বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস (বিসিপিএল) বিক্রি কিংবা বিলগ্নিকরণে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নির্দেশ, এই স্থগিতাদেশ জারি থাকবে অগস্ট পর্যন্ত। ফলে আপাতত শিকেয় তুলে রাখতে হবে সংস্থার জমি বিক্রির পরিকল্পনাও। কেন্দ্র কেন সংস্থা বিক্রির কথা বলেছিল, তার কারণও আদালতে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে মোদী সরকারকে।
ডিসেম্বরে যে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ কিংবা বিলগ্নিকরণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার কথা কেন্দ্র জানিয়েছিল, তার মধ্যে ছিল বেঙ্গল কেমিক্যালসও। কিন্তু তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যায় সংস্থাটির কর্মী সংগঠন। আদালতের নির্দেশ, কেন্দ্রকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে। তা নিয়ে ইউনিয়নের কোনও বক্তব্য থাকলে, তাদেরও তা পাল্টা হলফনামায় জানাতে হবে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে। মামলার পরবর্তী শুনানি অগস্টে।
এই নির্দেশে আপাতত মুলতুবি থাকল বিসিপিএলের জমি বিক্রিও। বাজারের চেয়ে চড়া সুদে কেন্দ্রের ঋণ মেটাতে পানিহাটিতে সংস্থার ২৫.০৭ একর বাড়তি জমি শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছে বিক্রির জন্য বিসিপিএলের আর্জিতে সম্প্রতি সায় দিয়েছিল কেন্দ্র। এ জন্য দরপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছিল। আগামী ২৭ জুন ছিল ই-টেন্ডার জমার শেষ দিন। আদালতের নির্দেশে এই প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ থাকবে বলেই সংস্থা সূত্রের খবর।
আদালতের রায় না-দেখে অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্যে নারাজ সংস্থার কার্যনির্বাহী এমডি পিএম চন্দ্রাইয়া। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশ ওষুধ মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হবে।
বহু যুগ পরে ২০১৬-’১৭ সালে নিট মুনাফা করার কথা ঘোষণা করেছিল বেঙ্গল কেমিক্যালস। কর্তারা জানিয়েছিলেন, এ বার ব্যবসা বৃদ্ধি ও বকেয়া ঋণ মেটানোই লক্ষ্য। সম্প্রতি অনলাইনে কিছু পণ্য বিক্রি শুরু করেছে তারা। আয়োজন করেছে বার্ষিক সাধারণ সভাও। তারপরেও সংস্থা বিলগ্নিকরণের চিন্তায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অধিকাংশ কর্মী।
এ দিন ইউনিয়নের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও শামিম আহমেদ আদালতে জানান, এই শতাব্দী প্রাচীন সংস্থাটি বিক্রির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনা হয়েছে। কয়েক জন সাংসদ বিক্রির কারণ জানতে চাইলে কেন্দ্র বলেছে, অলাভজনক এই সংস্থার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তেমন নেই।
বিকাশবাবু আদালতে জানান, কেন্দ্র অলাভজনক বললেও, লোকসভার সংশ্লিষ্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির ২৩তম রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০১৩-’১৪ থেকে লাভের মুখ দেখছে বেঙ্গল কেমিক্যালস। ৩২তম রিপোর্ট জানিয়েছে, যে সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে, সেগুলি বিক্রি করা যাবে না। বিসিপিএল তেমনই এমনই একটি সংস্থা।
তাঁর দাবি, সংস্থা ২০১৬-’১৭ সালে ৪.৫১ কোটি টাকা লাভ করেছে। এখনও তাদের পণ্যের চাহিদা রয়েছে। তাই জমি বেচে দায় মেটানোর চেয়ে কেন্দ্রের উচিত গবেষণামূলক কাজে উৎসাহ দেওয়া। দিল্লি কেন বিক্রির কথা বলেছিল, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দর কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy