—প্রতীকী ছবি
একে জিএসটি জমানায় ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা চেপে বসেছে। তার উপর যোগ হয়েছে আবাসন আইন চালু করা নিয়ে রাজ্য সরকারের গড়িমসি। নোট বাতিলের জেরে চাহিদা জোর ধাক্কা খাওয়ায় যে ক্ষত তৈরি হয়েছিল, তা-ও সারেনি এখনও। ফলে সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে আবাসনের বাজার বেজায় মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ নির্মাতাদের। বিক্রি কমেছে ২৫ শতাংশেরও বেশি।
দেশে গত পয়লা মে আবাসন আইন বলবৎ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের তৈরি নতুন এই আইন এখনও চালু করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ। আইন তৈরির এক বছর পরেও চূড়ান্ত হয়নি খুঁটিনাটি। প্রস্তাব পর্যায়েই আটকে আবাসন নিয়ন্ত্রক (রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি) গড়ার কাজ। অথচ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা ছাড়া নয়া আইন চালু করা সম্ভব নয়।
নির্মাণ শিল্প মনে করছে, রাজ্যে আইন চালু হতে এখনও অন্তত মাস ছয়েক দেরি। কারণ এ নিয়ে সরকার আলোচনাই শুরু করেনি। রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, সব দিক খতিয়ে দেখে তা চালু করতে হবে। ফলে সময় লাগবে।
আর নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই-এর মতে, ক্রেতারা আইন চালুর অপেক্ষায় রয়েছেন বলেই সমস্যা ঘন হচ্ছে। কারণ, তাঁরা জানেন এটি ক্রেতার স্বার্থ রক্ষা করতেই আনা। ক্রেডাই বেঙ্গলের কর্তা নন্দু বেলানি বলেন, ‘‘আইন চালুর অপেক্ষায় থাকতে কেনার সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই।’’ ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই এই প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের। যদিও নির্মাণ সংস্থাগুলির দাবি, আইন চালু না হলেও নিয়ম মেনেই প্রকল্পের গুণগত মান বজায় রাখা হয়।
আইন আটকে থাকায় নির্মাণ শিল্পমহলেও কিছু বিষয় নিয়ে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। যেমন, নয়া আইন অনুযায়ী, নির্মীয়মান বাড়ির বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগে ‘রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি’র নথিভুক্ত হতে হবে। নচেৎ দিতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। বেলানি জানান, এখানে নিয়ন্ত্রক নেই বলে খোদ কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে।
আবাসন বাজারে ধাক্কা দিয়েছে জিএসটি জমানায় ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম বাড়ার আশঙ্কাও। ক্রেডাইয়ের দাবি, জিএসটি এলে দাম অনেকটাই বাড়বে। নোট সঙ্কটের জের কাটতে না কাটতেই যার চাপে চাহিদা আরও তলানিতে ঠেকতে পারে। বিশেষত, এ রাজ্যে ক্রেতাদের উপর বোঝা অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছে তারা। কারণ এখানে তুলনায় চড়া স্ট্যাম্প ডিউটির হার। জৈন গোষ্ঠীর ঋষি জৈন জানান, ১২% জিএসটি ও ৮% স্ট্যাম্প ডিউটি মিলিয়ে করে বোঝা দাঁড়াবে ২০%।
প্রসঙ্গত, এই আইনের লক্ষ্য ক্রেতার স্বার্থ রক্ষা। তিনটি বিষয় এতে প্রাধান্য পেয়েছে। এক, বাড়ির যে কাঠামোগত নকশা, তার পরিবর্তন করা যাবে না। দুই, বাড়ি ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে কোনও কাঠামোগত গলদ ধরা পড়লে, তা ৩০ দিনের মধ্যে নিখরচায় শুধরে নেওয়ার দায় নিতে হবে প্রোমোটারকে। নইলে ক্রেতাকে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। আর তিন, বিক্রি করার সময় কার্পেট এরিয়াই বিবেচ্য হিসেবে ধরা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy