরা। এখানে বেঁচে থাকাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। অতএব মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিবেদন যে, আমাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কিছু একটা করা হোক।
সুদীপ্ত দাস, মুকশিমপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লক, পূর্ব বর্ধমান। মোবাইল নম্বর: ৭৭১৮৫৯২৫৭৮
চিঠি দুই) চেন্নাইতে আটকে রয়েছি, সাহায্য করলে উপকৃত হব
চেন্নাই শহরে কতগুলো ভাল জিনিস দেখলাম। এখানকার মানুষ প্রশাসনকে খুব মান্য করে। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও একবেলা দোকান খোলে। খুব প্রয়োজনে, ছককাটা ঘরে দাঁড়িয়ে এক এক করে জিনিসপত্র কিনতে হয়। প্রতি দিন কর্পোরেশন থেকে এসে দেখে যায় লোকজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে কি না। আশপাশে নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। হ্যান্ড সানিটাইজার রাখা থাকে দোকানে। বেরোনো ও ঢোকার সময় তা লাগাতেই হবে। মাঝে মাঝেই পুলিশি টহল চলছে। সবচেয়ে বড় কথা, আইন অমান্যর ব্যাপারটা এখানে দেখাই যায় না।
আমি এবং আমার স্ত্রী চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে গত ১৫ মার্চ চোখ দেখানোর পর এখানে আটকে পড়েছি। খুবই অসুবিধার মধ্যে রয়েছি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নোডাল অফিসারের কাছে এবং কলকাতা ঠাকুরপুকুর থানাতে ইমেল করেছি। তবে কোনও উত্তর পাইনি। যদি সাহায্য করেন, তা হলে খুব উপকার হবে।
পিনাকী রঞ্জন পাল ও অর্পিতা পালচৌধুরী, মোবাইল নম্বর: ৮৯১০১৬২১০০
আরও পড়ুন: পড়শির কুকুরের সঙ্গে কথা না বলে মানুষ এখন খোঁজ নিচ্ছে প্রতিবেশীর!
চিঠি তিন) কাশ্মীরে এসে লজের ভাড়াও দিতে পারছি না, বাড়ি ফিরতে চাই
কলকাতা থেকে আসার পর গত ৪৫ দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে আটকে পড়েছি আমরা, পরিবারের ছ’জন সদস্য। মহর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে জম্মু তাওয়াইয়ে ‘মা ভবানী লজে’ ঘরবন্দি। আমাদের সঙ্গে আড়াই বছরের একটা বাচ্চা এবং ৬৫ বছরের বৃদ্ধাও রয়েছেন। ছ’জনের বেশির ভাগই মহিলা। খুব হতাশ লাগছে। সঙ্গের সমস্ত টাকাপয়সা প্রায় শেষ। ২৫ মার্চের রিটার্ন টিকিটও ক্যানসেল হয়ে গিয়েছে। লজের ভাড়া দিতে পারছি না। খুব অসহায় লাগছে। পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া, পর্যটক বা তীর্থযাত্রীদের উদ্ধারে কেন্দ্রীয় সরকার যে পারমিটের ব্যবস্থা করেছেন, তাতে নাম রেজিস্টার করাতে চাই। দয়া করে আমাদের উদ্ধার করুন। কেউ আমাদের কথা ভাবে না। না আমাদের রাজ্য সরকার, না এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন।
আমার প্রশ্ন হল, বাচ্চা এবং বয়স্ক মানুষদের নিয়ে আর কত দিন ধরে ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়ে থাকব? তা-ও আবার টাকাপয়সা, খাবারদাবার বা প্রয়োজনীয় সুযোগসুবিধা ছাড়া। বাচ্চাদের পড়াশোনায় খুব ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কি বাড়ি ফেরার প্রয়োজনীতা নেই? যেখানে আটকে রয়েছি, তার ভাড়া কে দেবে? আমাদের কেনই বা পরিযায়ী শ্রমিকদের মতো এক করে দেখা হবে? সব শ্রেণির মানুষেরই তো জীবনযাত্রার নিজস্ব বৈশিষ্ট রয়েছে, তাই না? তাদের প্রত্যেককেই ভিন্ন ভাবে দেখা উচিত। সরকার কেন পর্যটকদের জন্য একটা ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করছেন না? কারণ, হাজার হাজার পর্যটক ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন। ট্রেনের টিকিট কাটার মতো অবস্থায় নেই তাঁরা। অন্তত স্লিপার ক্লাসেও যদি ব্যবস্থা করা যায়! কিন্তু, রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। আমরা এটাও জানি না, কী ভাবে এই অব্যবস্থার মোকাবিলা করব! কী ভাবে আমরা নাম রেজিস্টার করব? কারণ সমস্ত রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি এখনও পর্যন্ত অনলাইনে সেই পোর্টালের ব্যবস্থাই করে উঠতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পোর্টালেও একমুখী লিঙ্ক রয়েছে, তাতে এক্সিট করা যায়। কিন্তু, বাংলার বাইরে আটকে পড়াদের জন্য কোনও লিঙ্ক লেই। নাম রেজিস্টার করতে সাহায্য করুন।
কল্যাণী রায়, ঢাকুরিয়া, কলকাতা। মোবাইল নম্বর: ৯৮৩৬৬৪৯২৬৪ / ৮৫৮৩৮২৯১৮১। ইমেল: kalybabroy@gmail.com
আরও পড়ুন: খাবারের চেয়ে বেশি বিকোচ্ছে টয়লেট পেপার, দেখলাম জার্মানিতে
চিঠি চার) বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফিরতে চাই
বেঙ্গালুরুতে পরিবার নিয়ে এসে আটকে গিয়েছি। আমরা তিন জন বাড়ি ফিরতে চাই।
সুব্রত সিংহ, গ্রাম: চাকই, থানা: নারায়ণগড়, পশ্চিম মেদিনীপুর। মোবাইল নম্বর: ৭৪৮৩১৫৬৭৮২
চিঠি পাঁচ) ভেলোরে আটকে, জয়েন্টের পরীক্ষা কী ভাবে দেব?
বাবার সঙ্গে চিকিৎসা করাতে এসে ভেলোরে আটকে পড়েছি। এ বছরই মেডিক্যাল জয়েন্ট এন্ট্রান্স-এর প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার কথা। তবে সেই পরীক্ষার জন্য আমার সঙ্গে কোনও বইপত্র নেই। ভেলোর থেকে নিজের বাড়িতে ফিরতে চাই। দয়া করে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করুন।
তন্ময় বিশ্বাস, বৈঁচিডাঙা গ্রাম, বাগদা, উত্তর ২৪ পরগনা। মোবাইল নম্বর: ৭৬৯৯৫৪৬৮৪৩।
চিঠি ছয়) হায়দরাবাদে খুব সমস্যায় রয়েছি, বাড়ি ফিরতে সাহায্য করুন
আমি পেশায় শ্রমিক। হায়দরাবাদের সিদ্দিপেট জেলার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করি। এখানে দীর্ঘ দিন ধরে খুব সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আপনাদের সকলের কাছে আমার বিনীত নিবেদন, আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। আমার বাড়ি ফেরা খুব জরুরি। এখানে কোনও রকম সাহায্য পাচ্ছি না। দয়া করে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করুন।
সুকদেব চৌধুরী, পিড়রাবাইদ, শালতোড়া ব্লক, বাঁকুড়া। মোবাইল নম্বর: ৯১১৩০২৫৫৮৪।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy