Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Unemployment

কর্মসংস্থান নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টেও প্রশ্ন

লোকসভা ভোটের সময়েই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রধান অস্ত্র ছিল দেশে চড়তে থাকা বেকারত্ব। তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে সেই সরকার ফের কাজ শুরু করার পরে সেই বেকারত্ব নিয়েই অস্বস্তি আরও বেড়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ০৪:৪৯
Share: Save:

বেকারত্বের সমস্যা গলার কাঁটা ছিলই। তার সঙ্গে এ বার নতুন লগ্নির ক্ষেত্রে খারাপ ছবিও মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে সরকারের। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়া-অস্ট্রিয়া সফর শেষে দিল্লি ফিরেই দেশের অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছেন। নতুন সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটের আগে তাঁদের মতামত জানতে নীতি আয়োগের দফতরে ডাকা হয়েছে এই বৈঠক।

তার আগে আজ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নতুন পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) ভারতে নতুন ৪.৭ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চের শেষে দেশে কর্মরত মানুষের সংখ্যা ছিল ৫৯.৬৭ কোটি। ২০২৪-এর মার্চের শেষে তা বেড়ে ৬৪.৩৩ কোটিতে পৌঁছে গিয়েছে। এক বছরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ৬%। যা এক বছর আগে ছিল মাত্র ৩.২%।

লোকসভা ভোটের সময়েই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রধান অস্ত্র ছিল দেশে চড়তে থাকা বেকারত্ব। তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে সেই সরকার ফের কাজ শুরু করার পরে সেই বেকারত্ব নিয়েই অস্বস্তি আরও বেড়েছে। সম্প্রতি সিটিগ্রুপ এক রিপোর্টে জানিয়েছে, ৭% আর্থিক বৃদ্ধির মুখ দেখলেও ভারতে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যাবে না। কার্যত কংগ্রেসের ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতি ও দাবির সুরে সিটিগ্রুপ কেন্দ্রকে সরকারি ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ শূন্যপদ পূরণ করার কথাও বলেছে। তার পরেই পাল্টা জবাব হিসেবে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক যুক্তি দেয়, সিটি সমস্ত সরকারি পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখেনি। এই পরিস্থিতিতে আজ সরকারের কিছুটা মুখরক্ষা করল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট।

বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, এত কর্মসংস্থান হলে বাজারে কেন তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না? সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, গত অর্থবর্ষে কেনাকাটা বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৪%। তা ছাড়া আরবিআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে ৪.২ কোটি এবং ২০২০-২১ সালে ৩.১ কোটি নতুন কর্মসংস্থান হয়েছিল। অথচ ওই দু’টি ছিল কোভিডের বছর। বিপুল সংখ্যক মানুষ তখন রুটিরুজি হারিয়েছিলেন।

কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আজ বিরোধী শিবির নতুন লগ্নি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। কারণ গত এপ্রিল-জুনে কর্পোরেট সংস্থার ঘোষিত নতুন লগ্নি মাত্র ৪৪,৩০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। যা ২০ বছরে সর্বনিম্ন। সিএমআইই-র পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ওই তিন মাসে ৭.৯ লক্ষ কোটি টাকার কর্পোরেট লগ্নি ঘোষণা হয়েছিল। এ বছরের জানুয়ারি-মার্চেও তা ছিল ১২.৩৫ লক্ষ কোটি। সরকারি শিবিরের যুক্তি, লোকসভা ভোটের সময় বলে এপ্রিল-জুনে শিল্পমহল ধীরে চলেছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ এবং ২০১৯-এর ভোটের সময় অনেক বেশি লগ্নি ঘোষণা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা মাণিকম টেগোরের মন্তব্য, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। লগ্নিকারীদের আস্থাও কমে এসেছে। সংখ্যালঘু মোদী সরকার এখন পর্বতপ্রমাণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE