স্বাগত: বিশ্ব ব্যাঙ্কের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিভা-র সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন নোদী। ইন্ডিয়া’জ বিজনেস রিফর্মসের মঞ্চে। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পূর্তিতে নতুন ভারতের স্বপ্ন প্রায় নিয়ম করে ফেরি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সকলের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছনো থেকে শুরু করে দেশ থেকে দারিদ্র বিদায়— সমস্ত কিছুর জন্য ২০২২ সালকেই পাখির চোখ করার কথা বলেন তিনি। এ বার সেই একই স্বপ্ন তুলে ধরল নীতি আয়োগও। ওই বছরে দারিদ্র, দূষণ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, জাতিভেদ এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত ভারতের ছবি তুলে ধরল তারা। বিরোধীদের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘২০২২ সালে নতুন ভারতের দেখা মিলবে ঠিকই। কিন্তু অন্য সরকারের নেতৃত্বে। মোদী-জমানা তো ২০১৯ সালেই শেষ!’’
আরও পড়ুন: নতুন কর সহজ করতে প্রস্তাব সমস্ত রাজ্যকে
‘২০২২-এ নতুন ভারত’ নামে রূপরেখায় নীতি আয়োগের দাবি, এখন থেকে টানা ৮% বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে পারলে, ২০৪৭ সালে বিশ্বের প্রথম তিন অর্থনীতির মধ্যে ঠাঁই পাবে ভারত। এ দেশে আসা বিশ্ব ব্যাঙ্কের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিভা-ও শনিবার বলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যবিত্ত অর্থনীতিগুলির মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে ভারত। কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এখন বৃদ্ধি নেমে গিয়েছে ৫.৭ শতাংশের তলানিতে। তাকে ৬.৫-৭ শতাংশে নিয়ে যাওয়ারই সিঁড়ি খুঁজে পাচ্ছে না মোদী সরকার। সেখানে বৃদ্ধিকে টানা ৮ শতাংশের কক্ষপথে ধরে রাখা তো অনেক দূরের স্বপ্ন।
আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে বেশ কিছু স্বপ্নপূরণের সম্ভাবনার ছবি উঠে এসেছে নীতি আয়োগের রূপরেখায়। বলা হয়েছে, অন্তত ৫০০ জন বাস করেন (কিছু ক্ষেত্রে ২৫০ জন) এমন সমস্ত গ্রাম প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক প্রকল্পে জুড়ে যেতে পারে ২০১৯ সালের মধ্যেই। ২০২২-এর মধ্যে দেশে মাথা তুলতে পারে ২০টি বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওই বছরের মধ্যে দেশকে দারিদ্রমুক্ত করার শপথ নেওয়া জরুরি বলেও মনে করে তারা।
কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির কটাক্ষ, ‘‘২০২২-এ ভারতে অনেক কিছুই ভাল হবে। কিন্তু সেটা অন্য সরকারের জমানায়। কারণ, মোদী সরকারের মেয়াদ ২০১৯ সালেই শেষ।’’ বিরোধীদের মতে, মোদী যতই ২০২২ সালের স্বপ্ন ফেঁদে ২০১৯-এর ভোটকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন, মানুষ অত বোকা নয়।’’ উল্লেখ্য, নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই।
এ দিন অবশ্য এক লাফে ত্রিশ সিঁড়ি টপকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠিতে ভারত একশোর গণ্ডিতে পা রাখায় ওই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা কুড়িয়েছে মোদী সরকার। জর্জিভার মতে, এক বারে এতখানি এগোতে যে পরিমাণ সংস্কার লাগে, ভারতের মতো এত বড় দেশে তা করা মুখের কথা নয়। কিন্তু সেখানেও বিরোধীরা বলেছেন, সার্বিক নম্বর বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু চোখে পড়ার মতো উন্নতি ১০টির মধ্যে মাত্র ৪টি মাপকাঠিতে। তাঁদের মতে, নোটবন্দি আর জিএসটির জোড়া ধাক্কায় মোদী সরকার আসলে যা করেছে, তা হল, ‘সিজ অব ডুয়িং বিজনেস’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy