Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প

নিয়মকানুন খতিয়ে দেখতে উপদেষ্টা নিয়োগ রাজ্যের

একেই বাজার নেই। তার সঙ্গে দোসর মান্ধাতা আমলের নিয়মকানুন। এই দু’য়ের সাঁড়িশি চাপে নাভিশ্বাস দশা রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের। তাই ওই শিল্পের জন্য চালু আইন ও নিয়মের বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে এ বার উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি-কে নিয়োগ করেছে রাজ্য। দফতরের আশা, অক্টোবরের মধ্যেই তাদের কাছে সেই সম্পর্কিত রিপোর্ট পেশ করবে উপদেষ্টা সংস্থাটি।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
Share: Save:

একেই বাজার নেই। তার সঙ্গে দোসর মান্ধাতা আমলের নিয়মকানুন। এই দু’য়ের সাঁড়িশি চাপে নাভিশ্বাস দশা রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের। তাই ওই শিল্পের জন্য চালু আইন ও নিয়মের বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে এ বার উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি-কে নিয়োগ করেছে রাজ্য। দফতরের আশা, অক্টোবরের মধ্যেই তাদের কাছে সেই সম্পর্কিত রিপোর্ট পেশ করবে উপদেষ্টা সংস্থাটি।

ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, তাদের জন্য চালু অনেক আইন আর নিয়মই আজকের দুনিয়ায় অচল। অথচ তা মানতে গিয়ে সমস্যার বাড়তি বোঝা চাপছে এই শিল্পের ঘাড়ে। ফলে আরও বেশি করে ঘনীভূত হচ্ছে সঙ্কট।

যেমন, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংগঠন ফেডারেশন অব স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজের (ফসমি) প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের দাবি, কারখানা (ফ্যাক্টরি)-আইনে বাড়তি সময় কাজের (ওভারটাইম) জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে নোটিস দেওয়ার নিয়ম চালু হয়। কিন্তু আজকের বাজারে, এ ভাবে কাজ চালানো সম্ভব নয়। বিশেষত ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের পক্ষে।

আবার সংস্থার উৎপাদন থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজের খতিয়ান নানা সরকারি দফতরে আালাদা ভাবে দিতে হয়। কিন্তু শিল্পমহলের অভিযোগ, এতে হয়রানি বাড়ে। এর বদলে বরং একটি দফতরে তা জমা দেওয়ার নিয়ম চালু হলে, কিছুটা সুবিধা হয় তাদের। সে ক্ষেত্রে ওই দফতরই সেই তথ্য পাঠিয়ে দিতে পারে বাকি সব সংশ্লিষ্ট দফতরে। পাশাপাশি, শপ অ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্ট আইনেও এক সময় যা যা নিয়ম ছিল, তার অনেকগুলিই আজ অপ্রাসঙ্গিক।

আজকের দিনে অপ্রাসঙ্গিক এমন নিয়মের আরও উদাহরণ তুলে ধরছে ছোট-মাঝারি শিল্প। যেমন, বিভিন্ন লাইসেন্স পাওয়ার সময় সংস্থাকে কারখানার নক্শা জমা দিতে হয় নানা দফতরে। কিন্তু সেই নক্শার মাপকাঠি (স্কেল) এক-এক দফতরে এক-এক রকম হওয়ায়, সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ বিশ্বনাথবাবুর।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ফসমি-র বার্ষিক সভার ফাঁকে সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব রাজীব সিংহ জানান, অক্টোবরের মধ্যেই উপদেষ্টা সংস্থাটি রিপোর্ট দেবে বলে তাঁরা আশাবাদী। তা হাতে পেলেই অন্য যে সব দফতর এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে।

এ ক্ষেত্রে উপদেষ্টা সংস্থার কাজ কী?

দফতর সূত্রে খবর, এখন এই শিল্পের জন্য প্রায় ৭০টি আইন আছে। সমীক্ষায় কে পি এম জি-র কাজের ক্ষেত্রগুলি হল

• নতুন, চালু ও বন্ধ ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প সংস্থার জন্য প্রচলিত আইন, নিয়ম, নির্দেশ, বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদির নথিভুক্তি। • এর মধ্যে কোনগুলি আজকের বাজারে অবাস্তব, অপ্রাসঙ্গিক বা বাতিলযোগ্য, তা চিহ্নিত করা। • আইন, নিয়ম ইত্যাদি সরল করতে সুপারিশ। • চালু আইনের কোনওটির সঙ্গে আর কোনও আইনের মিল আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা। • বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনপত্রের বাস্তবতা খতিয়ে দেখা। • নতুন শিল্প গড়তে পরপর কী কী আবেদনপত্র জমা দিতে হয়, তার তালিকা তৈরি ইত্যাদি।

এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সমীক্ষার সময় সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলির পাশাপাশি শিল্প সংগঠনগুলির সঙ্গেও আলোচনায় বসবে উপদেষ্টা সংস্থাটি।

অন্য বিষয়গুলি:

Micro, small and medium industries debopriya sengupta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE