ডাকঘরের প্রায় সমস্ত স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পেই সুদ কমেছে। ফলে আগামী ৫ এপ্রিল ঋণনীতি ফিরে দেখতে বসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফের সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটতে পারে বলে আশায় বুক বাঁধছে শেয়ার বাজারমহল। আর মূলত সেই আশায় ভর করেই সোমবার ফের ২৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে সেনসেক্স। উৎসাহে শেয়ার কিনেছেন লগ্নিকারীরা। ফলে সেনসেক্স এক লাফে উঠেছে প্রায় ৩৩৩ পয়েন্ট। দিনের শেষে দাঁড়িয়েছে ২৫,২৮৫ অঙ্কে। গত ১১ সপ্তাহের মধ্যে সব থেকে বেশি। পাশাপাশি, শুক্রবারের পর সোমবারও বাড়ার ফলে, মোট দু’দিনে সেনসেক্সের উত্থান ছুঁয়েছে প্রায় ৬০৮ পয়েন্ট। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটিও ৯৯.৯০ পয়েন্ট বেড়ে থিতু হয়েছে ৭,৭০৪.২৫ অঙ্কে।
এ দিনের উত্থানে ইন্ধন জুগিয়েছে ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির একটানা লগ্নি এবং এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারের ঊর্ধ্বমুখী গতি।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার পিপিএফ, প্রবীণ নাগরিক প্রকল্প, শিশুকন্যাদের সুকন্যা সমৃদ্ধি, ১ থেকে ৫ বছরের ডাকঘর মেয়াদি আমানত, কিষান বিকাশ পত্রের মতো বিভিন্ন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদের হার কমানোর কথা ঘোষণা করেছে। সরকারের মতো বাজার বিশেষজ্ঞ-দেরও একাংশও যাকে আর্থিক সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন। তাঁরা বলছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর রাস্তা এতে আরও চওড়া হল। অর্থনীতির চাকায় গতি আনতে বারবার যে দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে শিল্পমহল। কারণ, এখনও লগ্নি পরিবেশ তেমন চাঙ্গা হয়নি। রফতানি টানা কমছে। শিল্পোৎপাদনের হার হতাশাজনক। পাশাপাশি, সুদ কমানোর অন্যতম শর্ত যে বিষয়টি, সেই মূল্যবৃদ্ধির হারও এই মুহূর্তে নিম্নমুখী। ফলে তাঁদের আশা, এ বার শীর্ষ ব্যাঙ্ক যদি সুদ আরও কমায়, তা হলে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিও আমানতে সুদ কমাবে। কারণ, ডাকঘর স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের চড়া সুদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার আর দায় থাকবে না। ফলে কমবে ব্যাঙ্কগুলির তহবিল সংগ্রহের খরচ। যে কারণে তখন ঋণে সুদের হারও ছাঁটাই করতে পারবে তারা। ক্রেতাদের ঘাড়ে গাড়িঋণ, বাড়িঋণের মাসিক কিস্তির বোঝা কমবে। ব্যাঙ্ক জমায় সুদ কমায় তাঁরা বেশি খরচ করবেন। তার উপর ধার করতে কম খরচ হওয়ায় শিল্প সংস্থাগুলিও ঋণ নিয়ে প্রকল্প তৈরিতে নামবে। সব মিলিয়ে বাড়বে কর্মকাণ্ড। চাহিদা গতি পাবে। এগোবে অর্থনীতি। বিশেষজ্ঞদের ওই অংশের ধারণা, নতুন আর্থিক বছরের প্রথমেই ফের এক বার সুদ কমিয়ে অর্থনীতিতে এ ভাবে চাহিদা বাড়ানোর পথ তৈরি করে দেবেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। শেয়ার বাজারের লেনদেনে এ দিন এই আশারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।
এ দিকে, আরও যে বিষয়টি শেয়ার বাজারকে ক্রমশ চাঙ্গা করে তুলছে, তা হল বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ। বাজেটের পর থেকে ওই সব সংস্থা ফের ভারতের বাজারে ফিরতে শুরু করেছে। এ বছরের বেশির ভাগ সময় জুড়েই তাদের বিক্রেতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। কিন্তু তারাই এখন প্রায় প্রতি দিন মোট অঙ্কের টাকা ঢালছেন। যা সূচকের পারদকে ঠেলে তুলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy