গান্ধী
কানাইলাল দত্ত
৪৫০.০০
কমলিনী (পরি: দে’জ পাবলিশিং)
স্বাধীনতা ও দেশভাগের অব্যবহিতে সাম্প্রদায়িক অসম্প্রীতিতে যখন আচ্ছন্ন গোটা ভারতবর্ষ, তখন গাঁধীজি জীবনের শেষ অনশন শুরু করেন। ১৩ জানুয়ারি ১৯৪৮, তখন তাঁর বয়স ৭৮ বছর ৩ মাস ১১ দিন। সকলেই আশঙ্কিত হয়ে পড়েন। গাঁধীজি জানিয়েছিলেন, ‘‘মানুষ হিসাবে সকল রকম উদ্যোগের পর আমি যখন আমার অসহায়তা উপলব্ধি করি তখনই আমি ঈশ্বরের কোলে মাথা রাখি।’’ ১২ জানুয়ারির প্রার্থনাসভাতেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, সারা দেশের উন্মত্ততা বন্ধের প্রার্থনা নিয়ে নিজের জীবনান্তকাল পর্যন্ত অনশন করবেন। বলেছিলেন ‘‘না করে পারছি না বলেই আমি অনশন করছি।... মরতে যদি হয় আমাকে শান্তিতে মরতে দিন। আমি জানি সেই শান্তি আমার ধ্রুব সম্পদ। ভারতবর্ষে হিন্দু, শিখ ও মুসলমান ধর্মের বিনষ্টির নিরুপায় সাক্ষী থাকা অপেক্ষা আমার মরাই ভালো। মৃত্যুই আমাকে গৌরবময় মুক্তি দান করবে।... এই অনশন আত্মশুদ্ধির উপায়স্বরূপ।’’
আসলে স্বাধীনতার অল্প কিছু দিন আগেই ১৯৪৭-এ তিনি যে সঙ্কল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা ঠিকমতো বাস্তবায়িত না হতে দেখেই তাঁর এই অনশনব্রত। তিনি বলেছিলেন: স্বাধীন ভারত হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হবে না, এটি হবে ভারত রাষ্ট্র। সরকার জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত হবে, কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়ের দ্বারা নয়। ধর্ম একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার, রাজনীতিতে ধর্মের কোনও স্থান হবে না। রাষ্ট্রেরও ধর্মে কোনও মাথা গলানোর দরকার নেই। ভারতবর্ষের মতো বিশাল দেশ, যেখানে নানা ধর্ম ও বিশ্বাসের লোকের সহাবস্থান, সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা ব্যতিরেকে জাতীয়তাবাদ সম্ভব নয়।
মোহনদাস
সম্পাদক: নন্দগোপাল পাত্র
১৫০.০০
কবিতিকা (পরি: দে বুক)
গাঁধীজির জীবন ও কর্মের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত যে তিনটি বিষয়, অনশন, কারাবাস ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, তা নিয়েই তথ্যে-বিশ্লেষণে ঋদ্ধ কানাইলাল দত্তের এই বইটি। গ্রন্থটি তাঁরই চারটি গাঁধী-সংক্রান্ত পুস্তকের (গান্ধী জীবনকথা, গান্ধীজির অনশন, গান্ধীজির জেল-জীবন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সন্ধানে মহাত্মা গান্ধী) সন্নিবেশ। খুলনায় জন্মানো এই মানুষটি (১৯২৩-২০১০) ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন গাঁধী-অনুরাগী, কিশোর বয়স থেকেই সমাজসেবায় তাঁর আত্মনিয়োগ ও পরিধানে খদ্দর। নিজের সাদামাটা জীবনের মতোই সহজ অনাড়ম্বর তাঁর গদ্য।
দীর্ঘ দেড় শতক অতিক্রান্ত হতে চলেছে, আজও গাঁধীজি পরিবেশ, সমাজ, রাজনীতি, শিক্ষা, অর্থনীতি— আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমান প্রাসঙ্গিক। জাতীয় নেতা হিসেবে তিনি পৃথিবীর ইতিহাসেই বিরল, মার্টিন লুথার কিং নেলসন ম্যান্ডেলা আব্রাহাম লিঙ্কনের মতোই। তাঁকে নিয়ে চর্চা দুনিয়াব্যাপী, শুধুমাত্র বাংলাতেই বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে। আলোচ্য সঙ্কলনটি সেই সম্ভারেই সাম্প্রতিক সংযোজন। দীঘা দেবেন্দ্রলাল জগবন্ধু শিক্ষাসদনের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবর্ষের উদ্যাপন কমিটি গাঁধীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত ‘‘সেমিনারে মাননীয় বক্তাদের বক্তব্যসমূহ এবং প্রাসঙ্গিক কয়েকটি লেখা’’ গ্রন্থবদ্ধ করল। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ক্রমবর্ধমান হিংস্রতার বিপরীতে গাঁধীজির অহিংস কল্যাণকর ভাবনা পৌঁছে দিতেই এই গ্রন্থপ্রয়াস। প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়-কৃত গাঁধী-বিষয়ক বাংলা বইয়ের একটি তালিকা আছে এতে। গাঁধীজির জীবনপঞ্জির সঙ্গে তাঁর পরিবেশ চিন্তা, বিজ্ঞানমনস্কতা, স্বরাজ ভাবনা, স্বাস্থ্য চিন্তা, আত্মশক্তির নানান অনুষঙ্গ নিয়ে আলোচনা। পরিশিষ্টে প্রত্যক্ষদর্শী রাধাগোবিন্দ বিশালের লেখা ‘চিন্তায় ও কাজে একনিষ্ঠ গান্ধিজি’। বিবিধ আলোকচিত্রে বিভিন্ন বয়সে গাঁধীজির কর্মময় জীবনের চমৎকার কিছু মুহূর্ত ধরা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy