রাজ্যের প্রথম নিজস্ব ‘সুপার ক্রিটিক্যাল’ তাপবিদ্যুৎ ইউনিট গড়া হবে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে। ৬৬০ মেগাওয়াটের ওই প্রকল্পের শিলান্যাস করতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ইউনিটটি থেকে যা বিদ্যুৎ তৈরি হবে, তা বিক্রি করা হবে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি ইউনিটটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা।
নিগমের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৩,৮৬২ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৭০% বাজার থেকে ঋণ নেওয়া হবে আর বাকি ৩০% অর্থ আসবে সংস্থার নিজস্ব কোষাগার থেকে।
বাম আমলে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বর্ধমানের কাটোয়ায় রাজ্যের প্রথম সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ ইউনিট গড়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি তুলে দেওয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত এনটিপিসি-র হাতে। ওই প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু হয়নি। নিগমের তত্ত্বাবধানে এই প্রথম রাজ্যের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সুপার ক্রিটিক্যাল ইউনিট গড়ে উঠতে চলেছে। নির্মাণের দায়িত্ব কোন সংস্থাকে দেওয়া হবে, তার দরপত্র তৈরিও শুরু করেছেন নিগম কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থা পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন ২,৭০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরও করেছে।
অনেক রাজ্যেই এখন নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্প সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে, যেখানে কম জ্বালানিতে উচ্চ চাপে বয়লার চালিয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। দূষিত গ্যাস কম নির্গমন হয়। জমিও কম লাগে। এই মুহূর্তে রাজ্যে যে কয়েকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, তার মধ্যে কোনও ইউনিটই সুপার ক্রিটিক্যাল নয়। তা-ই সাগরদিঘিতে এই প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে নিগম। শিলান্যাসের পরে কাজ শুরুর ৪২ মাসের মধ্যেই প্রকল্প শেষ করার কথা।
সাগরদিঘিতে প্রথম ধাপে ৩০০ মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিট তৈরি করা হয়, যেগুলি ২০০৭ সালে উৎপাদন শুরু করে। দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ মেগাওয়াট করে নতুন আরও দু’টি ইউনিট তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে একটি ইউনিট ইতিমধ্যেই উৎপাদন শুরু করেছে। অন্যটি মুখ্যমন্ত্রী যে-দিন শিলান্যাস করতে যাবেন, ওই দিনই তাঁর হাত দিয়ে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে। ৬৬০ মেগাওয়াটের সুপার ক্রিটিক্যাল ইউনিটটি হবে সাগরদিঘির পঞ্চম ইউনিট।
নিগমের এক কর্তা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্যই এই নতুন ইউনিটটি গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে সাগরদিঘির বিদ্যুৎ রফতানি করা হবে বাংলাদেশে এবং ভারতেরই বিভিন্ন রাজ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy