Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Editorial NEws

অবিশ্বাস্য কূটনৈতিক ব্যর্থতায় ইসলামাবাদ

পাকিস্তানে বড়সড় হামলার ছক কষছে ভারত এবং সে হামলা ১৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে হতে পারে বলে তাঁদের কাছে খবর রয়েছে গোয়েন্দা সূত্রে, পাক বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য এ রকমই।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:২৬
Share: Save:

অসামান্য কূটনৈতিক অপরিপক্কতার পরিচয় দিল পাকিস্তান। চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নমুনাও স্থাপন করল। পুলওয়ামা কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তৈরি হওয়া প্রবল সঙ্কট যখন প্রশমিত হয়ে আসছিল, ঠিক তখনই এক কাণ্ডজ্ঞানহীন সাংবাদিক সম্মেলন করে বসলেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। ভারতের দেওয়া জবাব আন্তর্জাতিক মহলের সামনে আরও অস্বস্তিতে ফেলল পাকিস্তানকে।

সাংবাদিক সম্মেলন করে কী বলেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী? তিনি ভারতের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। পাকিস্তানে বড়সড় হামলার ছক কষছে ভারত এবং সে হামলা ১৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে হতে পারে বলে তাঁদের কাছে খবর রয়েছে গোয়েন্দা সূত্রে, পাক বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য এ রকমই।

ইসলামাবাদের এই অভিযোগের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের তরফ থেকে খুব স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে যে, পাকিস্তানে হামলার ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত তত্ত্ব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শুধু এটুকু বলেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক থামেনি। এই গুরুতর অভিযোগ পাকিস্তান যে ভঙ্গিতে বা পদ্ধতিতে সামনে আনল, তার মারাত্মক ত্রুটিটাও ভারত ধরিয়ে দিয়েছে। প্রথমত, পাকিস্তান যদি সত্যিই গোয়েন্দা সূত্রে কোনও সম্ভাব্য হামলার খবর পেয়ে থাকে, তা হলে সর্বাগ্রে কূটনৈতিক পথে এগনো উচিত ছিল এবং সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ কথা বলার আগে কূটনৈতিক পথ ধরে ভারত সরকারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা উচিত ছিল। দ্বিতীয়ত, বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে তুলে ধরার জন্যও সাংবাদিক সম্মেলনটা কোনও পন্থা নয়। ভারতের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে যে সব দেশকে অবহিত করতে চাইছিল পাকিস্তান, সেই সব দেশের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে আলাপ-আলোচনা চালানো উচিত ছিল ইসলামাবাদের। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এমন গুরুতর অবিযোগ তোলাটা কোনও মান্য পন্থা তো নয়ই, অপরিণত কূটনীতির নিদর্শনও।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী এক সাক্ষাত্কারে দাবি করেছেন যে, শান্তির উদ্যোগ নিয়ে প্রথম পদক্ষেপটা তিনিই করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই তিনি তত্কালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, মনে করিয়েছেন মোদী। কিন্তু পাকিস্তানের আচরণে কি কোনও পরিবর্তন আনতে পারল সেই সৌজন্য? ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তুলে ধরা এই প্রশ্ন আন্তর্জাতিক মহলের সামনেও পাকিস্তানের অস্বস্তি বহু গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

আরও পড়ুন: ফের অভিযানের ছক কষছে দিল্লি, দাবি কুরেশির

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ফের হামলা চালাবে ভারত! কুরেশির দাবি ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও হাস্যকর’, পাল্টা নয়াদিল্লির​

এত অপরিণত পদক্ষেপ পাক বিদেশমন্ত্রক কী ভাবে করল, তা ভেবে যত্পরনাস্তি বিস্মিত হতে হচ্ছে। পাকিস্তান আদৌ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা চায় কি না, সে প্রশ্নও তুলে দিয়েছে এই কাণ্ডজ্ঞানহীন সাংবাদিক সম্মেলন। পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকে শুরু হওয়া টানাপড়েনে ভারত বার বারই কূটনৈতিক পরিণতমনস্কতার পরিচয় তো দিয়েইছে। পাকিস্তানের অপরিণত পদক্ষেপ আরও এক বার ভারতকে কূটনৈতিক যুদ্ধে সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে দিল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE