রাজ্যে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রকল্প ফের চালু করছে টেক মহীন্দ্রা।
বানতলা বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে (সেজ) নিজেদের ক্যাম্পাস তৈরির কাজ শুরু করছে ৩০০ কোটি ডলারের এই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, গত মাসে ওয়েবেল এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। সেজ গড়তে বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জিও জানিয়েছে তারা।
বানতলা বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে ১২ একর জমি বাজার দরে কিনেছিল টেক মহীন্দ্রা। প্রতি একরের দাম দিয়েছিল ৮০ লক্ষ টাকা। ক্যাম্পাস তৈরির কাজ শুরুর কথা ছিল ২০০৯ সালেই। পরিকল্পনা ছিল তিন হাজার কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করার। সেই অনুযায়ী নির্মাণও শুরু হয়। কিন্তু দূষণের জেরে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে, মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় সেই নির্মাণ কাজ। ফলে প্রায় ৪০ কোটি খরচের পরেও প্রকল্প এগোয়নি।
এর পর এই প্রকল্প নিয়ে আগ্রহ এতটাই তলানিতে ঠেকেছিল যে, অর্ধেক জমি ছেড়ে দিতে চেয়েছিল টেক মহীন্দ্রা। গত বছর বিষয়টি রাজ্যকে মৌখিক ভাবে জানিয়েওছিল তারা। কেনা দামেই জমি ফেরত দিতে রাজি ছিল সংস্থাটি। কিন্তু এখন সেই ভাবনা থেকে তারা সরে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের খবর। রাজারহাট ও সল্টলেকে অফিস রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সম্প্রসারণের জন্য নিজেদের ক্যাম্পাস তৈরিতে আগ্রহী তারা। এ নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি সংস্থা কর্তৃপক্ষ।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের অনেকে মনে করেন, সত্যম কম্পিউটার কেনার পর টেক মহীন্দ্রার নজর অন্য দিকে ঘুরে যায়। যে কারণে গত বছরের মার্চে তারা জানিয়েছিল যে, বানতলা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই। কিন্তু এখন সেই অবস্থান বদলেছে।
সংস্থা সূত্রে খবর, দূষণের সমস্যা না-থাকলে প্রকল্প শুরু হত অনেক আগেই। আবার সেই সমস্যা যখন কিছুটা মিটল, তখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে বাজার ও ব্যবসার পরিস্থিতি। আর এই সব কিছুর ফলেই তখন টেক মহীন্দ্রার পরিকল্পনা-মানচিত্র থেকে সরে গিয়েছিল রাজ্য।
এ রাজ্যে এখন নতুন করে সেজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ সেজ-এর বিরুদ্ধে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান বার বারই স্পষ্ট করেছে শাসক দল। এই পরিস্থিতিতে বানতলা সেজ-এ জমির সদ্ব্যবহার করলে সংস্থাই আখেরে লাভবান হবে বলে মনে করছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহল। কারণ, ৮৭ হাজারের বেশি কর্মীর সংস্থা টেক মহীন্দ্রার নজরে রয়েছে এ রাজ্যের দক্ষ মানবসম্পদ।
উল্লেখ্য, ১২০ একর জমিতে তৈরি কলকাতা আইটি পার্কে ১৮টি সংস্থা জমি নিয়েছিল। তার মধ্যে ছিল কগনিজ্যান্ট, পাটনি (পরে আই-গেট অধিগ্রহণ করে) ও টেক মহীন্দ্রার মতো প্রথম সারির তিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। দূষণ সমস্যা ও পরিকাঠামোর অভাব সামলে দেরিতে হলেও ক্যাম্পাস চালু করেছে কগনিজ্যান্ট। কিন্তু জমি কেনার পরে কাজ শুরু করতে না-পারায় বাকি দুই সংস্থার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা থেকেই বাদ পড়ে গিয়েছিল বানতলা। রাজ্য সরকারি সূত্রে খবর, হালে টেক মহীন্দ্রা আগ্রহ দেখালেও জমি নিয়ে এখনও সাড়াশব্দ করেনি আই-গেট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy