প্রত্যয়ী: ছোট-মাঝারি শিল্পের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে লগ্নির ক্ষেত্রে এক লপ্তে অনেকখানি জমি পেতে সমস্যার কথা বহু বার বলেছে বড় শিল্প। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে সেই একই কথা তুলল ছোট-মাঝারি শিল্পও। সেই ছোট-মাঝারি শিল্প, যার উপর জোর দেওয়ার কথা বরাবর বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজের সুযোগ তৈরিতে ওই শিল্পের গুরুত্বের কথা এ দিনও বলেছেন তিনি।
শুধু জমি নয়। অন্যান্য অভাব-অভিযোগও এ দিন তুলে ধরেছে ছোট-মাঝারি শিল্প। লাল ফিতের ফাঁস থেকে কম ভোল্টেজ— সব প্রসঙ্গই উঠেছে সেখানে। তা শুনে মমতার আশ্বাস, যেখানে রাজ্যের হাতে জমি আছে, সেখানে ওই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন তাঁরা। লাল ফিতের সমস্যা কাটাতে জোর দেওয়া হচ্ছে এক-জানলা ব্যবস্থা জোরদার করায়। শিল্পের মন পড়তে সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব-সহ কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ঘনঘন জেলায় যাওয়ার জন্য। বলেছেন শিল্প সম্মেলন করার কথাও।
সোমবার রাজারহাটে শুরু হল দু’দিনের ছোট-মাঝারি শিল্প সম্মেলন। রাজ্যের নাম এখনও সরকারি ভাবে না বদলালেও, সেখানে ‘বাংলা’ হিসেবেই তার উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তৃতার পরে শিল্পমহলের কথা শুনতে কিছুটা সময় বরাদ্দ করেছেন। তখনই গুপ্তিপাড়ার শিল্প প্রতিনিধিদল প্লাস্টিক ক্লাস্টারের জন্য জমি সমস্যার কথা তোলে। সেই প্রয়োজনের কথা জানান স্টিলের আসবাব শিল্পের প্রতিনিধি। হাতে জমি থাকলে, সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। বরাবরের মতো বলা হয়েছে রাজ্যের নিজস্ব জমি ব্যাঙ্কের কথাও।
অভিযোগ
• বড় শিল্পের জন্য এক লপ্তে জমি পাওয়ার সমস্যা তো আছেই। কিছু ক্ষেত্রে জমি জোগাড়ে মুশকিলে পড়ছে ছোট-মাঝারি শিল্পও।
• অনেক সময়ে জমি মিললেও, পেতে দেরি হচ্ছে তার ছাড়পত্র।
• এখনও আলগা হয়নি লাল ফিতের ফাঁস। বিভিন্ন লাইসেন্সের জন্য একাধিক দফতরের চৌকাঠে হত্যে দিতে গিয়ে হয়রান শিল্প।
• মাসের পর মাস ছাড়পত্রের অপেক্ষায় থেকে নষ্ট সময়ও।
• কিছু জায়গায় সমস্যা বিদ্যুৎ। ভোগাচ্ছে লো-ভোল্টেজ।
আশ্বাস
• জমি ব্যাঙ্ক রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জমির বন্দোবস্ত করার চেষ্টা সেখান থেকেই।
• দ্রুত সমস্ত ছাড়পত্র পাওয়া নিশ্চিত করতে আরও জোরদার করা হবে এক-জানলা ব্যবস্থা।
• শিল্পের সমস্যা বুঝতে সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবকে তিন মাস অন্তর জেলা সফরের নির্দেশ। সেই সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ শিল্পের সঙ্গে।
উঠেছে জমি পাওয়ার পরেও প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতায় কাজ শুরুতে দেরির কথা। যেমন, কোচবিহারের প্রতিনিধির দাবি, সেখানে হিমঘর তৈরির কাজ ১৫ মাস আটকে। পূর্ব বর্ধমানে ডোকরা শিল্পেও জমি-জটের কথা ওঠে। বাঁকুড়ার শিল্পমহলের অভিযোগ, কারখানা গড়তে ট্রেড লাইসেন্স পেতেই এক মাস লাগে। তারপর আবার ফায়ার লাইসেন্সেও লাগে একই সময়। মুখ্যমন্ত্রী ভূমি সংস্কার দফতর এবং ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। তাঁর আশ্বাস, সব লাইসেন্স এক সঙ্গে পাওয়ার বন্দোবস্ত হবে। সিঙ্গুরের এক গয়না শিল্পী বলেন, ‘‘টাটারা চলে যাওয়ার পরে লো-ভোল্টেজের সমস্যা হচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, দ্রুত সমস্যা মিটবে।
জার্মানি সফর: শিল্প আনতে জার্মানি যাবেন বলে এ দিন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তা হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy