Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ভুয়ো সংস্থা ধরতে কড়া পদক্ষেপ সেবি-র

সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে রাজ্য

এই ৩৩১টি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবারই বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। সেই অনুযায়ী, ১৬২টি সংস্থার শেয়ার লেনদেনে রাশ টানা হয়েছে মঙ্গলবার থেকেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নয়াদিল্লি
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৩
Share: Save:

ভুয়ো সন্দেহে শেয়ার লেনদেনে রাশ টানা ৩৩১টি নথিভুক্ত সংস্থার মধ্যে ১২৭টিরই আঁতুড় পশ্চিমবঙ্গ। সব রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি। এ ধরনের বিপুল সংখ্যক ভুয়ো বা ‘শেল’ সংস্থার ঠিকানা দিল্লি এবং গুজরাতও। অভিযোগের আঙুল ওঠা অনেক সংস্থারই অবশ্য দাবি, তাদের গায়ে ভুয়োর তকমা সাঁটা ঠিক নয়। এর বিরুদ্ধে কিছু সংস্থা আবেদনও জানিয়েছে সেবির আপিল ট্রাইবুনালে।

এই ৩৩১টি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবারই বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। সেই অনুযায়ী, ১৬২টি সংস্থার শেয়ার লেনদেনে রাশ টানা হয়েছে মঙ্গলবার থেকেই। জানানো হয়েছে, আপাতত তা করা যাবে মাসে মাত্র এক দিন। বাকিগুলির ক্ষেত্রেও আগামী দিনে একই রকম কড়াকড়ির সম্ভাবনা। আর এই সন্দেহভাজন ভুয়ো সংস্থার তালিকাতেই সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি এ রাজ্যের সংস্থার। অর্থাৎ, সারদা, রোজভ্যালির মতো বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলির (চিট ফান্ড) পরে এ বার ফের আর্থিক অনিয়মের কারণে তদন্তের আতসকাচের নীচে আসতে চলেছে এ রাজ্যের বহু সংস্থা।

আরও পড়ুন: লেনদেন বন্ধে ধাক্কা বাজারে

কিছু দিন আগেই লোকসভায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন যে, কালো টাকা সাদা করতে ভুয়ো সংস্থা (শেল কোম্পানি) তৈরির ‘সদর দফতর’ হয়ে উঠেছে কলকাতা। তাঁর অভিযোগ ছিল, এমন অজস্র শেল কোম্পানি রয়েছে, যাদের খাতায়-কলমে অস্তিত্ব থাকলেও, বাস্তবে ব্যবসা নেই। এমনকী সাধারণ গরিব মানুষ, বাড়ির কর্মচারী বা গাড়ির চালককে ডিরেক্টর বানিয়েও এই সব সংস্থা খোলা হয়েছে। কলকাতাতেই এ ধরনের শেল কোম্পানির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে তাঁর দাবি।

যত কাণ্ড...

স্বাধীন ভারতের প্রথম বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি

পঞ্চাশের দশকে ‘সরকারি প্রভাবে’ কলকাতার ব্যবসায়ী হরিদাস মুন্দ্রার ছয় সংস্থার শেয়ারে ১.২৬ কোটি টাকা ঢালে জীবনবিমা নিগম

অভিযোগ তোলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জামাই ফিরোজ গাঁধী। জল গড়ায় বহু দূর। অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় কৃষ্ণমাচারিকে। জেলে যান মুন্দ্রা

চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি

সত্তরের দশকে চড়া সুদের হাতছানিতে টাকা তুলে গ্রাহকদের পথে বসানোর অভিযোগ সঞ্চয়িতার বিরুদ্ধে

সাধারণ মানুষের টাকা খোয়া যাওয়া নিয়ে উত্তাল রাজ্য ও দিল্লির রাজনীতি। তদন্ত শুরু বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার

ভুয়ো সংস্থায় শীর্ষে

গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও জানিয়েছিলেন, শুধু কর ফাঁকি দিতে খোলা হয়েছে, এমন ৩৭ হাজার ভুয়ো সংস্থাকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। সন্দেহজনক লেনদেনের জন্য নোট বাতিলের পর থেকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে এ ধরনের ৩ লক্ষ সংস্থার উপর। আগামী দিনে আরও সংস্থার নাম প্রকাশ করা হবে বলে সেবি এ দিন জানিয়েওছে।

সেবি প্রকাশিত তালিকায় নাম রয়েছে পার্শ্বনাথ ডেভেলপার্স, এসকিউএস ইন্ডিয়া, জে কুমার ইনফ্রা, প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজের মতো পরিচিত সংস্থার। অভিযোগ অস্বীকার করছে তাদের প্রায় সকলেই।

এমনিতে শেল কোম্পানির কোনও ধরাবাঁধা সংজ্ঞা নেই। কিন্তু সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী জেটলি জানিয়েছিলেন, এমন বহু সংস্থা তৈরিই হয়েছে শুধুমাত্র বিপুল অঙ্কের কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য। গত ১২ জুলাই পর্যন্ত দেশে ১ লক্ষ ৬২ হাজারেরও বেশি এ ধরনের সংস্থার স্বীকৃতি বাতিল করেছে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। এ বার সেবিকে পাশে নিয়ে সেই লড়াই জোরদার করতে চাইছে কেন্দ্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE