একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনা নজরে আসায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বিশেষ অডিট শুরু করল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি ঋণ দেওয়ার জন্য ইস্যু করা লেটার অব আন্ডারটেকিং (এল ও ইউ) সংক্রান্ত বিশদ তথ্য জমা দিতে সব ব্যাঙ্কের উপর চাপ বাড়াচ্ছে আরবিআই।
ব্যাঙ্কিং শিল্পমহল সূত্রের খবর, বিশেষ অডিটের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে বাণিজ্য-ঋণ মঞ্জুর করার উপর, বিশেষ করে তার জন্য ইস্যু করা লেটার অব আন্ডারটেকিং (এলওইউ) বা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি সংক্রান্ত জালিয়াতি নিয়ে। আসলে প্রায় ১২,৭০০ কোটি টাকার পিএনবি কেলেঙ্কারি সমেত ব্যাঙ্ক প্রতারণার বিভিন্ন ঘটনায় কৌশলে নেওয়া হয়েছে বাণিজ্য-ঋণ। স্বচ্ছায় ঋণ খেলাপিরাও এ ধরনের ঋণকে হাতিয়ার করেই বিপুল ব্যাঙ্কঋণ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সূত্রের। সেই কারণে এ বার শীর্ষ ব্যাঙ্ক বাড়তি নজর দিচ্ছে এই সংক্রান্ত জালিয়াতির উপর।
ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে যে সব এলওইউ ইস্যু করেছিল বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, সেগুলির তথ্য চেয়ে তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে আরবিআই। ব্যাঙ্কিং মহলের অভিযোগ, কিছু অসৎ কর্মীর সঙ্গে যোগসাজশেই ওই সব ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বার করে পরে সেগুলি দেখিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ আদায় করেন নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীর মতো ব্যবসায়ীরা।
কড়া ওষুধ
• ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি মারফত ঋণ দেওয়ার তথ্য জানাতে হবে বিশদে
• বিশেষ নজরে বাণিজ্য-ঋণ
• কী পরিমাণ ঋণ ফেরেনি, দিতে হবে সেই হিসেব
• এগোতে হবে সময়সীমা মেনে
এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন এলওইউ-র পূর্ণাঙ্গ তথ্য, কোনটিতে কতটা ঋণ বকেয়া রয়েছে, ওই সব গ্যারান্টি ইস্যু করার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক যথেষ্ট নগদ হাতে রেখেছিল কি না, সেই সব তথ্যই চেয়ে পাঠিয়েছে আরবিআই। মূলত আমদানির জন্যই ঋণ আদায় করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় ব্যাঙ্কের এলওইউ কাজে লাগিয়ে কম দামে বিদেশি মুদ্রার ঋণ জোগাড় করেছিলেন গয়না ব্যবসায়ীরা, যা দিয়ে বিদেশ থেকে হিরে ইত্যাদি কেনা হত। ব্যাঙ্কিং শিল্প সূত্রের খবর, পুরো ব্যবস্থার ফাঁক-ফোকর বন্ধ করার জন্য সময়সীমা মেনে এগোতে বলেছে আরবিআই। তবে এ ব্যাপারে সরাসরি আরবিআইয়ের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, পিএনবি-কাণ্ড ছাড়াও আরবিআইয়ের নজরে এসেছে ২০০৭-’১২-র মধ্যে ঘটা ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্স কেলেঙ্কারি। সেখানে গয়না রফতানি সংস্থা দ্বারকা দাস শেঠ ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে প্রায় ৩৯০ কোটি টাকার ব্যাঙ্কঋণ ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৫-র ব্যাঙ্ক অব বরোদা-কাণ্ডেও বাণিজ্য-ঋণ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। নতুন নতুন কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলে দিনে ৪-৫ বারের বেশি লেনদেন করে আমদানির জন্য বিপুল বিদেশি মুদ্রা পাচার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy