ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ছবি: সংগৃহীত।
বাঘাযতীনে হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি নিয়ে বিতর্ক চলছেই। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতির দুপুরে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ববি বলেন, ‘‘গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি তোলার চেষ্টা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিপত্তি।’’ পাশাপাশি, ফিরহাদ জানিয়েছেন, যাঁরা ওই বহুতলে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন, তাঁদের পাশে কলকাতা পুরসভা তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকার রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের যথাযথ সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের শুরু হয়েছে বাঘাযতীনে হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি ভাঙার কাজ। দুপুর ১টা নাগাদ বাঘাযতীনে যান ফিরহাদ। ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেখানেই মেয়র জানান, ওই বহুতলের ফ্ল্যাটমালিকদের পাশে যথাসাধ্য থাকার চেষ্টা করবে পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রী চান, সাধারণ মানুষের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। পাশাপাশি, দুর্ঘটনার জন্য হরিয়ানার সংস্থাকেও দুষেছেন ববি। তাঁর দাবি, গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে বাড়ি ‘লিফ্টিং’-এর কাজ হয়েছে। ফ্ল্যাটবাড়ি তোলার আগে মাটি পরীক্ষা করেও দেখা হয়নি।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মাসখানেক আগেই বাঘাযতীনের ওই ফ্ল্যাটবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়েছিল বাড়িটি। গত ১৭ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল বাড়ি ‘সোজা করার’ প্রক্রিয়া। সেই সময় ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর ১০-১২ আগে জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি ভাবে ওই বহুতল নির্মাণ করা হয়েছিল। চারতলা বাড়ি নির্মাণের অনুমোদনও ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। অবশ্য শুরু থেকেই এই দায় বাম সরকারের উপরে চাপিয়েছেন ফিরহাদ। পুরমন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘কলোনি এলাকায় কোনও বাড়ির প্ল্যান থাকে না। নিজেরাই কমিটি তৈরি করে বাড়ি করে নেওয়া হত। আর বাম আমলে কোনও বাড়ির ক্ষেত্রেই প্ল্যানিং হত না। সেই সময়ে অনলাইনে কিছু হত না। ফাইলে সব নথি জমা থাকত। এই বাড়ির ফাইল এখনও খুঁজেই পাওয়া যায়নি!’’
ফিরহাদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই ওই হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। বাড়ি ভাঙার কাজে যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। এক এক ধাপে এক একটা তলা ভাঙা হচ্ছে। তার আগে ভিতরের জিনিসপত্রও বার করে আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ। ওই এলাকার আশপাশের বাসিন্দাদের যাতে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে বলেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনে ‘শুভ অ্যাপার্টমেন্ট’ নামে ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ে। তবে বাসিন্দাদের কেউ সেখানে ছিলেন না, তাই বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং পুরসভার আবাসন বিভাগের আধিকারিকেরা। কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্তও এলাকায় যান। রাতেই এ নিয়ে এফআইআর দায়ের হয় নেতাজিনগর থানায়। শুরু হয় বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া। ঘটনার পর থেকেই ওই বহুতলের প্রোমোটার সুভাষ রায় ফেরার। এখনও তাঁর খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy