পরিকল্পনা ছিল অনেক দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত শেয়ার বাজারে খাটতে চলেছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফও) টাকা।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় শ্রম সচিব শঙ্কর অগ্রবাল বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ইপিএফও-র লগ্নিযোগ্য তহবিলের ৫ শতাংশ এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ করা হবে।’’ তিনি জানান, দু’তিন আগেই এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে শ্রম মন্ত্রক। উল্লেখ্য, ইটিএফ হল সেই সব মিউচুয়াল ফান্ড, যাদের ইউনিট স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়। তবে পিএফের অছি পরিষদকে এড়িয়ে কেন্দ্র এমন একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায় প্রত্যাশিত ভাবেই তার কড়া সমালোচনা করেছে কর্মী সংগঠনগুলি।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে, প্রতি বছর পিএফের তহবিলে যে টাকা জমা পড়ে (ইনক্রিমেন্টাল ডিপোজিট), তার ৫ শতাংশ শেয়ার বাজারে খাটানো যাবে। পিএফ কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরের জন্য তাদের তহবিলে জমা পড়বে ৮০ হাজার কোটি টাকা। তার উপর, আগে যেখানে ৬,৫০০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতনে (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া) পিএফ কাটা হত, এখন সেই সীমা বেড়ে হয়েছে ১৫,০০০ টাকা। ফলে চলতি অর্থবর্ষের জন্য অন্তত এক লক্ষ কোটি টাকা তহবিলে আসবে বলে আশা করছে তারা। সুতরাং সে ক্ষেত্রে শুধু পিএফ তহবিল থেকেই ৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নি হবে বাজারে।
অগ্রবালের দাবি, তহবিলের ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বাজারে লগ্নির পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। কিন্তু প্রথম বার শেয়ার বাজারে পা রেখেই কর্মীদের সারা জীবনের কষ্টের সঞ্চয় নিয়ে বাড়তি ঝুঁকি নিতে চান না পিএফ কর্তৃপক্ষ। সেই কারণেই প্রথমে শুধু ইটিএফে টাকা ঢালার সিদ্ধান্ত।
বাজারে পিএফের টাকা খাটানোর জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা করে আসছে কেন্দ্র। উদ্দেশ্য, তহবিলের আয় বাড়ানো। কিন্তু এর আগে যতবার এ বিষয়ে প্রস্তাব পিএফের অছি পরিষদে এসেছে, ততবারই বাধা দিয়েছেন কর্মী ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। ফলে তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। এ বার অবশ্য অছি পরিষদকে এড়িয়েই পিএফের টাকা শেয়ার বাজারে লগ্নির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী-সরকার।
স্বাভাবিক ভাবেই এর বিরুদ্ধে মুখর হয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। আইএনটিইউসির রাজ্য কমিটির সভাপতি এবং পিএফের অছি পরিষদের সদস্য রমেন পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রভিডেন্ট ফান্ডের তহবিলে যে টাকা জমা পড়ে, তা সাধারণ কর্মীদের। সেই টাকা বাজারে খাটানোর ব্যাপারে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের নেই। অছি পরিষদকে এড়িয়ে এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’ বিএমএসের সভাপতি এবং অছি পরিষদের সদস্য বৈজনাথ রায় বলেন, ‘‘শেয়ার বাজারে লগ্নি সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে যেমন মুনাফা বেশি হতে পারে, তেমনই হতে পারে ভরাডুবিও। লোকসান হলে তা পুষিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি যদি কেন্দ্র দেয়, তা হলে আপত্তি নেই। নয়তো আমরা এর বিরুদ্ধে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy