—প্রতীকী চিত্র।
নব্বই দশকের কবি অগ্নি রায় পেশায় সাংবাদিক। তজ্জনিত নিরাবেগ দৃষ্টি ও দেশ-বিদেশের অনুপুঙ্খ অভিজ্ঞতা তাঁর কবিতায় সংহত রূপ ধারণ করেছে। নব্বইয়ের যে মূল লক্ষণ— আত্মপর বিচ্ছিন্নতা, অনিশ্চয়তা, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কবির মায়াময় স্মৃতিকাতরতা ও প্রেমের নির্যাস। শব্দ-কৃপণ কবির একটা করে শব্দ বা বাক্যের মধ্যে লুকিয়ে আছে অনন্ত ভাবনার সম্ভাবনা। কবি শৈশব-কৈশোরের, ‘গ্রীষ্মের ছুটি’, ‘গ্রীষ্মের গান’, ‘ক্রিকেট আড্ডা’, ‘সাইকেল কথা’, ‘রবীন্দ্র সংগীত’ পেরিয়ে যৌবনের ‘তামাকপ্রবণ রাতে কানাঘুষো কথা’, ‘মোরে বারে বারে ফিরালে’, ‘খোঁয়াড়ি প্রবণ ভোরে’ পৌঁছে যান। পাঠক তাঁর ‘ব্যক্তিগত মেলা ফেরত ছায়া’, ইচ্ছে দোল থেকে অনায়াসে জাম্পকাটে ঢুকে যাবেন ‘হাইওয়ে’, ‘ইস্তাম্বুল, ‘হাথরস একটি গ্রামের নাম’ কবিতায়। স্মৃতিকাতরতা কবির অন্যতম ভরকেন্দ্র, তা ‘মায়ের বাসনধ্বনি’ পেরিয়ে অনিবার্য দেশভাগে পৌঁছে যায়। “ট্রাঙ্কে জমা ছিল তোমার দেশভাগ/সীমানা টপকে যায় উই কথায়।” পিতৃমাতৃপুরুষের ‘উদ্বাস্তু এই ভিটেমাটি’ বার বার ফিরে এসেছে। অন্য দিকে, প্রেম তাঁর লেখায় বিরহের নামান্তর। “ভালোবাসা একা ঘরে বেঁচে থাকে রোজ/ বাতিল সম্পর্কের মতো।” আর এই বিরহ মিশে যায় মৃত্যুমুখী পথে। তাই আলো-ঝলমলানো পানশালাময় পার্ক স্ট্রিট তাঁকে খোঁয়াড়ির উল্টো পিঠও দেখায়। ‘কবরে পিঠ দিয়ে বসছে পার্ক স্টিট’, আর সেখানে ‘কফিনে ফেরানো মুখ’ দেখে মনে হয় “মৃত্যু যেন ছিল চড়ুইয়ের প্রায়... ফুরুৎ শব্দটুকু রেখে সে উড়ে যায়।” শব্দের উপর আধিপত্য ও অতিসচেতনতা কবিতাগুলিকে উচ্চকিত করেনি কোথাও। “আমার সকল নিয়ে বসে আছি তবু শেষ মেট্রো পৌঁছায় না নির্জন স্টেশনে শুধু কালান্তক নির্জনতা।” এই নিঃসঙ্গতার বোধ তার কবিতার নাগরিক স্মার্টনেসকে ভিতর থেকে ভেঙে দিয়েছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা
অগ্নি রায়
২৫০.০০
সিগনেট প্রেস
১৮৯১। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন সাজাদপুরে। ভাত খান না তখন। স্ত্রীকে লিখছেন, “আটার রুটি যে ভাতের চতুর্গুণ খাদ্য তা এদের কিছুতেই ধারণা হয় না।”— স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর (পিতৃগৃহের নাম, ভবতারিণী) সঙ্গে কবির সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম ‘চর্চিত-আখ্যান’ তৈরির অপচেষ্টা হলেও দু’জনের সমীকরণটি দাম্পত্যের সহজ মিঠেকড়া সূত্র মেনেই। তাই প্রথম পর্বেই বাসরে স্ত্রীর দিকে চেয়ে চেয়ে কবি গেয়ে উঠতে পারেন, ‘আ মরি লাবণ্যময়ী...’ আবার কখনও অসুস্থ স্ত্রীর শয্যাপাশে বসে টানা দু’মাস সেবাও করে চলেন নিরন্তর। এই স্বাভাবিক সম্পর্কেরই আখ্যান আলোচ্য বইটিতে। ১৮৮৩-তে বিয়ের পরে থেকে মৃণালিনীর মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি দাম্পত্য-বর্ষ ধরে দু’জনের সম্পর্ক কোন খাতে বয়েছে, তারই নিবিড় ধারাবিবরণী দিয়েছেন লেখক। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রতিটি বছরে সম্পৃক্ত কবির সৃষ্টিপ্রবাহেরও পরিচয়। সামগ্রিক ভাবে বইটি থেকে কবি ও মৃণালিনীর বিয়ে, দাম্পত্য-প্রেম, চিঠিপত্র, বিরহ সব কিছুই ধরা পড়েছে। মৃণালিনীর অকালমৃত্যু-উত্তর রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিমানসকে বুঝতেও সাহায্য করে এই বই। তবে বইটির প্রধান উপজীব্য মৃণালিনী ও তাঁর জীবন। বঙ্গবিদ্যাচর্চায় মৃণালিনীকে নিয়ে আলোচনা ততটা নেই। এই বই সেই সূত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস।
কবিপ্রিয়ার ঘর-সংসার এবং...
আশিস সরকার
৭৫০.০০
নান্দনিক
লেখকের সৃষ্ট চরিত্র ড. ব্রহ্ম ঠাকুর ‘গোয়েন্দা’ হিসেবে ইতিমধ্যেই দু’টি কল্পকাহিনিতে রহস্যের কিনারা করেছেন। অনামিকা বলে ডাকতে পারি কি তোমায় এবং ব্রহ্ম ঠাকুর প্লাস টু-র পরে এটি রূপম ইসলামের লেখা তৃতীয় উপন্যাস। এই উপন্যাসেও সঙ্গে আছেন এরিক দত্ত, বিলি গিলচার ও কিশিমোতো। এ বারের প্রেক্ষাপট আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ; ব্রহ্মের এ বারের অ্যাডভেঞ্চারের নতুন পাত্র-পাত্রী পোর্ট ব্লেয়ারের অ্যানথ্রোপলজিক্যাল মিউজ়িয়মের কিউরেটর প্রফেসর লতিকা এম সুব্রহ্মণ্যম আর ভবাদা, ‘বাংলা ছবির ট্রেন্ডসেটিং পরিচালক ভবতোষ লাহিড়ী’। উপন্যাসের শুরুতে এক দিকে ব্রহ্ম, এরিক, বিলি ও কিশিমোতো আন্দামানের ‘পশ্চিমি দ্বীপ’-এ নামছেন, অন্য দিকে সাংবাদিক মুকুন্দ অবস্থী বছর দুয়েক আগে খুন হয়ে-যাওয়া রকস্টার বান্টি ঘোষালের কথা ভাবছেন, আর ভবাদা তাঁর নতুন সিনেমা পলাতক ২-এর স্ক্রিপ্ট হিরো আশ্চর্যকে দিচ্ছেন। এ-হেন স্থান-কাল-পাত্র নিয়ে বয়ে চলে আখ্যান। ব্রহ্মের আগের দুই কীর্তির কথা না জেনে এই পর্বের স্বাদ পাওয়া যাবে কি না, গোড়ায় এই ধন্দ জাগলেও অচিরেই ঝরঝরে ভাষা ও বর্ণনায় এগিয়ে চলে প্লট। ছেঁড়া-ছেঁড়া কবিতা বাড়তি প্রাপ্তি, কবি-গীতিকার রূপমকে মনে করায়। ব্রহ্ম ঠাকুর ঘুমিয়ে পড়ার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পরের বার ‘হিমলার ডি লরেন্সের ইন্টারেস্টিং গল্প’ শোনাবেন।
শব্দ ব্রহ্ম দ্রুম
রূপম ইসলাম
৪০০.০০
আনন্দ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy