শোধনাগার থেকে বটলিং কারখানায় দ্রুত রান্নার গ্যাস (এলপিজি) পৌঁছে দিতে চায় ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি)। তাই পারাদীপ থেকে হলদিয়া-দুর্গাপুর হয়ে বিহার পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করেছে তারা। আগামী বছরের ডিসেম্বরে পারাদীপ থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত পাইপলাইনের কাজ শেষ হবে বলে শনিবার জানিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির চেয়ারম্যান বি অশোক।
৫০ বছর আগে কলকাতার হেঁশেল থেকেই প্রথম রান্নার গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। ইন্ডিয়ান অয়েলের রান্নার গ্যাসের ব্র্যান্ড ‘ইন্ডেন’-এর সেই যাত্রা শুরুর সুবর্ণজয়ন্তী পূর্তি উপলক্ষে এ দিন এক অনুষ্ঠানে কলকাতায় এসেছিলেন আইওসি চেয়ারম্যান। তিনি জানান, দেশের এলপিজি-র চাহিদার অর্ধেক আমদানি করতে হয়। পাশাপাশি সেই গ্যাস পরিবহণের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গ্যাসের ‘ব্যাক-লগ’ (বুকিংয়ের পরে সিলিন্ডার হাতে পেতে যে-সময় লাগে) কমানোও জরুরি। এ জন্য তাঁরা প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ার কাজে হাত দিয়েছেন, যার অঙ্গ হিসেবে তৈরি হচ্ছে এই পাইপলাইন। এখন এ রাজ্যে গ্যাস বুক করার পরে সিলিন্ডার পেতে কমপক্ষে দশ দিন সময় লাগছে। কিছু জেলায় তা দু’তিন সপ্তাহেও গড়াচ্ছে।
শোধনাগার বা আমদানি করা রান্নার গ্যাসের কেন্দ্র থেকে এখন মূলত সড়কপথেই বড় বড় ট্যাঙ্কারে করে বিভিন্ন বটলিং কারখানায় এলপিজি সরববাহ করা হয়। ফলে প্রচুর সময় লাগে। তা কমানোর লক্ষ্যেই পারাদীপ শোধনাগার থেকে হলদিয়া, দুর্গাপুর হয়ে বিহারের পটনা-মুজফ্ফরপুর পর্যন্ত এলপিজি-র পাইপলাইন গড়ছে আইওসি। অশোক জানান, দুর্গাপুর পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। খরচ হবে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। পরের পর্যায়ের জন্য খরচ হবে ১,৮০০ কোটি। চলতি বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের। অল ইন্ডিয়া ডিস্ট্রিবিউটর্স ফেডারেশনের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক বিজনবিহারী বিশ্বাসের মতে, পারাদীপ-হলদিয়া-দুর্গাপুর পাইপলাইন চালু হলে শুধু যে-সময় বাঁচবে তাই নয়, খরচও কমবে।
দ্রুত সরবরাহের পাশাপাশি নতুন বাজার ধরা এবং দরিদ্রদের কাছে আরও বেশি করে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য হাতে নিয়েছে ইন্ডেন। সেই সূত্রেই ফের পাঁচ কেজি-র রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তুকিতে দেওয়ার ব্যবস্থা সর্বত্র ছড়াতে উদ্যোগী হচ্ছে তারা। আগেই এই সিলিন্ডার বাজারে আনলেও সে ভাবে সাড়া না-পাওয়ায় বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের দামে তা শহরাঞ্চলে বিক্রি শুরু হয়। ভর্তুকির কোটা-র ক্ষেত্রেও ফের সেই সিলিন্ডার বিক্রি হবে বলে আগে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আইওসি চেয়ারম্যানও এ দিন জানান, গ্রামীণ এলাকায় সকলের কাছে রান্নার গ্যাস সহজলভ্য করতে ভর্তুকিতে ওই পাঁচ কেজি-র সিলিন্ডার বিক্রির উপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা। এ রাজ্যেও তা শীঘ্রই পুরোদমে চালু হবে।
এ দিকে, ব্যাঙ্কে সরাসরি ভর্তুকির টাকা জমা চালু হওয়ার পরে আইওসি-র উল্লেখযোগ্য সাশ্রয় হচ্ছে বলে দাবি করলেও তা কতটা, স্পষ্ট করেননি অশোক। তবে আগে তাঁদের যত গ্রাহক ছিলেন, তাঁদের প্রায় ৮৯ শতাংশই এই ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy