অরুণ জেটলি
রাত পোহালেই নোটবন্দির বর্ষপূর্তি। সেই বছর ঘোরার মুখে অতিরিক্ত নগদ নির্ভরতার দিকে ফের তোপ দাগলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। দাবি করলেন, দেশে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে দ্রুত। আর তার হাত ধরে ভারত ক্রমশ এগোচ্ছে কম নগদের অর্থনীতি হওয়ার পথে।
গত বছরের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের ঘোষণার সময়ে কালো টাকা নির্মূল করার উপর জোর দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করেছিলেন, ওই কড়া পদক্ষেপের জেরে নিকেশ হবে জাল নোটও। আর সেই সাঁড়াশি আক্রমণে টান পড়বে সন্ত্রাসে অর্থের জোগানে। অনেক বিশেষজ্ঞ এবং বিরোধীরা তাই বলছেন, প্রথম দিনে বলা সেই লক্ষ্যের ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি কেন্দ্র। তা সম্ভব নয় বুঝে আগেই চাঁদমারি বদলে নগদ লেনদেন কমানোকে সামনে এনেছে তারা। এখন বছর ঘোরার মুখে ঢাল করতে চাইছে ওই ডিজিটাল-প্রাপ্তিটুকুকেই।
সোমবার জেটলি বলেন, নগদের উপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতার মূল্য চোকাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সমাজ এবং অর্থনীতির পক্ষে তা অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর দাবি, সেই বাড়তি নির্ভরতা কমে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে। আর কম নগদের অর্থনীতি হওয়ার রাস্তায় হাঁটছে ভারত।
কিন্তু সেখানেও বিরোধীদের কটাক্ষ, শুরুতে নগদহীন (ক্যাশলেস) অর্থনীতির কথা বলেও পরে ঢোঁক গিলতে হয়েছে মোদী সরকারকে। বলতে হয়েছে কম নগদের (লেস ক্যাশ) অর্থনীতির কথা। তাঁদের প্রশ্ন, ডিজিটাল লেনদেনের পালে বাতাস জোগানোই যদি মূল লক্ষ্য হয়, তবে তার জন্য নোট নাকচের প্রয়োজন পড়ল কেন? তা তো আরও অনেক পরিকল্পিত ভাবেই করা যেত।
এ দিনই আবার বিবৃতি দিয়ে নোট বাতিলের নানা সুফল তুলে ধরেছে অর্থ মন্ত্রক। তাদের দাবি, এক বছর আগে ১০০০ ও পুরনো ৫০০ টাকার নোট বাতিলের ফল মিলেছে হাতেনাতে। কমেছে কালো টাকা, জাল নোট। রাশ টানা গিয়েছে অর্থনীতিতে নগদ লেনদেনের উপরেও। টুইটে তারা জানিয়েছে, নোট নাকচের আগে অর্থনীতিতে মোট হাতবদল হত ১৭.৭৭ লক্ষ কোটি নগদ টাকা। সেখানে গত ৪ অগস্ট তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪.৭৫ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ, আগের ৮৩%। এ ছাড়াও করের আওতায় এসেছেন অনেক বেশি ব্যক্তি ও সংস্থা। সেপ্টেম্বরেই ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭.৭ কোটি। টাকার অঙ্কে মোট ১.২৪ লক্ষ কোটি।
বিরোধীদের মতে, কেন্দ্র দাবি করলেও অর্থনীতিতে এই সমস্ত সুফলের দেখা আদৌ মেলেনি। বরং নোট বাতিলের ধাক্কায় ছোট ব্যবসা ও শিল্পের দশা বেহাল হয়েছে। কাজ খুইয়েছেন বহু মানুষ। বৃদ্ধির হার ক্রমাগত নামতে নামতে পৌঁছে গিয়েছে ৫.৭ শতাংশের তলানিতে। বছর ঘুরলেও সেই ধাক্কা এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি বলেই তাঁদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy