সফর: শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য চিনে উইলবার রস। ছবি: এএফপি
ছবিটা আচমকাই উল্টে যাওয়ায় ধন্দে গোটা বিশ্ব।
এক দিকে শুল্ক নিয়ে বেজিংয়ের ক্ষোভে মলম দিতে চিনে পৌঁছলেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব উইলবার রস। সেই চিন, যারা আমেরিকার শুল্ক তোপের প্রথম ও অন্যতম প্রধান নিশানা বলে বরাবর মনে করেছে বিশ্ব। এবং যাদের বিরুদ্ধে মেধাস্বত্ব কুক্ষিগত করা ও নিজেদের বাজার বাঁচিয়ে অন্য দেশে একচেটিয়া ব্যবসা করার অভিযোগ তুলে প্রায় নিয়মিত ক্ষোভ উগরে দেন মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অন্য দিকে দীর্ঘ দিনের বাণিজ্য-বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও কানাডা, মেক্সিকো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক ছাড় তুলে সম্প্রতি ‘অপ্রত্যাশিত’ আঘাত করেছে আমেরিকা। এ বার তাদের সুদ্ধ অন্যান্য দেশকে আরও এক দফা হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বললেন, ফের পাল্টা কর চাপাতে পারেন তিনি। কারণ অবাধ বাণিজ্যকে পছন্দ করেন ঠিকই, কিন্তু চান তা নীতি মেনে হোক।
সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এত দিনকার বাণিজ্য সহযোগীদের খেপিয়ে ফের বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তাপ ছড়ানোর পরে ওয়াশিংটন হঠাৎ চিনের উষ্মা কমাতে কেন কোমর বাঁধল? বিশেষত তারা যেখানে চিনা লগ্নি, রফতানিতে রাশ টানা, ৫,০০০ কোটি ডলারের চিনা প্রযুক্তি পণ্যে ২৫% শুল্ক বসানো-সহ বেজিংয়ের উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত করার কাজ চালাচ্ছে! চিনও যার পাল্টা হিসেবে কোটি কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যে করের হুমকি দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক দুনিয়া বলছে, তাৎপর্যপূর্ণ চিনের আচরণও। এত ‘আস্ফালন’ সত্ত্বেও রস চিনে পৌঁছতেই নরম হয়েছে বেজিং।
মোক্ষম জবাব দিতে ক্ষুব্ধ কানাডা মার্কিন শুল্ককে বেআইনি তকমা দিয়ে নালিশ জানিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও)। এর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে প্রথম বার ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ করেছে ইইউ-ও। তা ছাড়া, করের বদলে কর তো আছেই। তা চাপানোর কড়া বার্তা আগেই দিয়েছে কানাডা, মেক্সিকো, ইইউ।
ট্রাম্পের অবশ্য এ সবে হেলদোল নেই। ফের পাল্টা শুল্কের তোপ দাগার পাশাপাশি উত্তর আমেরিকা অবাধ বাণিজ্য চুক্তিকে (নাফটা) আমেরিকার পক্ষে ‘অসহ্য’ তকমা দিয়েছেন তিনি। যে চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কথা চলছে কানাডা, মেক্সিকোর সঙ্গে। বলেছেন, ‘‘আমরা বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার হারাচ্ছি মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্যে। বহু কোটি ডলার কানাডার ক্ষেত্রেও।’’ সেই সঙ্গে বন্ধুদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তাঁর প্রস্তাব, নাফটার বিকল্প হিসেবে দু’দেশের সঙ্গে আলাদা করে চুক্তি করতেও আপত্তি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy