মৎস্যজীবীর দেহ নিয়ে ফেরা। নিজস্ব চিত্র
বাঘের সঙ্গে লড়াই করেও শেষরক্ষা হল না।
বাঘের মুখ থেকে মৎস্যজীবীকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই মারা যান ওই মৎস্যজীবী। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের পীরখালি জঙ্গলের কাছে লেবুখালি খালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মধুসূদন মণ্ডল (৪২)। বাড়ি গোসাবার সত্যনারায়ণপুরে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে ডিঙি নৌকা নিয়ে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন গোসাবার সত্যনারায়ণপুরের বাসিন্দা বিমল মণ্ডল ও তাঁর দুই সঙ্গী সুপদ বরকন্দাজ, মধুসূদন মণ্ডল। সকলে ঠিক করেন, পীরখালি জঙ্গলের কাছে লেবুখালি খালে কাঁকড়া ধরা হবে। নৌকো নোঙর করা করা হয়।
হঠাৎ নৌকো দুলে উঠল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাঘে আক্রমণ করে মধুসূদনকে। মুখে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সে সময়ে বিমলরা নৌকোয় থাকা বৈঠা-লাঠি নিয়ে বাঘের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাকিরা। বাঘে-মানুষের টানাটানি চলে। সকলে নৌকো থেকে নদীতে পড়ে যান। লাঠির ঘা খেয়ে শেষমেশ বাঘ মধুসূদনকে ছেড়ে জঙ্গলের দিকে পালায়। সুপদ ও বিমল আহত সঙ্গীকে নৌকোয় তুলে গোসাবায় আসেন।
সঙ্গীরা জানিয়েছেন, যন্ত্রণায় ছটফয় করছিলেন মধুসূদন। গা ভেসে যাচ্ছিল রক্তে। এক সময়ে জ্ঢান হারান ওই মৎস্যজীবী। শ্বাস-প্রশ্বাসও বন্ধ হয়ে যায়। গোসাবা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মধুসূদনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের ফিল্ড ডিরেক্টর অনিন্দ্য গুহঠাকুর বলেন, ‘‘বাঘের আক্রমণে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যুর ঘটনার খবর শুনেছি। ওঁদের কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল কিনা, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ মধুসূদনের স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার। তিনিই সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। কোজাগরী লক্ষ্মী পুর্ণিমার রাতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর বাড়িতে অন্ধকার নেমে এল। স্ত্রী শোভা বলেন, ‘‘আমার সব শেষ হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy