আমেরিকার সঙ্গে চিনের শুল্ক যুদ্ধ ইতিমধ্যেই ঘুম কেড়েছে সারা বিশ্বের। দু’দেশের নাগাড়ে পরস্পরের পণ্যে কর বসানোর জের কতখানি ভয়ানক হতে পারে, সে সম্পর্কে বার বার সাবধান করছে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের (আইএমএফ) মতো প্রতিষ্ঠানও। তবু কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র রেয়াত করতে রাজি নয়। এই পরিস্থিতিতে পরিসংখ্যান জানাল, তৃতীয় ত্রৈমাসিকে চিনের অর্থনীতি এগিয়েছে ৬.৫% হারে। গত ন’বছরের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বৃদ্ধির এই গতি সব থেকে মন্থর।
তবে শুধু শুল্ক যুদ্ধ নয়, বিশেষজ্ঞদের দাবি এ জন্য দায়ী বেজিং সরকারের বিপুল ঋণও। অর্থ মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, তা বেড়ে এখন ২.৫৮ লক্ষ কোটি ডলার।
হিসেবটা জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের। জানুয়ারি থেকে বছর ধরলে তৃতীয় ত্রৈমাসিক। সে দেশের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিক্সের (এনবিএস) পরিসংখ্যান বলছে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বার ওই তিন মাসে বৃদ্ধি ৬.৫%। চলতি বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ছিল যথাক্রমে ৬.৮% ও ৬.৭%। আর তাতেই পিলে চমকেছে সারা বিশ্বের। এর আগে ২০০৯ সালে বৃদ্ধিকে এতখানি তলিয়ে যেতে দেখেছিল চিন। যে সময় সারা দুনিয়ায় আঘাত হেনেছিল আর্থিক মন্দা।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বেজিংয়ের এখন হাত-পা বাঁধা অবস্থা। বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থেকে প্রযুক্তি হাতানো, অনৈতিক বাণিজ্য ইত্যাদি নানা অভিযোগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তোপের মুখে দাঁড়িয়ে নিজেদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দিকে মন দিতে পারছে না তারা। শুল্ক যুদ্ধে জড়াতে না চাইলেও উপায় থাকছে না। ঋণের অঙ্ক মাত্রাছাড়া উচ্চতায় পৌঁছনোয় সে দেশের নীতি নির্ধারকেরা ত্রাণ প্রকল্প আনার রাস্তাতেও হাঁটতে পারছেন না। অথচ ২০০৮ সালের মন্দার পরে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সেই পদক্ষেপই করেছিল চিন।
এনবিএসের অবশ্য দাবি, ছবিটা অতটা খারাপও নয়। ২০১৮ সালের প্রথম ন’মাসের বৃদ্ধি ৬.৭%। এর ফলে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯.৩৮ লক্ষ কোটি ডলার। তাদের মতে, এটা বাজারের প্রত্যাশা মাফিকই হয়েছে। বরং বার্ষিক প্রায় ৬.৫ শতাংশ হারে এগোনোর যে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধেছিল বেজিং, এই হার তার থেকে বেশি।
তবে ন’বছরে সবচেয়ে শ্লথ বৃদ্ধির পরিসংখ্যানে যে বিভিন্ন মহলে আশঙ্কা দানা বাঁধছে, তা বিলক্ষণ বুঝেছে বেজিং। যে কারণে তড়িঘড়ি দেশের অর্থনীতি ও শেয়ার বাজার নিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে নেমেছে তারা।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy