গাড়িটির প্রদর্শনে হুন্ডাই কর্তা ওয়াই কে কু। সোমবার।
কেন্দ্রের পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত গাড়ির চাহিদায় তেমন ছাপ ফেলবে না। বরং এই সিদ্ধান্ত দেশের ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিস্থিতির পক্ষে ভাল। যার হাত ধরে ফুলেফেঁপে ওঠার পথ পাবে গাড়ি শিল্পের ব্যবসাও। সোমবার ভারতের বাজারে টুসঁ-র নতুন করে পা রাখার অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই দাবি করলেন হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়ার শীর্ষ কর্তারা। জানালেন, এ দেশের গাড়ি বাজার, বিশেষ করে স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্লের (এসইউভি) বিক্রি বাড়ার ব্যাপারে তুমুল আশাবাদী বলেই তারা ফিরিয়ে আনলেন টুসঁ। যার হাত ধরে প্রতিযোগীদের টেক্কা দিতে চায় সংস্থা। এই গাড়ি গত ২০০৫ থেকে ২০১০, এই পাঁচ বছরে প্রায় ১,৮০০ টি বেচেছিল কোরীয় বহুজাতিকটি।
আগে যখন ভারতে টুসঁ বিক্রি হত, তখন পুরো গাড়িটিই কোরিয়া থেকে আনত হুন্ডাই। ২০১০ সালের পরে এতে ছেদ পড়ে। তবে এই দফায় তাদের তৃতীয় প্রজন্মের টুসঁ চেন্নাই কারখানাতেই তৈরি করবে সংস্থা। চলতি বছরের গোড়ায় এটির উপর থেকে পর্দা উঠেছিল এক গাড়ি প্রদর্শনীতে। তার পরে এ দিনই দেশে এটিকে বিক্রির জন্য আনা হল।
এ দিন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ওঠে নোট বাতিল ও দেশের গাড়ি শিল্পে তার প্রভাবের প্রসঙ্গও। সংস্থার এমডি এবং সিইও ওয়াই কে কু এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিক্রি ও বিপণন) রাকেশ শ্রীবাস্তব দু’জনেরই দাবি, এই সিদ্ধান্ত জরুরি এবং সঠিক পদক্ষেপ। এ জন্য গোড়ায় কয়েক দিন স্বাভাবিক জনজীবনে কিছুটা ছন্দের অভাব গাড়ি শিল্পের কাছেও একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ, অন্য ক্ষেত্রে খরচের উপর এর প্রভাব পড়লে গাড়ির চাহিদা কিছুটা কমতে পারে। তবে তা সাময়িক। কু বলেন, ‘‘আতঙ্কের কোনও কারণই নেই।’’ আর শ্রীবাস্তবের দাবি, ৬৫% গাড়ি বিক্রি হয় ঋণ মারফত। গাড়ি কেনার খরচ বেশি বলে বাকিটাও হয় চেকের মাধ্যমে কিংবা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ভর করেই। ফলে সার্বিক ভাবে এর বিক্রি কমবে না। তা ছাড়া সদ্য পেরিয়ে আসা উৎসবের মরসুমে যে বাড়তি বিক্রি-বাটা হওয়ার কথা ছিল, তা-ও শেষ বলেই মনে করছেন তাঁরা।
বরং ভারতের বাজার সম্পর্কে যথেষ্ট আশাবাদী কোরীয় গাড়ি বহুজাতিকটি। আরও বেশি এসইউভির বিক্রি নিয়ে। তাই তাদের সাম্প্রতিকতম এসইউভি ক্রেটা-র পরে, তার চেয়েও দামি টুসঁ ভারতের বাজারে ফের আনল তারা। কলকাতায় পেট্রোলচালিত নতুন টুসঁ-এর দাম পড়ছে ১৯.৫১ লক্ষ থেকে ২২.৩৮ লক্ষ টাকা। এবং ডিজেল গাড়িটির ২২.১৮ লক্ষ থেকে ২৫.৬৭ লক্ষ টাকা। হুন্ডাই কর্তাদের দাবি, ‘‘আগে ভারতের মোট গাড়ি বাজারে এসইউভির অংশিদারী ছিল ১২%। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৭%। পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে গাড়ি বাজার আরও চাঙ্গা হবে।’’
এমনকী সে দিকে লক্ষ্য রেখে ২০১৯ সালের প্রথমার্ধেও চার মিটারের কম এসইউভি (এখন যেটির কোড নাম কিউএক্সআই) আনার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির। কিন্তু এখনই ভারতের বাজার এ রকম ছোট এসইউভি-তে ছেয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে, দু’বছর অপেক্ষায় কি দেরি হয়ে যাবে না?
জবাবে শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘আমরা সব সময় পরিণত বাজারে পা রাখতে চাই। এখানে ছোট এসইউভির বাজার সেই পর্যায় পৌঁছতে এখনও সময় লাগবে। বিশেষ করে যখন পণ্য-পরিষেবা কর কাঠামোর দিকে এগোচ্ছে দেশ।’’ তাঁর দাবি, তত দিনে কর ব্যবস্থাও ভালো ভাবে চালু হয়ে যাবে। কারণ, সঠিক সময়ের আগে বাজারে আসার বিরোধী হুন্ডাই। তাই যখন সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে, তখন সামনের সারিতে জায়গা করে নিতে দৌড়বে সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy