অভাব নেই। বরং উদ্বৃত্ত। তবু ভবিষ্যতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বক্রেশ্বর ও সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নতুন ইউনিট তৈরি করে উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট করে বাড়ানোর কথা ভাবছে রাজ্য।
বিদ্যুৎকর্তাদের যুক্তি, রাজ্যে কয়েকটি বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। এর কোনওটি শুরুর মুখে, কোনওটি শেষের পথে। এর মধ্যে রয়েছে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৫০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে উত্তরবঙ্গে তিস্তা নদীর উপর ১২০ মেগাওয়াট (৪ নম্বর) এবং রাম্মাম নদীর উপর ১২০ মেগাওয়াটের (৩ নম্বর) দু’টি ইউনিট তৈরি হচ্ছে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৯-’২০ সালের মধ্যে। নবান্ন সূত্রের খবর, ২০২৩-’২৪ সালের মধ্যে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে প্রস্তাবিত ১০০০ মেগাওয়াটের পাম্পড স্টোরেজ প্রকল্প (জলবিদ্যুৎ) এবং বর্ধমানের কাটোয়ায় এনটিপিসি-র ১৩২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজও শেষ হয়ে যাবে। এই নির্মীয়মাণ ও প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলি যথাসময়ে উৎপাদন শুরু করলেও পরবর্তী কালে বাড়তি চাহিদার কথা ভেবেই এখন থেকে পরিকল্পনা করতে হবে বলে সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত। এবং সেই কারণেই বক্রেশ্বর ও সাঁওতালডিহিতে নতুন ইউনিট তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। এতে জমি-সহ পরিকাঠামোর খরচ প্রায় লাগবে না।
প্রশ্ন উঠেছে, বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত রাজ্যে নতুন ইউনিট গড়ার পরিকল্পনা কেন?
নবান্নের কর্তাদের ব্যাখ্যা, রাজ্যে এখন দৈনিক সর্বাধিক চাহিদা ওঠে ৬৪০০-৬৫০০ মেগাওয়াটের মতো। এই চাহিদা মেটাতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু রাজ্যে প্রতি বছর গড়ে ৬ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। এই হারে ২০২৩-’২৪ সাল নাগাদ চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ৯০০০-৯৫০০ মেগাওয়াটের মতো। প্রস্তাবিত ও নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলি চালু হয়ে গেলে ওই চাহিদাও মেটানো সম্ভব। কিন্তু সাধারণ ভাবে তার পরের সাত-আট বছরে আরও চাহিদা বাড়বে। সে কথা মাথায় রেখেই এখন থেকে বক্রেশ্বর ও সাঁওতালডিহিতে নতুন ইউনিট গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে সাত-আট বছর সময় লাগে। তাই পরিকল্পনা অনেক আগে করে রাখতে হয়।’’ তবে দফতরের একাংশ মনে করে, রাজ্যের আগামী দিনের চাহিদা মেটাতে নির্মীয়মাণ ও প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলি যথেষ্ট। এখনই নতুন পরিকল্পনার দরকার নেই।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাজ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকুক। অন্যের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রাজ্য নিজের চাহিদা নিজেই মেটাক— এমনটাই চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদ্যুৎ পরিষেবায় দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের কাজেও কেন্দ্রের প্রশংসা কুড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিষেবার মানও আগের তুলনায় ভাল হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বণ্টনের ক্ষেত্রে উন্নত পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি হাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎও রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy