ফাইল চিত্র।
বিশাল সিক্কার বিদায়ের দিনে ইনফোসিস বোর্ডের তীব্র আক্রমণের সামনেও সে ভাবে মুখ খোলেননি এন আর নারায়ণমূর্তি। শুধু বলেছিলেন, ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় উত্তর দেবেন। খোলসা করবেন সব কিছু। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সেই পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
ইনফোসিস ছেড়ে যাওয়ার পরেও মূর্তি নিজের হাতে গড়া সংস্থার উপর বকলমে নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে চান বলে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন অনেকে। এমডি-সিইও পদ থেকে সিক্কা সরে যাওয়ার দিনে বোর্ড তোপ দেগেছে, সংস্থার কাছে বারবার অন্যায় আব্দার করেছেন মূর্তি! এ দিন সব অভিযোগে তাঁর পাল্টা জবাব, ‘‘ব্যক্তিগত লাভের জন্য এ কাজ করিনি। করবও না।’’
মূর্তির দাবি, আগের বোর্ডের পরিচালনায় গলদই ছিল তাঁর মাথাব্যথা। নন্দন নিলেকানি ফেরায় সে আশঙ্কা আর থাকবে না। তাঁর আশা, ‘‘ইনফোসিসের অচ্ছে দিন ফিরবে নিলেকানিরই হাত ধরে।’’
• ব্যক্তিগত লাভের জন্য এই কাজ করিনি। ভবিষ্যতেও করব না।
• আগের পর্ষদের সংস্থা পরিচালনার খারাপ ধরনই চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল।
• বনসলকে বিপুল টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কারণ নিয়ে পর্ষদের বিভিন্ন বক্তব্যে কোনও মিল নেই।
• নিরপেক্ষ তদন্তে ২০ কোটি ডলারের পানায়া চুক্তি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ঠিক মতো খতিয়ে দেখা হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়।
• নন্দনের ইন্টারভিউ এবং পর্ষদে বদল দেখে মনে হচ্ছে ইনফোসিসে পরিবর্তন ঠিক পথেই এগোচ্ছে।
এন আর নারায়ণমূর্তি (২৯ অগস্ট, ২০১৭)
• বোর্ড এবং মূর্তির সম্পর্ক জোড়া লাগাতে আমি দায়বদ্ধ। যিনি কিংবদন্তি দূরদ্রষ্টা।
নন্দন নিলেকানি (২৫ অগস্ট, ২০১৭)
• অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হওয়ার পরেও (আমার প্রতি) আক্রমণ থামেনি। তা এসেছে এমন এক জনের কাছ থেকে, যাঁর সমর্থন ছিল সবচেয়ে প্রত্যাশিত।
বিশাল সিক্কা (১৮ অগস্ট, ২০১৭)
• বারবার অন্যায় দাবিদাওয়া পেশ করেছেন মূর্তি। যা তাঁর স্বচ্ছ পরিচালনার দাবির সঙ্গে বেমানান।
ইনফোসিস বোর্ডের বিবৃতি (১৮ অগস্ট, ২০১৭)
নন-এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে নিলেকানি হাল ধরার পরেই মূর্তি সম্পর্কে আমূল বদলে গিয়েছে ইনফোসিসের অবস্থান! যে-বোর্ড ১৮ অগস্ট বিশাল সিক্কার বিদায়ের জন্য কড়া ভাষায় মূর্তির সমালোচনা করে, তারাই ২৫ অগস্ট জানিয়েছে, কিংবদন্তি প্রতিষ্ঠাতাকে আঘাত করা তাদের লক্ষ্য ছিল না। নিলেকানিও বলেছেন, বোর্ড-মূর্তি সম্পর্ক জোড়া লাগাতে তিনি দায়বদ্ধ। এ অবস্থায় মূর্তি বলেছেন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান আর শেষাশয়ী-সহ কিছু (এর মধ্যে আছেন সিক্কাও) সদস্যের পদত্যাগের মাধ্যমে বোর্ড পুনর্গঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও সে কাজ অনেক বাকি।’’ ইঙ্গিত স্পষ্ট, ইনফোসিসের উপর মহলে আরও রদবদল এখনও বাকি।
পানায়া এবং বনসল বিতর্কে দাঁড়ি টানার কথাও বলেছিলেন শেষাশয়ী, সিক্কারা। তাঁদের দাবি ছিল, বারবার নিরপেক্ষ তদন্ত করেও এ নিয়ে গরমিল মেলেনি। কিন্তু নিলেকানি ফেরার পরে সে খাতা যে ফের খোলা হতে পারে, এ দিন তা স্পষ্ট করেন মূর্তি।
সামঞ্জস্যহীন দরে ইজরায়েলীয় সংস্থা পানায়া অধিগ্রহণ নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। অভিযোগ, তা থেকে অন্যায় সুবিধা পেয়েছেন সিক্কা। সিএফও পদ ছাড়ার সময়ে রাজীব বনসলকে প্রায় ১৭ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েও জলঘোলা হয়েছে বিস্তর। এ দিন দুই প্রসঙ্গেই আক্রমণাত্মক মূর্তির মতে, পানায়া-অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়নি। আর বনসল নিয়ে মিল নেই বোর্ডের বিভিন্ন বক্তব্যেই। যা শুনে অনেকের ধারণা, সম্ভবত ফের এক প্রস্ত লড়াইয়ের পর্দা ওঠা শুরু হল ইনফোসিসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy